প্রকাশ : শুক্রবার, ১০ জুন , ২০২২, ০৬:৫৩:৩৭ পিএম
২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়ন হলে, দেশের অর্থনীতি আগের তুলনায় অনেক শক্তিশালী হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।শুক্রবার (১০ জুন) বিকেল ৩টার পর রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।এসময় প্রস্তাবিত বাজেটে অনেক কঠিন সময় অতিক্রম করতে হবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।তিনি বলেন, এই অর্থবছরে অনেক চড়াই-উৎরাই আসবে। তবে এবারের বাজেট বাস্তবায়ন হলে, দেশের অর্থনীতি আগের তুলনায় অনেক শক্তিশালী হবে।এর আগে বিকেল ৩টা ১০ মিনিটে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়। এতে প্রস্তাবিত বাজেটের বিষয়ে কথা বলছেন অর্থমন্ত্রী।মহামারি করোনার কারণে প্রথা ভেঙে ২০২০-২১ অর্থবছরের ভার্চুয়ালি বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে অর্থ মন্ত্রণালয়। এরপর ২০২১-২২ অর্থবছরে সীমিত পরিসরের পাশাপাশি ভার্চুয়ালি বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলন করা হয়। অর্থাৎ তিন বছর পর আজ স্বাভাবিকভাবে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলন হচ্ছে।উল্লেখ্য, এবারের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। অর্থমন্ত্রী হিসেবে আ হ ম মুস্তফা কামালের এটি চতুর্থ বাজেট। আর বাংলাদেশের জন্য ৫১তম। পাশাপাশি রাষ্ট্র পরিচালনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের ২০তম বাজেট হলেও ২০০৮ সাল থেকে বর্তমান সরকার টানা বাজেট দিয়ে যাচ্ছে।পাচার হওয়া টাকা ফিরিয়ে আনা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী জানান, দেশ থেকে টাকা পাচার হচ্ছে। সে টাকা ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।মন্ত্রী বলেন, কে বলেছে টাকা পাচার হয় না। সুটকেসেই হোক, বা অন্য কোনো মাধ্যমেই হোক, ডিজিটাল টুলস ব্যবহার করে টাকা পাচার হচ্ছে। যাতে টাকা পাচার হতে না পারে সে ব্যবস্থাই করছি। জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্সসহ অনেক দেশ এ ব্যবস্থা নিয়েছে।কখনো কখনো মিস ম্যাচ হয়ে যায়, বিভিন্ন কারণে টাকা পাচার হয়ে যায়। টাকা পাচার করে না সে কথা কখনো বলি নাই। যেগুলো বলা হচ্ছে, সেগুলো প্রমাণ ছাড়া বললে মামলায় আসে না।পাচার হওয়া টাকা দেশের মানুষের হক বলে উল্লেখ করেন আ হ ম মোস্তফা কামাল। এসব অর্থ ফেরত আনার জন্য নেওয়া উদ্যোগে বাধা না দিতেও এ সময় আহ্বান জানান তিনি। বলেন, আমরা টাকা ফেরত আনার চেষ্টা করছি। সেখানে বাধা দিয়েন না। যদি বাধা দেন তাহলে টাকাগুলো দেশে ফেরত আসবে না।পাচারকৃত অর্থ ফেরত এনেছে এমন কয়েকটি দেশের উদাহরণ দেন অর্থমন্ত্রী। তিনি জানান, আমেরিকা, কানাডা, যুক্তরাজ্য, জার্মানিসহ বিশ্বের ১৭টি দেশ অ্যামেনিস্টির মাধ্যমে টাকা ফেরত নিয়েছে।কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ায় সফলতা কতটুকু জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমরা কালো টাকা না বলে অ-প্রদর্শিত টাকা বলি। আমরা জায়গা-জমি বেচা-কেনা করি; সেখানে যে দামে কিনি সে পরিমাণ মূল্য দেখাতে পারি না। যে টাকাটা দেখাতে পারি না সে টাকাটা অ-প্রদর্শিত টাকা কিন্তু এ টাকা কালো টাকা হিসেবে বলছি। সে টাকাই আমরা নিয়ে আসতে চাচ্ছি।টাকা পাচারের ব্যাপারে অনেক অভিযোগ আছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন কোর্টে মামলা চলছে। অনেককেই সাজা পেয়ে জেলে আছেন। সরকার নিশ্চুপ থাকে না, সরকার তার কাজ করে যাচ্ছে। মিডিয়াতে যদি কিছু রিপোর্ট হয় সেটা নিয়েও ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, গভর্নর ফজলে কবির, এনবিআর চেয়ারম্যান রহমতুন মমিন, অর্থ বিভাগের সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার প্রমুখ।