gramerkagoj
বুধবার ● ৮ মে ২০২৪ ২৪ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj

❒ দু’ কারারক্ষী ও পাঁচ হাজতি আহত

যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে হাজতিদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, বাইরে ব্যাপক আতঙ্ক
প্রকাশ : শনিবার, ২৭ এপ্রিল , ২০২৪, ১২:১৮:০০ এ এম , আপডেট : মঙ্গলবার, ৭ মে , ২০২৪, ০৪:১৩:০৯ পিএম
শিমুল ভুইয়া:
GK_2024-04-27_662bf03dcc19e.jpg

যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। হাজতিদের দু’গ্রæপের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে কারাগারের নিউজেল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এসময় চার-পাঁচজন হাজতি আহত হয়েছেন। তাদের সংঘর্ষ ঠেকাতে গিয়ে দু’কাররক্ষী জখম হয়েছেন। পরবর্তীতে হুইসেল বাজিয়ে কারারক্ষীরা ভেতরে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন খুলনা কারা উপমহাপরিদর্শক অসীম কান্ত পাল। জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে বলে সূত্র জানিয়েছে। সংঘর্ষের সূত্রপাতের বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষ পূর্ব কোন্দলের কথা জানিয়েছে। তবে, কারাগারের অপর একটি সূত্র বলছে, মোবাইল ফোন ব্যবহার করাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষ হয়েছে।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০ টা। যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে অসংখ্য দর্শনার্থী দেখা করার ঘরের সামনে অপেক্ষায় ছিলেন। হঠাৎ হুইসেল বেজে ওঠে। মুহূর্তেই মানুষ দিকবিদিক ছোটাছুটি শুরু করে। দর্শনার্থীদের দ্রæত বাইরে বের করে দেওয়া হয়। অন্যদিকে, সকল কারারক্ষী যে যে অবস্থায় ছিল তাড়াহুড়ো করে লাঠি নিয়ে কারাগারের ভেতরে প্রবেশ করে। কারাকর্তৃপক্ষের এ ধরনের কার্যক্রম দেখে এলাকায় আতঙ্ক তৈরি হয়। কেউ কেউ বলতে থাকে আসামি পালিয়েছে। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
ওইসময় কারাগারের ভেতরে যাওয়া কারারক্ষী ও সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কারাঅভ্যন্তরের নিউজেল এলাকার সামনে সন্ত্রাসী ভাইপো রাকিব ও আরেক সন্ত্রাসী স¤্রাটের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতি হয়। এ সময় দু’গ্রæপের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। শেষমেষ তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। সঙ্গে সঙ্গে হুইসেল বাজানো হয়।
পরবর্তীতে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার ও জেলার শরিফুল আলম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। একপর্যায় দ্রæতই তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে খুলনা কারা উপমহাপরিদর্শক অসীম কান্ত পাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এদিকে, কারাগারের অপর একটি সূত্র জানিয়েছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে দু’কারারক্ষী জখম হয়েছেন। তাদেরকে কারা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, আহত হাজতিদেরও সেখানে চিকৎসা দেওয়া হয়েছে। সূত্র আরও জানায়, তাৎক্ষণিক কারাকর্তৃপক্ষ জড়িত সাত-আটজনকে চিহ্নিত করেছেন। এদের মধ্যে কয়েকজনকে পৃথক স্থানে রাখা হয়েছে। তাদের সাথে বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়েছে। সূত্র দাবি করেছে, কারাগারে মোবাইল ফোনে কথা বলা নিয়ে এ ঘটনার সূত্রপাত।
এদিকে, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বন্দিদের স্বজনদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। কারা ঘটনার সাথে জড়িত তা নিয়ে তারা চিন্তিত। তাদের অনেকেই গ্রামের কাগজ দপ্তরে ফোন করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চান।
এ বিষয়ে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের সহকারী সার্জন সাজ্জাদ হোসেন বলেন, দু’কারারক্ষী ও ছয়-সাতজন হাজতি কারা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারা আশঙ্কামুক্ত ও সুস্থ রয়েছেন।
যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার বলেন, ঘটনাটি সামান্য। তবে, আকস্মিকভাবে তাদের একজন কারারক্ষী অ্যালার্ট হুইসেল বাজিয়ে ফেলেন। এতে করে বিষয়টি বড় আকারে রূপ নেয়। তিনি বলেন, মূলত যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে বর্তমানে শহরের দাগী কয়েকজন সন্ত্রাসী রয়েছে। তাদের মধ্যে ভাইপো রাকিব অন্যতম। এদের দু’টি গ্রæপের সদস্যদের বাইরেই কোন্দল ছিল। যা কারাগারের ভেতরে ক্ষোভ মেটানোর চেষ্টা করেছে। যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কারাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। তিনি বলেন, কারারক্ষীদের উপর হামলা চালানো হয়নি। মূলত তাড়াহুড়ো করে কারাগারের ভেতরে প্রবেশ করতে গিয়ে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি কারাগারে দু’কারারক্ষীর মধ্যে ডিউটিরত অবস্থায় মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই দু’কারারক্ষীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়। তার রেশ কাটতে না কাটতেই কারাঅভ্যন্তরে হাজতিদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

 

আরও খবর

🔝