gramerkagoj
শনিবার ● ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
সর্বত্রই আলোচনা উদ্ধার হওয়া কঙ্কালটি কোন হতভাগ্যের

❒ ৩ থেকে ৪ বছর আগের হত্যা ও গুম

প্রকাশ : সোমবার, ৩০ মে , ২০২২, ০৯:৩৪:৪৭ পিএম
দেওয়ান মোর্শেদ আলম:
1653924912.jpg
যশোরের কাজীপাড়া নিরিবিলি এলাকায় ড্রাম ভর্তি কঙ্কাল উদ্ধার ঘটনায় তুমুল হৈচৈ শুরু হয়েছে। ৩০ মে দুপুরে কঙ্কালটি উদ্ধার হওয়ার পর থেকে ‘ট্যক অব দ্যা যশোর ছিল’ ওই ঘটনাটি। সর্বত্রই একই আলোচনা ওই কঙ্কালটি কোন হতভাগ্যের? কোন মায়ের বুক খালি করে এনে তাকে পুতে রাখা হয়েছিল ওখানে।এদিকে, পুলিশের পরিস্কার ধারণা, ৩ থেকে ৪ বছর আগের একটি হত্যাকান্ড ও লাশ গুম ঘটনার পরের গল্প এটি। এখন খুঁজতে হবে কঙ্কালটি কার! এ ব্যাপারে তদন্ত শুরু হয়েছে।স্থানীয়রা জানান, এদিন দুপুর ১২ টার দিকে যশোর শহরের কাজীপাড়া নিরিবিলি এলাকার একটি জমিতে কাজ করছিলেন শ্রমিক নুরনবী, ছাত্তারসহ কয়েকজন। তারা ওই জমিতে পাইলিংয়ের সময় একটি পুরোনো ড্রাম দেখতে পান। পরে ওই ড্রামের ভেতরে ও আশপাশে চুনের আবরণ দেখতে পান। পচা দূর্গন্ধও আসতে থাকে ড্রাম থেকে। এতে তাদের সন্দেহ হয়। বিষয়টি তারা প্রথমে জমির মালিক বজলুর রহমানকে জানান। পরে জমি মালিক ও স্থানীয়রা দূর্গন্ধ ও ড্রামের বিষয়টি পুলিশকে জানালে কোতোয়ালি থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ড্রাম খুলে মানুষের কঙ্কাল দেখতে পান। ওই টিম ছাড়াও ঘটনার পর কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ তাজুল ইসলাম, ইন্সপেক্টর তদন্ত মনিরুজ্জামান, পুরাতন কসবা ফাঁড়ি ইনচার্জ ইন্সপেক্টর রেজাউল করীমসহ পুলিশের একাধিক টিম ও পিবিআই এর একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।স্থানীয়রা গ্রামের কাগজকে জানিয়েছেন, বেনাপোল এলাকার বজলুর রহমান আড়াই বছর আগে কাজীপাড়া নিরিবিলি পাড়ায় একটি জমি কেনেন। ওই জমিতে বাড়ি নির্মানের কাজ চলছে।  ৩০ মে দুপুরে পাইলিং করতে যেয়ে মাটির নিচে একটি ড্রামের সন্ধান পান শ্রমিকেরা। তারা হৈজোকর দিলে সেখানে লোকজনের ভিড় জমে, পরে পুলিশও আসে। তারা জানান, কঙ্কালটি মানুষের। এটা অবশ্যই একটি হত্যাকান্ডের আলামত বহন করছে। অন্য কোথাও থেকে অজ্ঞাত কাউকে অপহরণ করে হত্যার পর লাশ গুম করা হয়েছে মধ্যযুগীয় কায়দায়। কোনো এক হতভাগ্যের কঙ্কাল এটি! কারো আপনজন, কোনো মায়ের সন্তান। দ্রুতই এ ব্যাপারে শক্তিশালী তদন্ত করে কঙ্কালটি কার এবং ঘটনায় কারা জড়িত তা খুঁজে বের করতে হবে। বিগত সময়ে অনেকে নিখোঁজ আছে, যাদের লাশ উদ্ধার হয়নি, হদিসও মেলেনি, হয়তো তাদের মধ্যে একজন হতভাগ্যের কঙ্কাল এটি। এ নিয়ে গতকাল দিনভর আলোচনা ছিল কাজীপাড়াসহ যশোর শহর, এমনকি গোটা যশোরাঞ্চলে।  এ ব্যাপারে জমির মালিক বজলুর রহমান জানিয়েছেন, আড়াই বছর আগে শোয়া চার শতকের ওই জমিটি তিনি পুরাতন কসবার মোতালেব ওরফে বাবুর কাছ থেকে কিনেছেন। সম্প্রতি তিনি  নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন। এর মাঝে এদিন শ্রমিকদের মাধ্যমে তিনি খবরটি জানতে পারেন। এছাড়া বেশি কিছু তিনি বলতে পারবেন না। এ ব্যাপারে যশোর কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ তাজুল ইসলাম ও ইন্সপেক্টর তদন্ত মনিরুজ্জামান গ্রামের কাগজকে জানিয়েছেন, ওই কঙ্কালটি উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মেডিকেল টার্মের কাজগুলি এগিয়ে চলেছে। ধারণা করা হচ্ছে ৩ থেকে ৪ বছর আগের কোনো লাশের কঙ্কাল এটি। হত্যাকান্ডের পর লাশ গুম করা হয়। লাশের দূর্গন্ধ কমাতে ও দ্রুত পচানোর  জন্য চুন ব্যবহার করা হতে পারে। অন্য কেনো এলাকা থেকে কাউকে এনে হত্যার পর ওই ড্রামে আটকে পুতে রাখা হতে পারে। এটি একটি হত্যাকান্ড এবং লাশ গুমের ঘটনা, এটা প্রায় পরিস্কার। এখন জোরালো তদন্ত করা হবে। কঙ্কালটি কার এবং করা ঘটনায় জড়িত সে ব্যাপারে তদন্ত করা হবে। 

আরও খবর

🔝