মাদারীপুরে মিথ্যা মামলা দিয়ে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গিয়ে মামলার বাদিকে জেলে পাঠিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে মাদারীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মানব পাচার প্রতিরোধ দমন আইনে হওয়া একটি মামলায় ৩ আসামীর জামিনের শুনানীর সময় বাদীর স্বীকারোক্তি মতে মিথ্যা মামলা করায় মামলার বাদী শাহ আলম শেখকে (৪২) জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক নিতাই চন্দ্র সাহা।বিচারক একই সাথে ওই মিথ্যা মামলায় হাজতে থাকা ৩ আসামী দেলোয়ার মুন্সি, মজিবর মুন্সি এবং পলাশ মুন্সিকে জামিন দেন। স্থানীয় ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, জেলার শিবচর উপজেলার উত্তর বাঁশকান্দি গ্রামের শাহ আলম শেখের সাথে একই এলাকার দেলোয়ার মুন্সীসহ অনেকের জমি-জমা নিয়ে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে উভয় পক্ষ আদালতে একাধিক মামলা করেন। জমির মামলা চলমান থাকা অবস্থায় বিরোধীদের শায়েস্তা করতে শাহ আলম শেখ তার শ্যালক ইসমাইলকে লুকিয়ে রেখে ইটালীতে আসামীদের মাধ্যমে ১৩লাখ টাকার বিনিময়ে পাঠানোসহ মানবপাচারের অভিযোগ এনে প্রতিপক্ষের ৬ জনকে আসামি করে চলতি বছর ২৪ মে মাদারীপুর আদালতে মানব পাচার আইনে একটি  দায়ের করেন। আদালত মামলাটি সদর থানায় প্রেরণ করলে তা এজাহার হিসেবে নিয়ে তদন্তে নামে পুলিশ। গত ৯ আগষ্ট মামলার আসামী দেলোয়ার মুন্সী, মজিবর মুন্সী ও পলাশ মুন্সীকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায় পুলিশ। পরে আদালত তাদের জেলে পাঠায়। আসামীরা গ্রেফতার হওয়ার পরে ওইদিন রাতেই স্থানীয়ভাবে আপোষ-মিমাংসার জন্য সালিশে বসেন। ওই সালিশের রায় উভয়পক্ষ মেনে নেয়। কিন্তু একাধিকবার আদালতে জামিন আবেদন করেও আসামীরা জামিন পাননি। বৃহস্পতিবার আবার জামিন আবেদন করেন আসামী পক্ষের আইনজীবী। এসময় জামিন আবেদনের নথির সাথে মিমাংসা পত্রের কাগজপত্রও আদালতে জমা দেয় হয়। জামিন শুনানির সময় মামলার বাদী শাহ আলম শেখ ও তার শ্যালক ইসমাইল আদালতে উপস্থিত হন। এ সময় আদালতের বিচারক বাদী শাহ আলম শেখ ও ইসমাইলের জবানবন্দী গ্রহণের সময় বাদী এক পর্যায়ে মিথ্যা মামলা করার কথা স্বীকার করেন। বাদীর স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে আদালতের বিচারক জেলা জজ নিতাই চন্দ্র সাহা মামলার বাদীকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ বিষয়ে রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী সিদ্দিকুর রহমান সিং এবং আসামীপক্ষের আইনজীবি মহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মিথ্যা মামলা করার স্বীকারোক্তি দেওয়ায় মাননীয় বিচারক জেলা জজ নিতাই চন্দ্র সাহা মামলার বাদী শাহ আলমকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এখন শাহ আলমের বিরুদ্ধে দন্ডবিধি ২১১ ধারা মোতাবেক মামলা করা হবে।’