gramerkagoj
শুক্রবার ● ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
রংপুরের দুই উপজেলায় ছাত্রদলের কমিটি গঠন, তৃণমূলে ক্ষোভ

❒ কেন্দ্রের নির্দেশ অমান্য

প্রকাশ : বুধবার, ৭ এপ্রিল , ২০২১, ০৬:১১:৪৪ পিএম
রংপুর ব্যুরো::
1617797807.jpg
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে রংপুরের পীরগাছা ও গঙ্গাচড়া উপজেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। গত ৩১ মার্চ দলটির কেন্দ্রীয় কমিটি রংপুরের এই দুই উপজলায় কমিটি অনুমোদন দেন। দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষ নেতাদের স্বাক্ষরিত চিঠির ভিত্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।কমিটি ঘোষণার পরেই উপজেলা দুইটিতে ছাত্রদলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। তারা ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয়, রংপুর বিভাগীয় টিম ও রংপুর জেলার সভাপতি-সম্পাদকসহ বিএনপি সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎসহ আনন্দ মিছিল করেছে। কিন্তুু হঠাৎ করে কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে কমিটি অনুমোদনের ৬ দিন পর কেন্দ্রের নির্দেশনা অমান্য করে পাল্টা কমিটি ঘোষণার অভিযোগ উঠেছে জেলা কমিটির একটি পক্ষের বিরুদ্ধে। তারা কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত না মেনে নিজের স্বার্থে দলীয় শৃংঙ্খলা ভঙ্গ করে রংপুরের এই দুইটি উপজেলায় কমিটি করেছে। এতে করে তৃণমূল পর্যায়ে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।এদিকে কেন্দ্রের অনুমোদিত উপজেলা কমিটি বিরুদ্ধে জেলার সভাপতি, দুই যুগ্ম সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকসহ বেশ কয়েকজন নেতা অবস্থান নিয়ে পাল্টা কমিটি ঘোষণা করায় তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। তারা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দলের দায়িত্বশীল নেতারা যদি গঠনতন্ত্র না মেনে দলের শৃংঙ্খলা ভঙ্গ করে। তৃণমূল পর্যায়ে বিবাদ সৃষ্টি করে। এটা দুঃখ জনক। দায়িত্বশীলদের কাছ থেকে এটা আশা করা যায় না।দলীয় সূত্র জানায়, গত ৩১ মার্চ রংপুর জেলার পূর্নাঙ্গ কমিটির সাথে পীরগাছা ও গঙ্গাচড়া উপজেলা কমিটি ঘোষণা করে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি। দলটির রংপুর বিভাগীয় টিমের প্রধান আশরাফুল ইসলাম ফকির লিংকনসহ বিভাগীয় কমিটির সুপারিশে কেন্দ্রীয় সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল এই কমিটির অনুমোদন দেন। ঘোষিত ওই কমিটিতে পীরগাছা উপজেলায় লোকমান হোসেনকে আহবায়ক ও মোফাচ্ছিরুল ইসলাম মিলনকে সদস্য সচিব এবং গঙ্গচড়ায় আখতারুজ্জামান তিতাসকে আহবায়ক ও আব্দুল কাফিকে সদস্য সচিব করা হয়। দুই কমিটিতে ১৮জন যুগ্ম আহবায়কসহ ২০ জন নেতাকর্মীকে সদস্য রাখা হয়। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-দপ্তর সম্পাদক আজিজুল ইসলাম সোহেল। এর পর থেকেই দুই উপজেলায় একটি পক্ষ কেন্দ্রের নির্দেশনা অমান্য করে দলের শৃংঙ্খলা পরীপন্থি কর্মকান্ডের সাথে জড়িয়ে পরে। তারা বিভিন্ন ধরণের বিষেদাগার মুলক বক্তব্য প্রদানসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেন্দ্রীয়, বিভাগীয় ও জেলার নেতাদের নিয়ে নানা ধরণের বাজে মন্তব্য করে। এনিয়ে দলটির তৃণমূল পর্যায়ে বিভেদ সৃষ্টি হয়। সেই বিভেদের জেরেই পীরগাছা ও গঙ্গাচড়া উপজেলার জেলা কমিটির সভাপতিসহ কয়েকজন নেতার স্বাক্ষরে গত ৫ এপ্রিল রাতে এই দুই উপজেলায় পাল্টা কমিটি দেয়া হয়। তার পর থেকে তৃণমূল পর্যায়ে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। সেই সাথে চরম উত্তেজনা ও অসন্তোষ দেখা দেয়।কেন্দ্র ঘোষিত দুই উপজেলার তৃণমূল পর্যায়ের কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, রংপুর বিভাগীয় টিমের সুপারিশে জেলা কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকের মতামতের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় কমিটি পীরগাছা এবং গঙ্গাচড়া উপজেলায় আহবায়ক কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়। কমিটি ঘোষণার পর মিষ্টি বিতরণ, আনন্দ মিছিলসহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। ঠিক সেই মুর্হুতে দলের ভিতর ঘাপটি মেরে থাকা একটি কুচক্রী মহলের ইন্ধনে পাল্টা কমিটি দেয় জেলার নেতৃবৃন্দ। তারা কিসের বলে কোন গঠনতন্ত্রের ভিত্তিতে কমিটি দিয়েছে তা বোধগম্য নয়। আমরা এর প্রতিবাদ ও তীব্র নিন্দা জানাই। সেই সাথে অবিলম্বে দলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।পীরগাছা উপজেলা কমিটির আহবায়ক লোকমান হোসেন ও গঙ্গাচড়া উপজেলা কমিটির আহবায়ক আখতারুজ্জামান তিতাস বলেন, যারা  কেন্দ্রের নির্দেশ অমান্য করে কমিটি গঠন করছেন তারা ঠিক করছেন না। তাদের দলের গঠনতন্ত্র ভালোভাবে পড়ার আহব্বান জানাই।দুই উপজেলার এই শীর্ষ নেতারা আরও বলেন, তাদের গঠন করা নতুন কমিটি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে থাকবে। তারা দলের ভিতর বিরোধ সৃষ্টি করছেন। কেন্দ্র ঘোষিত নতুন কমিটির নেতৃবৃন্দ ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তৃণমুল পর্যায়ে সকলেই কেন্দ্র ঘোষিত কমিটিকে স্বাগত জানিয়েছেন। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ। এব্যাপারে ছাত্রদল রংপুর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শরীফ নেওয়াজ জোহা বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে পীরগাছা ও গঙ্গাচড়া উপজেলায় যে কমিটি দেয়া হয়েছে আমি সেই কমিটিকে স্বাগত জানাই। আমি কেন্দ্রর প্রতি আস্থাশীল। কেন্দ্র যেই সিদ্ধান্ত দিয়ে আমি তা মেনে নিয়েছি। কারণ তারা সব বিষয় বিবেচনা ও জেলার নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করে এই কমিটি দিয়েছে। তাতে দ্বি-মত করার প্রশ্নই উঠেনা।অন্যদিকে জেলা কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান হিজবুলের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। এই কারণে তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও রংপুর বিভাগীয় টিমের প্রধান আশরাফুল আলম লিংকন ফকির বলেন, সবার সাথে আলোচনার ভিত্তিতে একটি সুন্দর ও সু-শৃংখল কমিটি দেয়া হয়েছে। এতে ওই দুই উপজেলার তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মী উজ্জীবিত হয়েছে। 

আরও খবর

🔝