gramerkagoj
সোমবার ● ৬ মে ২০২৪ ২২ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
বকচর প্রাইমারি স্কুলের প্রাচীর নির্মাণে বাধা, অরক্ষিত শ’ শ’ শিশু শিক্ষার্থী
প্রকাশ : বুধবার, ২৪ এপ্রিল , ২০২৪, ১০:০৫:০০ পিএম
এম. আইউব:
GK_2024-04-24_66292e4d82a25.jpg

যশোর শহরের বকচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাচীর নির্মাণে বাধা দিচ্ছে চিহ্নিত একটি মহল। এ কারণে হাইওয়ের পাশে অবস্থিত স্কুলটির শ’ শ’ শিক্ষার্থী রয়েছে ঝুঁকির মধ্যে। তাদেরকে ঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে যতদ্রুত সম্ভব প্রাচীর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছেন অভিভাবকরা।
অভিভাবকদের অভিযোগ, স্বার্থান্বেষী একটি মহল অসৎ উদ্দেশ্যে পাশে ঈদগাহে নামাজ পড়ার অজুহাত তুলে সরকারি সম্পত্তি বেহাত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। কেবল চেষ্টা চালাচ্ছে বললে ভুল হবে, তারা ওই এলাকার মাদকসেবীদের স্কুলের জায়গায় মাদকের আড্ডা বসানোর সুযোগ করে দিচ্ছে।
বকচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চারপাশে প্রাচীর ও গেট নির্মাণের জন্য গত বছরের জুন মাসে ১১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়। এই কাজ করতে ঠিকাদারও নিয়োগ দেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কাজ পায় ঢাকার ইঞ্জিনিয়ারিং হাউজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। এরপর সেখানে কাজ করতে গেলে চিহ্নিত ওই মহলটি বাধা দেয়। এমনকি ঠিকাদার ও তার লোকজন, প্রধান শিক্ষক এবং সভাপতিকে লাঞ্ছিত করে। কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এ বছরের ২৮ জানুয়ারি স্কুল কর্তৃপক্ষ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিতভাবে অভিযোগ করেন। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ইসমাইল হোসেন বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন বিশ্বাসকে অবগত করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরকারি সম্পত্তি রক্ষা করতে তাৎক্ষণিক কোতোয়ালি থানার ওসির হস্তক্ষেপ চেয়ে কাগজপত্র পাঠান। এরপর পুলিশের সহযোগিতায় স্কুলের তিনপাশে প্রাচীর ও গেট নির্মাণ করা হয়।
সূত্র জানিয়েছে, পুলিশি তৎপরতা থেমে গেলে ওই মহলটি ঈদগাহের সীমানা দিয়ে প্রাচীর নির্র্মাণে বাধা দিচ্ছে। ফলে, স্কুল ক্যাম্পাস অরক্ষিতই রয়ে গেছে। এখানে আগের মতো প্রতিদিন সন্ধ্যায় মাদকের আড্ডা বসছে। সরকারি বরাদ্দে সরকারি জায়গায় যারা প্রাচীর নির্মাণে বাধা দিচ্ছে তাদের বক্তব্য হচ্ছে, ঈদের নামাজের সময় অসুবিধা হতে পারে। অপরদিকে, স্থানীয়দের বক্তব্য, জোরপূর্বক অন্যের জায়গায় ঈদগাহ-মসজিদ করা সমীচিন কিনা। আর এভাবে নামাজের ব্যবস্থা রাখা শরিয়ত কতটুকু সমর্থন করে। তাছাড়া, তিনফুট উঁচু প্রাচীরের ওপর গ্রিল দেওয়া হবে। ফলে, বছরে দু’বার ঈদের নামাজে যদি জায়গা সংকুলান না হয় তাহলে স্কুল ক্যাম্পাসের মধ্যে নামাজ আদায় করা যাবে।
স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছেন, গত বছরের জুন মাসে বরাদ্দ এসেছে। চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যে এই কাজ শেষ করতে হবে। তা না হলে অর্থ ফেরত যেতে পারে।
স্কুলের সভাপতি এলতাজ উদ্দীন রানা বলেন, ‘সামনে প্লেয়িং এক্সসরিজ আসবে। স্কুলে প্রাচীর না থাকলে সেগুলো স্থাপন করা যাবে না। আর এটি হলে শিশুরা শরীর চর্চা থেকে বঞ্চিত হবে।’
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘স্কুলের তিনপাশে প্রাচীর করা হয়ে গেছে। বাকি আছে একপাশে। সেটি নিয়ে ঝামেলা হচ্ছে। এ বিষয়ে ইউএনও এবং উপজেলা ইঞ্জিনিয়ারের সাথে কথা হয়েছে। প্রয়োজনে দাঁড়িয়ে থেকে প্রাচীর নির্মাণ করা হবে।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রিপন বিশ্বাস বলেন, ‘সরকারি সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব কর্মকর্তাদের। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে। সরকারি কাজে কেউ বাধা দিতে পারবে না। ওই স্কুলের প্রাচীর নির্মাণ কাজ শেষ করা হবে।’
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আশরাফুল আলম বলেন, ‘আমি স্কুল কর্তৃপক্ষের আবেদনের কপি পেয়েছি। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে যেকোনো মূল্যে প্রাচীর নির্মাণ কাজ শেষ করতে বলেছি। না পারলে জেলা প্রশাসককে বিষয়টি জানানো হবে। কোনো অজুহাতে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া যাবে না। আর তাছাড়া, সরকারি জায়গায় যারা জোরপূর্বক ঈদের নামাজ পড়ার কথা বলছে তাদের এটি ঠিক হচ্ছে কিনা। অন্যের জায়গায় জোরপূর্বক কি নামাজ হয়। নামাজের জায়গাতো আগে মসজিদ কিংবা ঈদগাহের নামে ওয়াকফ করা লাগে। এটি প্রাচীর নির্মাণে বাধাদানকারীরা কেন বুঝছে না।’

আরও খবর

🔝