gramerkagoj
শুক্রবার ● ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
উড়োজাহাজে ব্যাপক ভিড়, মিলছে না টিকিট

❒ যশোর থেকে ১১টি ফ্লাইটে প্রতিদিন চলাচল করছে হাজারো মানুষ

প্রকাশ : বুধবার, ১৯ মে , ২০২১, ১০:৫৫:১৭ পিএম
জাহিদ আহমেদ লিটন:
1621443400.jpg
করোনায় লকডাউন পরিস্থিতিতে যশোর থেকে ঢাকায় যাতায়াতের একমাত্র বাহনে পরিণত হয়েছে উড়োজাহাজ। এ কারণে যশোর বিমানবন্দরে উড়োজাহাজে যাত্রীর ব্যাপক ভিড়। আগামী শনিবার পর্যন্ত যশোর থেকে ঢাকায় চলাচলকারী তিনটি এয়ারলাইন্সে কোন টিকিট নেই। ঈদ করতে যশোরে আসা ঢাকায় বসবাসকারীরা এসব টিকিট অগ্রিম কেটে নিয়েছেন ও বুকিং করে রেখেছেন। এক্ষেত্রে এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের কাছ থেকে দ্বিগুনের বেশি টাকা আদায় করছেন বলে যাত্রীরা অভিযোগে জানিয়েছেন।সূত্র জানায়, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ দেশে ভয়াবহ আকার ধারণ করলে সরকার গত ৫ এপ্রিল থেকে লকডাউন ঘোষণা করে। এরপর থেকে গত একমাসের অধিক সময় দেশে দূরপাল্লার পরিবহন, ট্রেন ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে গত ৬ মে থেকে জেলা ভিত্তিক গণপরিবহন খুলে দেয়া হলেও বন্ধ রয়েছে আন্ত:জেলা বাস, ট্রেন ও লঞ্চ চলাচল। এ কারণে ঢাকাগামী যাত্রীরা বেকায়দায় পড়েন। নিজস্ব গাড়ি ছাড়া করোনায় নিরাপদে ঢাকায় যাতায়াতের বিকল্প কোন বাহন নেই। ফলে জরুরি প্রয়োজনে ঢাকাগামী মানুষ ছুটছেন উড়োজাহাজের কাউন্টারে। এ কারণে বর্তমানে যশোর বিমানবন্দর বাস টার্মিনালের রূপ ধারণ করেছে। সেখানে সব সময় মানুষের ভিড় লেগেই থাকছে। সকাল সাড়ে ৭টা থেকে শুরু করে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত বিমান চলাচল করায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সূত্র জানায়, বর্তমানে যশোর থেকে দুটি বেসরকারি কোম্পানিসহ তিনটি উড়োজাহাজ যাত্রী নিয়ে ঢাকায় চলাচল করছে। এগুলো হলো, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, নোভো এয়ারলাইন্স ও ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স। এরমধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের তিনটি ফ্লাইট, নোভো এয়ারের ৪টি ও ইউএস বাংলার ৪টি ফ্লাইট প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে। প্রতিদিনে মোট ১১টি ফ্লাইটে প্রায় এক হাজার যাত্রী ঢাকায় যেতে পারছেন। এক্ষেত্রে সাধারণ যাত্রীদের অভিযোগ, বর্তমানে ঢাকায় যাতায়াতের একমাত্র বাহন হিসেবে উড়োজাহাজ কর্তৃপক্ষ তাদেরকে জিম্মি করে ফেলেছেন। তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে বেসরকারি কোম্পানিগুলো। তারা যশোর থেকে ঢাকায় যাবার জন্য সর্বনিম্ন ৩ হাজার ৪শ’ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৮ হাজার ৪শ’ টাকা পর্যন্ত আদায় করছেন। এ কাজে যাত্রীদের কোন কথাই তারা আমলে নিচ্ছেন না। তারা বলছেন, সর্বনিম্ন মূল্যের টিকিট বিক্রি শেষ হয়ে গেছে। ঢাকায় যেতে হলে আপনাকে বেশি মূল্যের টিকিট কিনতে হবে। কর্তৃপক্ষ টিকিটের মূল্য বেধে দেয়ায় তাদের কোন হাত নেই।  গত সোমবার বিমানবন্দরে নোভো এয়ারলাইন্সের কাউন্টারে যোগাযোগ করা হলে জানানো হয়, এদিন তাদের কোন ফ্লাইটের সিট খালি ছিল না। যদি পরদিন কোন যাত্রী বুকিং বা টিকিট ফেরত দেন তবেই সিট পাওয়া যাবে। তবে সোমবার রাত ৯টা ১০ মিনিটের ফ্লাইটে একটি সিট খালি রয়েছে। যার মূল্য পড়বে ৭ হাজার ৬শ’ টাকা। অনুরূপভাবে ইউএস বাংলা এয়ার লাইন্স থেকে বলা হয় আগামী শনিবার পর্যন্ত তাদের ফ্লাইটের কোন টিকিট নেই। তবে জরুরিভাবে সাড়ে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকার মধ্যে টিকিট পাওয়া যেতে পারে। তাদের সর্বনিম্ন টিকিটের মূল্য ৩ হাজার ৪শ’ টাকা। বাংলাদেশ বিমানের সর্বোচ্চ টিকিটের মূল্য আট হাজার ৪শ’ টাকা ও সর্বনিম্ন তিন হাজার ২শ’ টাকা বলে জানানো হয়েছে।     তবে এসব বিমান কোম্পানির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাদেরকে বর্তমানে ওয়ান সাইড বিমান পরিচালনা করতে হচ্ছে। ঢাকা থেকে প্রায় খালি বিমান নিয়েই যশোরে এসে যাত্রী বোঝাই করে ঢাকায় যেতে হচ্ছে। ফলে ঢাকা থেকে আসা খালি বিমানের লোকসান পুষিয়ে নিতে কর্তৃপক্ষ ভাড়া কিছুটা বৃদ্ধি করেছেন বলে তারা জানিয়েছেন। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ঢাকা-কক্্রবাজার ও ঢাকা-কোলকাতাসহ পৃথিবীর অধিকাংশ রুটে বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় যশোর ও অন্যান্য অভ্যন্তরীন রুটে বিমানের ফ্লাইট বৃদ্ধি করা হয়েছে। আর ঈদের কারণে যাত্রী বেশি থাকায় তারা অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনা করছেন।যশোর বিমানবন্দরের নোভো এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন বলেন, বর্তমানে তাদের এয়ারলাইন্সের ৪টি ফ্লাইট চলাচল করছে। আগামী তিনদিন তাদের ফ্লাইটে কোন সিট খালি নেই। তবে কেউ বুকিং ক্যানসিল করলে বা টিকিট ফেরত দিলে সিট মিলতে পারে। ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের যশোর স্টেশন ম্যানেজার সাব্বির হোসেন টুটুল বলেন, আগামী শনিবার পর্যন্ত বিমানবন্দরে ঢাকামুখি মানুষের ভিড় থাকবে। এসময় পর্যন্ত তাদের প্রায় সব টিকিট বুকিং রয়েছে ও বিক্রি হয়ে গেছে। ঈদে ঢাকা থেকে যশোরে আসা মানুষের এ ভিড় চলছে। আগামী রোববার থেকে এ ভিড় খানিকটা স্বাভাবিক হবে বলে তিনি জানান।এসব বিষয়ে বাংলাদেশ বিমানের যশোর সেলস প্রমোশন অফিসার মাহবুবুর রহমান বলেন, বর্তমানে তারা যশোর থেকে তিনটি ফ্লাইট পরিচালনা করছেন। করোনা পরিস্থিতিতে বিমানের অভ্যন্তরীন কক্সবাজার রুটসহ আন্তর্জাতিক বেশ কয়েকটি রুট বন্ধ থাকায় যশোরে ফ্লাইট সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। তাদের ফ্লাইটে বর্তমানে সর্বনিম্ন ভাড়া তিন হাজার ২শ’ টাকা ও সর্বোচ্চ আট হাজার ৪শ’ টাকা। তারা মানুষকে সর্বোচ্চ সেবা দিতে সব সময় প্রস্তুত বলে তিনি জানান।    

আরও খবর

🔝