gramerkagoj
শুক্রবার ● ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
টিকিট কাউন্টার বন্ধ রেখে নিজস্ব ওটি রুম চালাচ্ছিলেন কর্মচারি

❒ খবর শুনেই তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিলেন সুপার

প্রকাশ : শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারি , ২০২৪, ১১:৫২:০০ পিএম , আপডেট : বুধবার, ২৪ এপ্রিল , ২০২৪, ০৩:০১:২৯ পিএম
আশিকুর রহমান শিমুল:
GK_2024-02-10_65c7b80fa7897.jpg

দুপুর ১২টা ২৫ মিনিট। যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের বহির্বিভাগে নারী ও পুরুষ টিকিট কাউন্টারের সামনে রোগীদের দীর্ঘ লাইন। নারীদের টিকিট কাউন্টারে যেয়ে দেখা গেলো সেটি বন্ধ। কাউন্টার থেকে জানানো হলো, ভিতরে জরুরি অপারেশন চলছে। পুরুষ টিকিট কাউন্টার থেকে নারী ও পুরুষদের টিকিট দেয়া হচ্ছে। নারী কাউন্টারের টিকিট বন্ধ রাখার কারণ জানতে ভেরতে যেয়ে দেখা গেলো ভয়ানক চিত্র। কাউন্টারের ভিতর বিভিন্ন মেডিকেল সরঞ্জাম। সেখানে টেবিলের উপর এক শিশুকে শোয়ানো অবস্থায় পাওয়া গেলো। তার সুন্নতে খৎনার কাজ করছেন হাসপাতালের ব্রার্দার ও বর্হির্বিভাগের টিকিট ইনচার্জ জাহাঙ্গীর।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, টিকিট কাউন্টারে কাজ হচ্ছে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বহির্বিভাগের রোগীর জন্য টিকিট বিক্রি করা। সেখানে সুন্নতে খৎনা বা ছোট-বড় কোনো অপারেশন করার সুযোগ নেই। স্বজনরা কেউ যদি তাদের শিশুকে খৎনা করাতে চান তাহলে অবশ্যই হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে টিকিট কেটে সরাসরি অপারেশন থিয়েটারে যোগাযোগ করবেন। সেখানে ডাক্তার পরবর্তী নির্দেশনা দিবেন। অফিস টাইমে সরকারি কোনো কর্মচারী হাসপাতালের ভিতরে খৎনা করাতে পারবেন না। আর টিকিট কাউন্টারে এমন কাজ করার কোনো সুযোগ নেই।
আম্বেয়া নামে একজন রোগী জানান, তিনি ১২টা থেকে টিকিটের জন্যে নারীদের লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। ২০ মিনিট পর কাউন্টার থেকে জানানো হলো এখন আর টিকিট দেয়া হবেনা। টিকিট নিতে হলে পুরুষ লাইনে যেতে হবে। কিন্তু সেখানে আগে থেকেই দীর্ঘ লাইন। দুপুর ১টার কিছুটা আগে টিকিট হাতে পেলেও ডাক্তার দেখানে পারেননি। কেননা, ডাক্তার দেখাতে গেলে চেম্বারের সামনে থেকে জানানো হয়েছে দুপুর ১টার পর টিকিট জমা দেয়া হয়না।
একই অভিযোগ করেন মর্জিনা বেগম নামে আর একজন রোগী। তিনি জানান, আধাঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার পর জানতে পারলেন আজ (শনিবার) আর নারী কাউন্টার থেকে টিকিট দেয়া হবে না। পুরুষ কাউন্টারে যেতে হবে। কিন্তু সেখানেও প্রচুর ভিড় ও ঠেলাঠেলিতে টিকিট কাটতে পারেননি তিনি।
একাধিক রোগী ও তাদের স্বজনদের প্রশ্ন, টিকিট রুমে খৎনা করানো কোন আইন। তার জন্য জরুরি বিভাগ ও অপারেশন থিয়েটার আছে। আর ডাক্তারের কাজ কেনো টিকিট বিক্রেতা করবে। অনৈতিক আর্থিক সুবিধা নিতে কাউন্টার বন্ধ করে খৎনার কাজ করছেন জাহাঙ্গীর। তার জন্য ভুক্তভোগী হচ্ছেন সাধারণ রোগী ও তাদের স্বজনরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মী জানান, এর আগে ব্রার্দার জাহাঙ্গীর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ডিউটি করতেন। সেখানে হাত-পা ভাঙা রোগীদের প্লাস্টার করে অর্থ হাতিয়ে নেয়া ছাড়া নানা অভিযোগে তাকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ টিকিট কাউন্টারে পাঠিয়েছে। সেখানে যেয়েও একই কাজ করছেন তিনি। প্রায়দিন কাউন্টার কক্ষে তিনি খৎনার কাজ করেন। আর রোগীর স্বজনদের কাছে বকষিশ বাবদ হাতিয়ে নেন এক হাজার থেকে ১৫শ’ টাকা।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার হারুন অর রশিদ জানান, টিকিট কাউন্টার বন্ধ রেখে খৎনার কাজ করে ব্রার্দার জাহাঙ্গীর আপরাধ করেছেন। বিষয়টি জানামাত্রই তাকে টিকিট কাউন্টার থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

আরও খবর

🔝