gramerkagoj
শুক্রবার ● ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ ১২ লাখ গ্রাহক

❒ যশোরাঞ্চলে প্রতিদিন ঘাটতি ৬০ মেগাওয়াট

প্রকাশ : বৃহস্পতিবার, ২৮ এপ্রিল , ২০২২, ১২:৪০:১৫ এ এম
এম. আইউব:
1651084848.JPG
প্রচন্ড গরমের মধ্যে যশোরাঞ্চলে ব্যাপক আকারে লোডশেডিং দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাচ্ছে না ওজোপাডিকো ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। যে কারণে বিভিন্ন সময় সংস্থাগুলো লোডশেডিং দিতে বাধ্য হচ্ছে। পবিত্র রমজান মাসে এই গরমের মধ্যে জেলার ১২ লাখ গ্রাহক অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। কেবল গ্রাহক অতিষ্ঠ হচ্ছেন না, তাদের পরিবারের অন্যান্য মানুষও বিরক্ত হচ্ছেন, কষ্ট পাচ্ছেন। প্রতি পরিবারে যদি গড়ে চারজন করে থাকে তাহলে ৪৮ লাখ মানুষের বিদ্যুৎবিহীন ঘরে নাভিশ্বাস উঠছে। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চায় ভুক্তভোগী গ্রাহকরা। লোডশেডিংয়ের মাত্রা শহরের তুলনায় গ্রামে অনেক বেশি। ফলে, দুর্ভোগ বেশি তাদের। শহরের গ্রাহকরা একদিকে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন, অপরদিকে লোডশেডিংও কম। ফলে যতকষ্ট সব গ্রামের মানুষের। কারণ তাদের বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নেই বললেই চলে।যশোর ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড-ওজোপাডিকো-১ ও ওজোপাডিকো-২ এবং পল্লী বিদ্যুৎ-১ ও পল্লী বিদ্যুৎ-২ এর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাদের সব মিলিয়ে ১১ লাখ ৮২ হাজার গ্রাহক রয়েছে। এরমধ্যে ওজোপাড়িকো-১ এ ৫০ হাজার, ওজোপাডিকো-২ এ ৫৫ হাজার, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এ ৫ লাখ ৩২ হাজার ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এ সাড়ে ৫ লাখের মতো গ্রাহক রয়েছে। যশোর ওজোপাডিকো-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, ওজোপাডিকো-১ ও ২ মিলে মোট গ্রাহক রয়েছে ১ লাখ ৫৫ হাজার। এরমধ্যে ওজোপাডিকো-১ এর আওতায় ৫০ ও ২ এর আওতায় আছে ৫৫ হাজার। এর বাইরে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর গ্রাহক সংখ্যা বর্তমানে ৫ লাখ ৩২ হাজার। আর সাড়ে ৫ লাখ গ্রাহক রয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর।নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, ওজোপাডিকো ১ ও ২ মিলে প্রতিদিন বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ৫২ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে তারা প্রতিদিন বরাদ্দ পাচ্ছেন ৪২ থেকে ৪৫ মেগাওয়াট। এ কারণে তারা লোডশেডিং করতে বাধ্য হচ্ছেন। রমজান আর প্রচন্ড গরমের মধ্যে লোডশেডিং করা নিয়ে তারাও বিব্রত বলে জানিয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী। যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর এজিএম (সদস্য সেবা) সাঈদ হোসেন জানিয়েছেন, তাদের আওতাধীন গ্রাহকের সংখ্যা ৫ লাখ ৩২ হাজার। প্রতিদিন তাদের বিদ্যুৎ চাহিদা ১শ’ ৩৫ মেগাওয়াট। বরাদ্দ পাচ্ছেন সর্বোচ্চ ১শ’ থেকে ১শ’ ৩ মেগাওয়াট। এ কারণে প্রতিদিন ঘাটতি থাকছে কমপক্ষে ৩২ থেকে ৩৫ মেগাওয়াট।যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জেনারেল ম্যানেজার মনোহর কুমার বিশ্বাস জানান, তাদের গ্রাহক সংখ্যা সাড়ে ৫ লাখ। প্রতিদিন গড়ে বিদ্যুৎ চাহিদা ১শ’ ১৬ মেগাওয়াট। বরাদ্দ পাচ্ছেন ৯০ থেকে ৯৬ মেগাওয়াট। এ কারণে প্রতিদিন লোডশেডিং দিতে বাধ্য হচ্ছেন তারাও। শহরে অভিজাত শ্রেণির বসবাস। সাথে বিভিন্ন ধরনের অফিস, আদালত ও কলকারখানা রয়েছে। এই কারণে বিদ্যুতের বরাদ্দ বেশি দেয়া হয়। ফলে, লোডশেডিংয়ের পরিমাণ কম। এর বাইরে শহরের বেশিরভাগ বাড়িতে বিদ্যুতের বিকল্প ব্যবস্থা রয়েছে। কোনো বাড়িতে আইপিএস, আবার কোনো বাড়িতে জেনারেটরের ব্যবস্থাও আছে। এ কারণে লোডশেডিং হলেও গরমের কষ্ট এসব পরিবারের সদস্যরা খুব একটা টের পাননা বললেই চলে। অপরদিকে, গ্রামের মানুষের বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নেই। তারা পুরোপুরি বিদ্যুতের উপর নির্ভরশীল। অথচ এই গ্রামেই বেশি লোডশেডিং দেয়া হচ্ছে। একে রমজান মাস, তার উপর প্রচন্ড তাপদাহ; এই অবস্থায় লোডশেডিং জীবনকে ওষ্ঠাগত করে তুলছে। এতো বিদ্যুৎ ঘাটতির কারণ কী-এমন প্রশ্নের জবাবে যশোর ওজোপাডিকো-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বলেন, দেশের বেশিরভাগ বিদ্যুৎ কেন্দ্র গ্যাস নির্ভর। বেশকিছু দিন শিল্প কলকারখানায় গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দেয়া হয়। এ কারণে লোডশেডিং কম ছিল। বর্তমানে ওইসব কলকারখানায় গ্যাস সরবরাহ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ কারণে বিদ্যুতের ঘাটতি হচ্ছে। যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জেনারেল ম্যানেজার মনোহর কুমার বিশ্বাস জানিয়েছেন, দিনে তেমন একটা লোডশেডিং হচ্ছে না। মূলত সন্ধ্যা ছয়টা থেকে রাত দেড়টা পর্যন্ত লোডশেডিং বেশি হচ্ছে। জেনারেশন ব্যবস্থা বৃদ্ধি না পাওয়া পর্যন্ত লোডশেডিং কমার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ কর্মকর্তারা।   

আরও খবর

🔝