gramerkagoj
শুক্রবার ● ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ
প্রকাশ : শুক্রবার, ২১ জানুয়ারি , ২০২২, ০১:৪৬:২২ পিএম
ঢাকা অফিস:
1642757820.jpg
দেশের সব স্কুল, কলেজসহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেও একই ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়ে শুক্রবার একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দ্রুত বাড়তে থাকায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, কোনো সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয়, রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে একশ জনের বেশি মানুষের সমাবেশ করা যাবে না। এসব ক্ষেত্রে যারা যোগ দেবেন, তাদের অবশ্যই টিকা সনদ অথবা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে করা পিসিআরে কোভিড টেস্টের রিপোর্ট দেখাতে হবে।সরকারি, বেসরকারি অফিস এবং শিল্প কারখানায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টিকা সনদ নিতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। বাজার, শপিং মল, মসজিদ, বাস স্ট্যান্ড, লঞ্চঘাট, রেল স্টেশনসহ সাধারণ লোকসমাগমের স্থানে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে এবং যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে। স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করতে বলা হয়েছে।  স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক সকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমানোর জন্য সরকার নতুন করে এসব পদক্ষেপ নিয়েছে। দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বৃহস্পতিবার একদিনে প্রায় ১১ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। প্রতিদিন ১০ থেকে ২০ শতাংশ করে রোগী বাড়ছে। ইতোমধ্যে ঢাকার হাসপাতালগুলোয় প্রায় ৩৩ শতাংশ শয্যা রোগীতে ভর্তি হয়ে গেছে।’# আপাতত ছুটি ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত# অফিসে লাগবে টিকা সনদ# একশ’ জনের বেশি মানুষের সমাবেশ নয়দেশে ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাবের পর সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার ১১ দফা বিধিনিষেধ জারি করে। এই বিধি নিষেধ ১৩ জানুয়ারি থেকে কার্যকর করার ঘোষণা দেওয়া হয়। অর্ধেক যাত্রী নিয়ে বাস ও ট্রেন চালানোর পাশাপাশি উন্মুক্ত স্থানে সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় জমায়েতেও সে সময় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। রেস্তোরাঁয় বসে খাওয়ার ক্ষেত্রেও কোভিড টিকার সনদ থাকা বাধ্যতামূলক করা হয় এবং টিকা সনদ ছাড়া ১২ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে নিষেধ করা হয়।শুক্রবারের সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার বিধিনিষেধ দিলেও মানুষ সেভাবে মানছে না। মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানছে না বলেই সংক্রমণ বাড়ছে। স্কুলের শিক্ষার্থীরাও আক্রান্ত হচ্ছে। এ কারণেই ফের স্কুল বন্ধের মত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমরা স্কুল খুলেছিলাম। কিন্তু ইদানীং লক্ষ্য করলাম স্কুল কলেজেও সংক্রমণ বেড়ে গেছে। তারা আক্রান্ত হচ্ছে। হাসপাতালে আসছে চিকিৎসার জন্য। এটা আশঙ্কাজনক। সংক্রমণ এভাবে বাড়লে ঢাকা শহরের সব হাসপাতালে দেখা যাবে বেড খালি নাই।দেশে করোনা প্রাদুর্ভাবের পর সারা দেশে কঠোর বিধিনিষেধ জারি হলে ২০২০ সালের মার্চে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছিল সরকার। পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় ধাপে ধাপে ছুটি বাড়ানো হয়। অবশেষে সংক্রমণ কমে এলে ৫৪৩ দিন পর গতবছরের ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয় সরকার। তাতে দীর্ঘদিন পর শ্রেণিকক্ষে ফেরার সুযোগ পায় শিক্ষার্থীরা। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষাও নেওয়া সম্ভব হয়। এরইমধ্যে গত নভেম্বরে করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক ধরন ওমিক্রন শনাক্ত হওয়ার পর বিশ্বজুড়ে নতুন করে উদ্বেগ বাড়তে থাকে। ১১ ডিসেম্বর বাংলাদেশেও ওমিক্রন আক্রান্ত রোগী ধরা পড়ে।   শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি গত ৯ জানুয়ারি বলেছিলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রেখে টিকাদান কার্যক্রমে জোর দিচ্ছে সরকার। শিক্ষার্থীদের সুরক্ষিত রেখে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাবেন তারা। এর পর দুই সপ্তাহ না যেতেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফের বন্ধের ঘোষণা দেয়া হলো। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যে কোনো জনসমাগমে যেতে হলে টিকা সনদ নিয়ে যেতে হবে। এটা সব জায়গায় প্রযোজ্য হবে। বই মেলা, স্টেডিয়াম, বাণিজ্যমেলাসহ সবখানেই এখন থেকে এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা হবে। সব জায়গায় নিয়ন্ত্রণ করা হবে। হোটেল রেস্তরাঁয় গেলেও টিকা সনদ নিয়ে যেতে হবে। এটা বাস্তবায়নের দায়িত্ব প্রশাসনের। আমরা তাদেরকে আবার বলব বিষয়গুলোতে যেন নজরদারি বাড়ায়।’স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীরসহ কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।মেলা-খেলায় লাগবে টিকা ও নেগেটিভ সনদস্বাস্থ্যবিধি মেনে বাণিজ্যমেলা, বিপিএল ও পর্যটনকেন্দ্রসহ অনুষ্ঠিতব্য বইমেলাতে প্রবেশের ক্ষেত্রে করোনার টিকা সনদ ও কোভিড টেস্টের সনদ প্রদর্শন করতে হবে। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কনফারেন্স রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এ কথা জানান।মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আপনাদের আগেই বলেছি, যে কোনো সমাগমে যেতে হলে আপনারা যাবেন। বিশেষ করে সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোতে ১০০ জনের বেশি লোক যেতে পারবেন না। অবশ্য যেখানে খেলার বিষয় আসবে সেখানে ১০০ এর বেশি লোক যাবে না, একথা তো বলা যাবে না। কারণ এটা স্টেডিয়ামে হয়। সেখানে টিকা সনদ নিয়ে, টেস্টের সনদ নিয়ে যেতে হবে। এর বাইরে সম্ভব নয়। এটা সর্বক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। সেটা বইমেলার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। এগুলোতে টিকা সনদ ও করোনা টেস্টের সনদ দেখিয়ে ঢুকতে হবে। ’তিনি বলেন, ‘সংক্রমনের হার বৃদ্ধি পেয়েছে বিধায় বইমেলা দুই সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেটা ১৫-ই ফেব্রুয়ারিতে শুরু হবে। সেখানেও একটি বিশেষ নির্দেশনা রয়েছে বইমেলা কীভাবে পরিচালিত হবে। আমাদের উদ্দেশ্য হলো- পৃথিবী যেভাবে চলছে, যেভাবে বিধি-নিষেধগুলো দিচ্ছে, আমরাও তার বাইরে নই। তবে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় এখনো আমরা ভালো আছি এবং এই ভালোটা আমাদের রাখতে হবে। ’বাণিজ্য মেলা ও পর্যটন কেন্দ্রে ভ্রমণ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, 'এই নির্দেশনাটা এখন থেকে আমরা শুরু করলাম। যদি মেলা বা হোটেলে যেতে হয়, যদি রেস্টুরেন্টে যেতে হয়, এই ধরনের সনদ, টিকার সনদ এবং কোভিড টেস্টের সনদ নিয়েই তাদের যেতে হবে। 'এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশিদ আলমসহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনান্য কর্মকর্তারা।সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধশুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, এর পাশাপাশি সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। ২১ জানুয়ারি রাজধানীর জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে (এনসিটিবি) এক আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সকল কোচিং সেন্টারও বন্ধ থাকবে। কারণ সেখানেও শিক্ষার্থীদের সমাবেশ ঘটে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এবং শিক্ষা অফিসের কার্যালয় খোলা থাকবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সেখানে কাজ চলবে। আমাদের টিকাদান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।  যতদ্রুত সম্ভব টিকা দেওয়া হবে।’বিগত সময়ের মতো এবারও দফায় দফায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ানো হবে কিনা জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের নিশ্চয় মনে আছে, জেলা প্রশাসকদের সম্মেলনে বলেছিলাম, আমাদের চেষ্টাটা হলো, একেবারেই যদি বাধ্য না হই, তাহলে আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে চাই না। শিক্ষা জীবন যতখানি সম্ভব স্বাভাবিক রেখে আমরা করোনা সংকট মোকাবিলা করতে চাই।’শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন হাসপাতালের যে চিত্র তাতে শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ ঘটছে। এটা সঙ্গে সঙ্গে আমাদের আমলে নিতে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে কথা হয়েছে তখনি একটা প্রেস রিলিজ দেওয়ার কথা হয়।’                                                             

আরও খবর

🔝