শিরোনাম |
❒ এলাকাবাসীর ক্ষোভ, অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপসহকারী প্রকৌশলী মো. হেলালুর রহমান হেলালের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তিনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ প্রকল্পে নিজেই ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছেন।
স্থানীয়রা এই বিষয়কে শুধুমাত্র এলজিইডির শৃঙ্খলা ভঙ্গ নয়, পুরো সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা হিসেবে দেখছেন।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের পিইডিপি-৪ প্রকল্পের আওতায় প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে পলাশবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চারতলা ভবন নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থাকা সত্ত্বেও কাজের শুরু থেকে উপসহকারী প্রকৌশলী হেলাল নিজেই নিয়ন্ত্রণ করছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড জামায়াতের সেক্রেটারি মোহাব্বত হোসেন জানান, “প্রাক্কলন অনুযায়ী কাজ না হওয়ায় ঠিকাদার ডাকার অনুরোধ করলে হেলাল সাহেব জানান, ঠিকাদার আসবে না, আমি নিজেই ঠিকাদার।”
আরও পড়ুন...
ইলন মাস্কের নতুন রাজনৈতিক দল 'আমেরিকা পার্টি' গঠনের ঘোষণা
ক্লাব বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ
কাঠামোর নির্মাণে উচ্চমানের ইট, পাথর, বালি ও সিমেন্ট ব্যবহার না করে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগও রয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগসাজশ করে হেলাল এই অনিয়মের সঙ্গে জড়িত।
অনেকবার অভিযোগ সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ না পেয়ে হতাশ স্থানীয়রা। প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় উপসহকারী প্রকৌশলী হেলাল বেপরোয়া আচরণ করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রতিবাদ করলেই ভয়ভীতি ও রাজনৈতিক প্রভাব প্রয়োগ করে বিষয়টি চাপা দেয়ার চেষ্টা করা হয়।
পূর্বেও সড়ক উন্নয়ন, উন্নয়ন সহায়তা, পল্লী অবকাঠামো ও প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্পে বিল ছাড়ের সময় ৫ থেকে ১০ শতাংশ কমিশন নেওয়া, দরপত্র জালিয়াতি, অতিরিক্ত বিল অনুমোদন ও পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ দেওয়া এবং ঠিকাদারের সঙ্গে ভাগাভাগির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এলজিইডির এক অনিচ্ছুক কর্মকর্তা বলেন, “যখন প্রকৌশলী নিজেই ঠিকাদার, তখন কাজের মান ও নিরপেক্ষতা নিয়ে সন্দেহ জন্মে।”
সদ্য যোগদানকৃত উপজেলা প্রকৌশলী তৌহিদুল করিম সরকার জানান, “উপসহকারী প্রকৌশলী এমন কাজ করতে পারবেন না। আমি নিজে পরিদর্শন করব এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”
সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার আসাদুজ্জামান দোলন বলেন, “নির্মাণের মান নিয়ে প্রশ্ন আছে, অভিযোগ জানানো হলেও কোন পদক্ষেপ হয়নি।”
উপসহকারী প্রকৌশলী হেলালের বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করলেও ফোন রিসিভ করা হয়নি।
এলাকাবাসী চায়, এই দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত করা হোক এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা হোক, যেন সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠিত হয়।