gramerkagoj
বৃহস্পতিবার ● ১৭ জুলাই ২০২৫ ২ শ্রাবণ ১৪৩২
gramerkagoj
ইলন মাস্কের নতুন রাজনৈতিক দল 'আমেরিকা পার্টি' গঠনের ঘোষণা
প্রকাশ : রবিবার, ৬ জুলাই , ২০২৫, ১১:১৭:০০ এএম
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
GK_2025-07-06_686a06f01974c.jpg


যুক্তরাষ্ট্রে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক।
শনিবার (৫ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে তিনি জানান, তার নতুন দলের নাম হবে ‘আমেরিকা পার্টি’। মাস্ক লেখেন, “আজ আমেরিকা পার্টির জন্ম হলো—আপনার স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার নিয়ে।”—এমনটাই জানিয়েছে রয়টার্স।

মাস্কের এই ঘোষণার পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হলেও ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন বা হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে কোনো তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।

নতুন দলের ঘোষণা একেবারে আকস্মিক নয়। মাস্ক কিছুদিন আগেই এক্সে একটি জনমত জরিপ চালান, যেখানে অংশগ্রহণ করেন প্রায় ১২ লাখ মানুষ। মাস্কের দাবি, অংশগ্রহণকারীদের দুই-তৃতীয়াংশই যুক্তরাষ্ট্রে একটি নতুন রাজনৈতিক দলের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। সেই সমর্থনের ভিত্তিতেই তিনি ‘আমেরিকা পার্টি’র ঘোষণা দেন।

আরও পড়ুন...

ইসরায়েলের হামলায় আরও ৭৮ ফিলিস্তিনি নিহত

রাত আড়াইটায় ঋতুপর্ণাসহ পুরো দলকে হাতিরঝিলে সংবর্ধনা


এই ঘোষণার আরেকটি বড় পেছনের কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক নীতিকে। শুক্রবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প করছাড় ও ব্যয় বৃদ্ধির একটি প্রস্তাব—‘বিগ বিউটিফুল বিল’—আইনে পরিণত করেন। মাস্ক এই বিলকে “যুক্তরাষ্ট্রকে দেউলিয়ার পথে ঠেলে দেওয়ার” পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেন।

ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ইলন মাস্ক তার প্রচারে আর্থিক সহায়তা করেছিলেন এবং সরকারি দক্ষতা বিভাগের প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তবে সাম্প্রতিক নীতিগত মতপার্থক্যের জেরে তাদের সম্পর্ক এখন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে।

এর আগেও মাস্ক সতর্ক করে বলেছিলেন, তিনি এমন একটি রাজনৈতিক দল গঠন করবেন, যারা করছাড় ও অপ্রয়োজনীয় ব্যয়ের পক্ষে থাকা আইনপ্রণেতাদের নির্বাচনে হারাতে বিপুল অর্থ ব্যয় করতে প্রস্তুত। মাস্কের এই ঘোষণার কিছুদিন পর ট্রাম্প পাল্টা হুমকি দেন, কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে মাস্কের কোম্পানিগুলোর ভর্তুকি বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে।

‘আমেরিকা পার্টি’ কীভাবে মার্কিন রাজনীতিকে প্রভাবিত করবে, তা এখনো অনিশ্চিত হলেও রিপাবলিকানদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, মাস্কের দল ২০২৬ সালের কংগ্রেস নির্বাচনে রিপাবলিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখায় বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

এই রাজনৈতিক টানাপড়েনের প্রভাব পড়েছে অর্থনীতিতেও। ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে টেসলার শেয়ারের মূল্য উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্পের বিজয়ের পর টেসলার শেয়ার যেখানে ছিল ৪৮৮ ডলার, তা এপ্রিলের মধ্যে নেমে আসে প্রায় অর্ধেকে। সর্বশেষ সপ্তাহে টেসলার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩১৫ ডলারে।

বিশ্লেষকদের মতে, ইলন মাস্ক যতটা প্রভাবশালী ও সম্পদশালী হোন না কেন, যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘ ১৬০ বছরের দুই-দলীয় রাজনৈতিক কাঠামো ভাঙা সহজ হবে না। তবুও ‘আমেরিকা পার্টি’র মতো নতুন উদ্যোগ মার্কিন রাজনীতিতে একটি নতুন মেরুকরণের সূচনা করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আরও খবর

🔝