gramerkagoj
শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ১৫ চৈত্র ১৪৩০
gramerkagoj
লামায় টানা প্রায় দু'বছর ধরে নিরবে চলছিল চুরির ধারাবাহিকতা। অবশেষে ধরা পড়লো চোর
প্রকাশ : মঙ্গলবার, ২০ সেপ্টেম্বর , ২০২২, ০৫:০৩:৩৬ পিএম
জাহিদ হাসাস, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি ::
1663671850.jpg
লামা পৌর শহরে অবিশ্বাস্য এক চুরির ঘটনা সবাইকে হতবাক করেছে। টানা প্রায় দু'বছর ধরে নিরবে চলছিল চুরির ধারাবাহিকতা।অবশেষে চোরের দশ দিন শেষে গৃহস্থ'র একদিন, বাংলা প্রবাদের বাস্তবতায় ধরা পড়লো চোর।ঘটনার বিবরণে জানাযায়, লামা বাজারে জেলা পরিষদ গেষ্ট হাউজের পাশে মদিনা হোটেল নামে একটি চায়ের দোকান রয়েছে। গতকাল ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধায় বাজার ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ওই চায়ের দোকান তল্লাশি করে কয়েক হাজার টাকা মূল্যের পন্য জব্দ করেন। চেয়ারম্যানপাড়াস্থ পেট্টোল পাম্প এলাকায় চা দোকানীর গুদাম থেকে উদ্ধার করা হয় চাল, ময়দা, সেমাই নুডলস, তেলসহ অনেক পন্য। এ ছাড়া চা দোকানীর কলিঙ্গাবিলস্থ বসত ঘর তল্লাশি করে আরো পন্য জব্দ করেন ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ। জানাযায়, ঘরের একটি ড্রয়ার থেকে শুধু ৪০টি লাক্স সাবান উদ্ধার করা হয়। সরেজমিন দেখা যায়, জুবায়েদ এর দোকান আর মদিনা হোটেল নাম করণে চায়ের দোকানটি লাগুয়া একই ছালের নীচে। মাঝে একটি টিনের পার্টিশন। দোকান দুটি উত্তর দক্ষিণ লম্ববান উত্তরমুখী। চায়ের দোকানদার তার দোকানের দক্ষিনাংশে পশ্চিম পাশের টিনের পার্টিশনের একটি টিন খুলে জুবায়েদের দোকানে অনায়াসে ঢুকে পড়ে। এর পর মালামাল চুরি করে নিয়ে, টিনটি যথারীতি সেটিং করে রাখে। এই অভিনবত্বের তথ্য জুনায়েদ বুঝে উঠতে দু'বছর সময় লেগে গেছে। এর মধ্যে জুনায়েদ তার দোকানের পুঁজি-লাভ কোনোটায় সমন্বয় করতে পারছিল না। এক পর্যায়ে সে দোকান কর্মচারী ও তার আপন সহদোরকে ভুল বুঝতে থাকে। সে দোকানে লাভ না হওয়ার কারন উদঘাটন করতে ইতিমধ্যে সামনের অংশে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেও ব্যবসায় লোকসানের হদিস পাচ্ছিল না।১৮ সেপ্টেম্বর সন্ধায় জুনায়েদ ডেলিভারির জন্য কিছু মিনারেল ওয়াটার দোকানের পেছনে একজায়গায় রাখে। সকালে দোকান কর্মচারীরা দেখতে পায়, সেখানে ৬টি বোতল কম। এই পানির বোতল সন্ধান করতে গিয়ে সন্দেহ হয় পাশের চায়ের দোকানদারের প্রতি। ১৯ সেপ্টেম্বর জুনায়েদ ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের দ্বারস্থ হন। এদিন সন্ধা নাগাদ চা দোকানী জামালের দোকান, বসত ঘর ও গুদাম তল্লাশী করে ব্যবসায়ী নেতারা দুই লক্ষাধিক টাকার মালামাল উদ্ধার করেন। এ ব্যপারে জুনায়েদের সাথে কথা হয়। সে জানায়, "বিগত এক বছর ধরে আমার দোকানে কোনো উন্নতি দেখছি না। আমার স্ত্রীকে বিষয়টি শেয়ার করি, বিভিন্ন আমল করে মহান আল্লাহর কাছে সহযোগিতা চাই। গত ৬/৭ মাস ধরে লক্ষ্য করেছি দোকানে কল্পনাতীত লোকসান হচ্ছে।সর্বশেষ যা উদঘাটন হলো, সেটাতো প্রকাশ্যে সবাই বুঝতে পেরিছি। পাশের চা দোকানী আমার কয়েক লক্ষ্য টাকার মালমাল চুরি করে নিয়েছে"। এ ব্যপারে কথা হয় লামা শহর ব্যবসায়ীদের সভাপতি আমান উল্লার সাথে। তিঁনি জানান, আমরা তিন স্থানে তল্লাশী করে বহু মালামাল উদ্ধার করেছি। তিঁনি আরো জানান, চায়ের দোকানদার জামাল উদ্দিন বৃদ্ধ মানুষ, সে এই অপরাধের সাথে জড়িত নন। তার ছেলে তারেক ও দোকানের কারিগর মিরাজ এই ধারাবাহিক চুরির কথা স্বীকরোক্তি দিয়েছে। এ ব্যপারে ব্যবসায়ী নেতারা জানান, পৌর মেয়র যেহেতু আমাদের অভিভাবক, সেহেতু তিনি যেভাবে যেই বিচার করেন তা আমরা মেনে নিব। এ ব্যপারে লামা পৌর মেয়র মোঃ জহিরুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি দু:খজনক ও নিন্ধনী একটি অপরাধ। আগামী ২২ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে। সেই বৈঠকের সিদ্ধান্তমতে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে চা দোকানটি ইতি মধ্যে তালা লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। মেয়র আরো জানান, এই ধরনের অপরাধ ক্ষমাযোগ্য নয়। আপাত চা দোকানীর জামানতের টাকা আটকে রাখার জন্য বলা হয়েছে।

আরও খবর

🔝