gramerkagoj
বৃহস্পতিবার ● ১৩ নভেম্বর ২০২৫ ২৯ কার্তিক ১৪৩২
gramerkagoj
শিরোনাম
শিরোনাম মণিরামপুরে ইটভাটার মেশিনে আটকা পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু আশাশুনিতে সাতক্ষীরা-৩ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীকে সংবর্ধনা প্রদান গাইবান্ধায় পাইলট প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠান মোংলায় খালেদা জিয়ার নামে স্কুল, কলেজ ও বৃদ্ধাশ্রম নির্মাণে বিএনপি নেতার উদ্যোগ সভাপতি পদে দুই ও সম্পাদক পদে চারজনসহ ২৩ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা, আওয়ামীপন্থীরা মাঠে নেই আগামীকাল উদ্বোধনী ম্যাচে লড়বে উপশহর ও ফতেপুর জোড়া গোলের জয়ে সেমিতে চৌগাছা পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন পেতে দুই হাজারের বেশি আবেদন সরকারকে জিম্মি করে দাবি আদায়কারীরা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে প্রাণনাশের হুমকির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
হামাসকে কেন নিরস্ত্র করতে চাইছে ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র?
প্রকাশ : শুক্রবার, ১০ অক্টোবর , ২০২৫, ১০:৪২:০০ এএম
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
GK_2025-10-10_68e887134f2ea.jpg

❒ হামাসকে কেন নিরস্ত্র করতে চাইছে ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র? ছবি: সংগৃহীত

বছরের পর বছর ওয়াশিংটন ও তেল আবিবে বলা হচ্ছে: “হামাসকে নিরস্ত্রীক করতে হবে— তাদের ভেঙে ফেলতে হবে এবং গাজা ছাড়তে হবে।” এই দাবি অনেকের কাছে শান্তির প্রথম শর্ত মনে হলেও ইতিহাস বলে— অস্ত্র ছাড়া কোনো সশস্ত্র আন্দোলন সাধারণত নিজের দাবি ত্যাগ করে না। গ্রানাডা থেকে ভিয়েতনাম ও আইআরএ-র উদাহরণগুলো দেখায় যে নিরস্ত্রীকরণকে ঝরঝরেভাবে ধরা হলে তা প্রায়শই দুর্বল পক্ষের জন্য আত্মসমর্পণের রূপ নেয়, এবং প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ হয়ে গেলে পরিণতি ভয়ানক হতে পারে।

প্রশ্নটি সরল: যদি হামাস তার অস্ত্র ছাড়ে, তাহলে কি শান্তি নিশ্চিত হবে? রাজনৈতিক ও ইতিহাসভিত্তিক তর্ক দেখায় এই লজিক ভ্রান্ত এবং শুণ্যতাভরে অবলম্বিত। আধুনিক ইতিহাসে সশস্ত্র আন্দোলনগুলো সাধারণত তাদের অস্ত্রই রেখে রাজনীতিতে প্রবেশের সুযোগ চেয়েছে — কিংবা অস্ত্র রেখে তাঁদের দাবি বাস্তবায়নের ক্ষমতা বজায় রেখেছে। নিরাপত্তা বা সার্বভৌমত্বের গ্যারান্টি ছাড়া অস্ত্র ত্যাগ মানে ভবিষ্যৎ সম্পূর্ণভাবে প্রতিপক্ষের হাতে ছুঁড়ে দেওয়া।

১৪৯২ সালে গ্রানাডার পতনের পর মুসলমানদের অধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছিল; কিন্তু খুব কম সময়ের মধ্যে সেই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ হয়ে যায়। এই ইতিহাস আমাদের শেখায় যে অসাম্য ব্যবস্থায় শক্তিশালী পক্ষের দেওয়া প্রতিশ্রুতি কাগজেই থাকতে পারে — এবং দুর্বল পক্ষের জন্য নিরস্ত্রীকরণ ন্যূনতম সুরক্ষা নয়, বরং বিপজ্জনক সিদ্ধান্তও হতে পারে।

ভিয়েত কং-এর উদাহরণ বিপরীত শিক্ষা দেয়: প্যারিস শান্তি চুক্তিতে রাজনৈতিক স্বীকৃতি ও নিশ্চয়তা না পেয়ে অস্ত্র ছাড়া দিয়ে দিলেই তারা পরাজয় স্বীকার করেছিল না। রাইফেল আঁকড়ে রেখে ভিয়েতনামীয়রা বিশ্ব-শক্তিকে পরাস্ত করতে সমর্থ হয়—এখানে স্পষ্ট যে ‘অসম জুদ্ধে অস্ত্র আলোচনা-যোগ্য নয়’ ছিল বেঁচে থাকার নীতিই।

আইআরএ (প্রত্যাশিতভাবে আয়ারল্যান্ডের প্রেক্ষাপটে) অবশেষে নিরস্ত্রীকরণ করে — কিন্তু সেটি আস্থা-ভিত্তিক নয়, বরং রাজনৈতিক অর্জন ও সংযুক্ত ক্ষমতার বিনিময়ে সম্ভব হয়। সিন ফেইন যখন শাসনে অংশ নিতে পারল এবং বন্দিদের মুক্তি ও রাজনৈতিক প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ ঘটে, তখনই অস্ত্র ছাড়ার পথ তৈরি হয়। এটিই ব্যতিক্রম যে প্রমাণ করে: নিরস্ত্রীকরণ সবসময় সম্ভব্য নয়—তবে যদি রাজনৈতিক স্বীকৃতি, গ্যারান্টি ও অংশগ্রহণ স্পষ্টভাবে নিশ্চিত করা হয়, তবে তা ঘটতে পারে।

হামাসের জন্য তার সামরিক শাখা কেবল অস্ত্রভাণ্ডার নয়—এটি তাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক рыসোর্স, যা তাদের দাবি বিশ্বমঞ্চে জরুরি করে তোলে। নিরস্ত্রীকরণ দাবি করা মানে তাদের ভবিষ্যৎ, রাজনৈতিক সম্ভাবনা ও নিরাপত্তা অনিশ্চিত অবস্থায় ঠেলে দেওয়া। ইতিহাস নির্দেশ করে: রাজনৈতিক স্বীকৃতি ও শক্তিশালী গ্যারান্টি ছাড়া অস্ত্র-সমর্পণ স্থায়ী শান্তির পথ নয়; বরঞ্চ এটি সংকীর্তনের ঝুঁকি বহন করে।

সংক্ষিপ্তভাবে—হামাসকে নিঃশর্তভাবে নিরস্ত্রীক করা দাবিটি শুধুমাত্র নৈতিক বা কূটনৈতিক বক্তৃতায় কার্যকর নয়; ইতিহাস বলছে, এটি বাস্তবে স্থায়ী শান্তির প্রতিশ্রুতি বলতে পারে না যদি না একই সাথে নিরাপত্তা, রাজনৈতিক অন্তর্ভুক্তি ও কার্যকর গ্যারান্টি প্রস্তাব করা হয়। গ্রানাডা-র শিক্ষা, ভিয়েতনাম-এর সিদ্ধান্ত এবং আইআরএ-র ব্যতিক্রম—সবকিছুই ইঙ্গিত করে যে অস্ত্র এবং রাজনীতি আলাদা কীভাবে নয়; নিরস্ত্রীকরণ সফল হতে হলে তা রাজনৈতিক বিনিময়, স্বীকৃতি ও দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তার সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে হবে।

সূত্র : মডার্ন ডিপ্লোমেসি

আরও খবর

🔝