
বিদ্রোহে, প্রেমে, শ্রেষ্ঠতম অগ্নিপুরুষ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বাঙালির মানসপটে উজ্জ্বলতম নক্ষত্র। বৃহস্পতিবার ১১ জ্যৈষ্ঠ ছিল জাতীয় কবির ১২৪তম জয়ন্তী। সারাদেশের মতো যশোরেও বিনম্র শ্রদ্ধায় উদযাপিত হয়েছে দিনটি। এ উপলক্ষে আলোচনার পাশাপাশি, নৃত্য কাব্য সংগীতের সমন্বয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে উদীচী, পুনশ্চ, অগ্নিবীণা কেন্দ্রীয় সংসদ ও শিল্পকলা একাডেমি। বিশেষ অনুষ্ঠান উদযাপিত হয়েছে সরকারি এমএম কলেজ, এমএসটিপি স্কুল এন্ড কলেজ এবং উপশহর কলেজে।
যশোর শিল্পকলা একাডেমি
শিল্পকলার আয়োজন ছিল সংগীত, নৃত্য, আবৃত্তি ও আলোচনার সমন্বয়ে। আলোচনা পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগ যশোরের উপপরিচালক রফিকুল হাসান ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাসুদুল আলম। শিল্পকলার সহসভাপতি ফারাজী আহম্মদ সাঈদ বুলবুলের সভাপতিত্বে এ সময় আরও বক্তৃতা করেন সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহমুদ হাসান বুলু।
পুনশ্চ

সংগঠন কার্যালয়ে বিকেল সাড়ে ৫ টায় সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে পুনশ্চ। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ঘটনাবহুল কর্মময় জীবন এবং তার সাহিত্যের গতি প্রকৃতি নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা শেষে নজরুলের বিভিন্ন আঙ্গিকের গান ও আবৃত্তি পরিবেশন করে সংগঠনের নির্বাচিত শিল্পীরা। অভিজিৎ পালের সঞ্চালনায় একক নজরুল সংগীত পরিবেশন করে সায়ান্তনী দেবনাথ, প্রিয়ন্তি ভট্টাচার্য, তাথৈ সাহা, দেবলীনা দাস, সুচিত্রা দাস পিংকী, রুবাইয়া আনজুম দ্যূতি। আবৃত্তি করেন স্বপ্নীল বিশ্বাস অর্ক। আয়োজনের শুরুতে কবির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়।
উদীচী
নিজেদের কার্যালয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে উদীচী। নৃত্য, গীতি আর কবিতার সমন্বয়ে সাজানো অনুষ্ঠান থেকে মুগ্ধতার স্বাদ নিয়ে ফেরেন নজরুল প্রেমী দর্শকরা। সমবেত সুরে শুরু হয় উদীচীর অনুষ্ঠান। সংগঠনের ছোট বড় সকলের অংশগ্রহণে সাজানো হয় অনুষ্ঠানমালা।
এমএম কলেজ

সরকারি এমএম কলেজে নজরুল জয়ন্তী উপলক্ষে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মর্জিনা আক্তার এতে প্রধান অতিথি ছিলেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ডক্টর আবু বক্কর সিদ্দিকী ও শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক প্রফেসর এসএম শফিকুল ইসলাম। সভাপতিত্ব করেন নজরুল জয়ন্তী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক বাংলা বিভাগের অধ্যাপক আখতার হোসেন। কলেজের বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
জিলা স্কুল
জিলা স্কুলে সকালে আলোচনা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাহফুজুল হোসেন। সভাপতিত্ব করেন জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক শোয়াইব হোসেন। বক্তৃতা করেন সহকারী প্রধান শিক্ষক শফিয়ার রহমান, সিনিয়র শিক্ষক নজরুল ইসলাম, জামাল উদ্দিন ও উত্তম কুমার মন্ডল। দোয়া পরিচালনা করেন সহকারী প্রধান শিক্ষক মহিউদ্দিন।
এমএসটিপি স্কুল এন্ড কলেজ
এমএসটিপি স্কুল এন্ড কলেজে সকালে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় সাজানো জয়ন্তী অনুষ্ঠান উপভোগ করেন প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ খায়রুল আনাম, সহকারী প্রধান শিক্ষক ফারজানা করিম, সহকারী শিক্ষক মিজানুর রহমান, আব্দুল বারিক প্রমুখ।

উপশহর কলেজ
“গাহি সাম্যের গান-মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহিয়ান।’ এ স্লোগানে উপশহর কলেজে জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষে আয়োজনের মধ্যে ছিল কবির প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, আলোচনা, কবিতা পাঠ ও গান। বাংলা বিভাগের আয়োজনে শিক্ষক মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন কলেজের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট রবিউল আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন কবি ও কলামিস্ট মাহমুদা রিনি। বাংলা বিভাগের প্রধান নার্গিস খন্দকারের সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তৃতা করেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পরিতোষ বিশ্বাস। আলোচনায় অংশ নেন গভর্নিং বডির সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক, কবি কাসেদুজ্জামান সেলিম, গাজী শহিদুল ইসলাম, শিক্ষক প্রতিনিধি মোশাররফ হোসেন, সহকারী অধ্যাপক মঞ্জুয়ারা বেগম প্রমুখ। এর আগে কবির নানা সৃষ্টিকর্ম নিয়ে প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।