শিরোনাম |
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার পর চার ঈদ কারাগারে উদযাপন করেছেন। এরপর এক ঈদে ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং আরেকটি এভারকেয়ার হাসপাতালে। বাকি ঈদগুলো তিনি তার গুলশানের বাসভবন ফিরোজাতেই উদযাপন করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে গুলশানের বাসা ফিরোজাতেই ঈদ উদযাপন করছেন তিনি। আজ সকালে ছোট ভাইসহ কয়েকজন নিকট আত্মীয়দের নিয়ে ঈদের সময় কাটাচ্ছেন বলে জানা গেছে। রাতে দলের সিনিয়র নেতারা ঈদের সালাম জানাতে আসবেন ফিরোজায়।
বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার জানান, ঈদের দিনে ঢাকায় উনার যেসব নিকট আত্মীয়-স্বজন আছেন উনারা বাসায় দেখা-সাক্ষাৎ করতে আসবেন। উনার এবারকার ঈদটা এ রকমই।
এর আগের কয়েকটি ঈদে লন্ডন থেকে খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শার্মিলা রহমান সিঁথি এবং তার দুই মেয়ে জাহিয়া রহমান ও জাফিয়া রহমান ঢাকায় এসেছিলেন। খালেদা জিয়া তাদের নিয়ে ঈদ উদযাপন করেছেন। এবার তাদের কেউ আসেননি।
তার বড় বোন প্রয়াত খুরশীদ জাহান হকের যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জাপানে প্রবাসী তিন ছেলে এবং আরেক বোনের ছেলের মেয়ের ঢাকায় এসে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে চলে গেছেন এই রোজার মধ্যেই।
জানা গেছে, ঢাকায় আছেন খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার ও স্ত্রী কানিজ ফাতেমা, ছেলে অভিক এস্কান্দারসহ কয়েকজন নিকট আত্মীয়। দুপুরে তাদের বাসা থেকে রান্না করা খাবার খাবেন খালেদা জিয়া।
দিদার জানান, ঈদের দিন রাত ৮টার দিকে দলের মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা ম্যাডামকে ঈদের সালাম জানাতে আসবেন।
৭৯ বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, ফুসফুস জটিলতা, ডায়াবেটিক, আর্থ্রাইটিস, হৃদরোগসহ বিভিন্ন রোগে ভোগছেন। হঠাৎ হঠাৎ শারীরিক অবস্থার অবণতি হলে কয়েক বার এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে নিয়ে চিকিৎসা দিতে হয়েছে।
সর্বশেষ গত ৩০ মার্চ গভীর রাতে গুলশানের বাসায় হঠাৎ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েলে বিএনপি চেয়ারপারসনকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিন দিন ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফেরেন ২ এপ্রিল।
তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ চিকিতৎসকদের নিয়ে গঠিত একটি মেডিকেল বোর্ড সার্বক্ষণিক বেগম জিয়ার চিকিৎসার দেখভাল করছেন।
২০১৮ সালে কারাবন্দি হওয়ার পর ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোড়ের পরিত্যক্ত পুরানো কেন্দ্রীয় কারাগারে দুটি ঈদ পার করেন খালেদা জিয়া। এরপর ২০১৯ সালের বন্দি অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুটি ঈদ উদযাপন করতে হয় তাকে।
২০২০ সালের ২৫ মার্চ সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে সরকারের নির্বাহী আদেশে তাকে মুক্তি দেওয়া পর রাধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১টি ঈদ এবং গুলশানের ফিরোজায় ৭টি কাটিয়েছেন বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়া। এবার ঈদুল ফিতর ঈদও গুলশানের বাসায় কাটাবেন খালেদা জিয়া।
২০১৮ সালে খালেদা জিয়াকে বন্দি করা হয়। এর পর থেকে বন্দি অবস্থায় তাকে ঈদ পালন করতে হচ্ছে। এর আগে প্রতি বছর খালেদা জিয়া রাজনীতিবিদ, দেশের সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বিদেশি কূটনীতিকসহ সর্বসাধারণের সঙ্গে যে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করতেন। তবে তিনি কারান্তরীণ থাকায় বিএনপির পক্ষ থেকে এই ধরনের কোনো অনুষ্ঠান করা হচ্ছে না।