gramerkagoj
শনিবার ● ২০ এপ্রিল ২০২৪ ৭ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
২৫ হাজার কার্ডধারীর হদিস নেই

❒ যশোরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে ভূতের সন্ধান!

প্রকাশ : সোমবার, ৫ সেপ্টেম্বর , ২০২২, ১২:৩৩:১৭ এ এম
এম. আইউব:
1662316581.jpg
যশোরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে ভূতের সন্ধান মিলেছে! হালনাগাদ তালিকায় আনুমানিক ২৫ হাজার কার্ডধারী সুবিধাভোগী বাদ পড়ছে। দীর্ঘ পাঁচ বছর চাল পাওয়ার পর কীভাবে তারা বাদ পড়ছেন সেই বিষয়ে কিছুই জানেন না তারা। অনলাইনে তালিকা যাচাই করতে গিয়ে এসব ভূতের সন্ধান পাওয়া গেছে।যশোরের আট উপজেলার ৯৩ টি ইউনিয়নে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে সুবিধাভোগী রয়েছেন ১ লাখ ৩৫ হাজার ১৩২ জন। এরমধ্যে সদর উপজেলার ১৫ ইউনিয়নে ১৮ হাজার ২৯০, বাঘারপাড়ার নয়টি ইউনিয়নে    ৯ হাজার ১৬৬, অভয়নগরের আটটি ইউনিয়নে ১৬ হাজার ৪৮৪, মণিরামপুরের    ১৭ টি ইউনিয়নে ২৩ হাজার ৪১৯, কেশবপুরের ১১ টি ইউনিয়নে ১২ হাজার ৯৮৪, ঝিকরগাছার ১১টি ইউনিয়নে ২২ হাজার ১৭৫, চৌগাছার ১১ টি ইউনিয়নে ১৪ হাজার ৯৯৭ ও শার্শার ১১ টি ইউনিয়নের ১৭ হাজার ৬১৭ জন রয়েছেন। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নিত্যানন্দ কুন্ডু জানান, বর্তমানে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের তালিকা ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার থেকে যাচাই করা হচ্ছে। অনলাইন তালিকার সাথে সুবিধাভোগীর কার্ড, তার এবং স্ত্রীর জাতীয় পরিচয়পত্র ও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এই যাচাইয়ের কাজ চলছে। গত ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সদর উপজেলায় ১৪ হাজার ২৭৪, বাঘারপাড়ায় ৭ হাজার ৮৩৩, অভয়নগরে ১৪ হাজার ২০৫, মণিরামপুরে ১৫ হাজার ১১১, কেশবপুরে ১০ হাজার ৮২৫, ঝিকরগাছায় ১৭ হাজার ৫৫৪, চৌগাছায় ১১ হাজার ৮৩৭ ও শার্শায় ১৪ হাজার ১৬ জনের কার্ড যাচাই সম্পন্ন হয়। যদিও ৩১ আগস্টের মধ্যে সকল কার্ড যাচাইয়ের নির্দেশনা ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে সময়সীমা তুলে দেয়া হয়েছে। অব্যাহত রয়েছে যাচাই কার্যক্রম। বিভিন্ন ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, অনলাইনে আপলোড করা তালিকায় ২০১৬ সাল থেকে চাল পাওয়া অনেকের নাম নেই। যেটি ভৌতিক কারবারের মতো বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সূত্র বলছে, এক লাখ ৩৫ হাজার সুবিধাভোগীর মধ্যে ২৫ হাজারের মতো হদিস মিলবে না। এরমধ্যে সাত হাজারের মতো রয়েছে নামের অমিল। এর বাইরে সবমিলিয়ে শ’ খানেক সুবিধাভোগী মারা গেছেন। বাকিরা কখনো তাদের কার্ড যাচাই করতে আসবেন না। যারা একেবারেই আসবেন না সেগুলো ‘ভুয়া’ বলে মনে করছেন যাচাইকারীরা। খাদ্য কর্মকর্তাদেরও একই ধরনের অভিমত। তারা বলছেন, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে যখন তালিকা করে পাঠানো হয় তখনই দু’নম্বরি করা হয়েছে। এ কারণে ওইসব সুবিধাভোগীর যাচাই কার্যক্রমে আসার আর সুযোগ নেই। বর্তমানে অনলাইনে যে তালিকা যাচাই করা হচ্ছে সেখানেও ঘাপলা পাওয়া যাচ্ছে। ২০১৬ সালে করা তালিকায় সুবিধাভোগীদের নামের বিপরীতে যে পাশ বই ইস্যু করা হয় সেই বই এখন অন্যের নামে! আরবপুর ইউনিয়নে এ ধরনের বেশকিছু ঘটনা ধরা পড়েছে। এই ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের একজন সুবিধাভোগীর নাম সাহেব আলী। তার পাশ বই নম্বর ছিল ৬০৩। তিনি টানা পাঁচ বছর খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল তোলেন। কিন্তু বর্তমান অনলাইন তালিকায় ৬০৩ নম্বরে বিল্লাল নামে একব্যক্তির নাম দেখাচ্ছে। ফলে, সুবিধা পাওয়া থেকে বাদ পড়েছেন সাহেব আলী। একই ওয়ার্ডের ৫০৯ নম্বর পাশ বই ছিল রমজান সরদারের নামে। সেই বই এখন আঞ্জুয়ারা বেগমের। রুস্তম আলী সরদারের নামে ছিল ৪৪৩ নম্বর পাশ বই। হালনাগাদ তালিকায় রুস্তম আলীর জায়গায় নাম এসেছে আসমা আক্তারের। ৯০১ নম্বর পাশ বই ছিল রঘুরামপুরের রাবেয়া বেগমের নামে। তা এখন সুজলপুরের বিল্লাল দখল করেছেন। এমন অবস্থা প্রতিটি ইউনিয়নে। একজনের নামের জায়গায় আরেকজনের নাম কীভাবে হলো-এমন প্রশ্ন করা হয় জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নিত্যানন্দ কুন্ডুকে। তিনি বলেন, হালনাগাদ তালিকায় চেয়ারম্যান-মেম্বাররা কিছু নাম বাদ দিয়ে নতুন করে তালিকা করেছেন। যে কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। খাদ্য নিয়ন্ত্রক বলেন, ইতিমধ্যে দু’টি ইউনিয়ন থেকে অভিযোগ এসেছে। সেখানে না কি দুঃস্থদের বাদ দিয়ে সচ্ছলদের তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

আরও খবর

🔝