gramerkagoj
মঙ্গলবার ● ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ১০ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
কম দামের চাল পেয়ে তৃপ্তির হাসি নিম্ন আয়ের মানুষের

❒ এক বস্তায় সাশ্রয় হয়েছে ১০৫০ টাকা

প্রকাশ : শুক্রবার, ২ সেপ্টেম্বর , ২০২২, ১২:৩৮:০০ এ এম
এম. আইউব:
1662057528.jpg
সিরাজ উদ্দিন। বয়স ৬০-এর উপর। বসবাস শহরের খড়কি এলাকায়। বৃহস্পতিবার সকাল ৬ টার পরপরই ধর্মতলায় আসেন ৩০ টাকা দরের চাল কিনতে। ওএমএস ডিলার রোকন ব্যাপারির দোকানের সামনে লাইনে দাঁড়ান। দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টা অপেক্ষার পর পান পাঁচ কেজি চাল। তারপরও ক্লান্তি নেই। চাল পাওয়ার পর মুখে তৃপ্তির হাসি। তিনি যেন রাজ্য জয় করেন! বৃদ্ধ সিরাজ উদ্দিনের কাছে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে চাল নেওয়ার কারণ জানতে চাওয়া হয়। জবাবে তিনি বলেন, ‘দোকানে ৫০ টাকার নীচে কোনো চাল নেই। এখান থেকে পাঁচ কেজি চাল কিনতে পারলে ১০০ টাকা বাঁচবে। আর ১০০ টাকা বাঁচা মানে কমপক্ষে একদিনের কাঁচা বাজার হয়ে যাবে। দিনমজুরদের জন্য এটি অনেক বেশি।’এখানে চাল কিনতে আসেন সাবিনা নামে এক নারী। তিনি বলেন, ৩০ টাকা দরে চাল কিনতে পারলে অনেক সাশ্রয় হয়। এ কারণে তিনি এসেছেন। সরফরাজ নামে এক বৃদ্ধ আসেন খয়েরতলা থেকে। তারও একই কথা। বৃহস্পতিবার যশোর পৌরসভার ১৪ টি স্থানে ২২ মেট্রিকটন চাল বিক্রি করা হয়েছে ৩০ টাকা দরে। একইভাবে মণিরামপুর, কেশবপুর, নওয়াপাড়া, বেনাপোল, ঝিকরগাছা, বাঘারপাড়া ও চৌগাছা পৌরসভার ২৬ টি স্থানে ৫০ মেট্রিকটন এবং শার্শা উপজেলার দু’টি স্থানে চার মেট্রিকটন চাল বিক্রি করা হয়েছে। টিসিবির কার্ডধারীরাও এদিন চাল কেনার সুযোগ পেয়েছেন। পৌরসভার বাইরে ইউনিয়ন পর্যায়ে বিক্রি করা হয়েছে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির চাল। জেলার ৯৩ টি ইউনিয়নে একজন করে ডিলার এদিন চাল বিক্রি করেছেন। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল কিনতে ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক হালনাগাদ কার্ড থাকতে হচ্ছে। একইসাথে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার কর্তৃক ওই কার্ড যাচাইকৃত হতে হবে। এই কর্মসূচির আওতায় একজন ১৫ টাকা দরে মাসে একবার সর্বোচ্চ ৩০ কেজি চাল কিনতে পারবেন। এদিকে, বৃহস্পতিবার খাদ্যবান্ধব ও ওএমএস কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান সদর উপজেলার নওয়াপাড়া ইউনিয়নে এবং শহরের মুজিব সড়কে ওএমএস কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। নওয়াপাড়া ইউনিয়নে দেড় হাজার কার্ডধারী এ সুযোগ পাচ্ছেন। উদ্বোধনকালে জেলা প্রশাসক বলেন, নিম্ন আয়ের মানুষের কথা চিন্তা করে সরকার সারাদেশে এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। একইসাথে কার্ডের মাধ্যমে যশোরে এক লাখেরও বেশি মানুষের মধ্যে টিসিবির পণ্য বিতরণ করা হচ্ছে। এসব কর্মসূচির মাধ্যমে নিম্ন আয়ের মানুষকে মূল্যসহায়তা দেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। এদিকে, বাজারদরের চেয়ে কয়েকগুণ কম টাকায় এক বস্তা চাল কিনতে পেরে খুশি কার্ডধারীরা। ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর তুহিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের গবেষণা পরিচালক মাহবুবুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল হাসান, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপ দাশ, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা রিজিবুল ইসলাম ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নিত্যনন্দ কুন্ডু। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইউপি সদস্য তৈয়েবুর রহমান, টিপু সুলতান, তাসলিমা ইসলাম ডলি, এজাজুল ইসলাম, মাসুম রেজা, মাসুম খান, উদ্যোক্তা সেলিম রেজা প্রমুখ।খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় একজন কার্ডধারী ৩০ কেজি চাল পেয়ে সাশ্রয় করেছেন এক হাজার ৫০ টাকা। যা একটি দরিদ্র পরিবারের জন্য অনেক কিছু। শহরের মুজিব সড়কে ওএমএস কার্যক্রমের উদ্বোধনের সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল হাসান, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নিত্যান্দ কুন্ডু, কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক সৌমিত্র সরকার, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের গবেষণা পরিচালক মাহবুবুর রহমান, পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম আবু নওশাদ, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, পৌরসভার প্যানেল মেয়র মোকসিমুল বারী অপু ডিলার লাইজুজামান প্রমুখ।এদিকে, সরকার নির্ধারিত চাল বিক্রি কার্যক্রম পরিদর্শন করেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নিত্যানন্দ কুন্ডু। তিনি বৃহস্পতিবার শহরের বাইরে মণিরামপুর ও কেশবপুরের বিভিন্ন ডিলার পয়েন্ট পরিদর্শন করেন।   

আরও খবর

🔝