gramerkagoj
শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ১৫ চৈত্র ১৪৩০
gramerkagoj
২৬০ টাকার টিকিট বিক্রি হচ্ছে ১৫শ’ টাকায়!

❒ রাজশাহী যেতে ট্রেনে যেতে প্রাণপন চেষ্টা যাত্রীদের

প্রকাশ : শুক্রবার, ২২ জুলাই , ২০২২, ১২:২০:১৩ এ এম
শিমুল ভুইয়া:
1658427741.jpg
যশোর থেকে রাজশাহীগামী ট্রেনের টিকিট এখন সোনার হরিণ। ২০ মিনিটেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে সব টিকিট। অনলাইনেও কোনো টিকিটি পাওয়া যাচ্ছেনা। কাউন্টারে এবং অনলাইনে টিকিট না পাওয়া না গেলেও পাওয়া যাচ্ছে কালোবাজারে।  ২শ’৬০ টাকার শোভন চেয়ারের টিকিট এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫শ’ টাকায়। এছাড়া ৪শ’ ৯৫ টাকার এসি টিকিট বিক্রি হচ্ছে  দু’ হাজারেরও বেশি।  অভিযোগ রয়েছে, এ দামে টিকিট বিক্রি হচ্ছে রেলস্টেশন চত্বরেই। অভিযোগ রয়েছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাকে পুঁজি করে একটি চক্র টিকিট ব্যবসায় মেতে উঠেছে। যার নেপথ্যে রয়েছে রেলওয়ের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারী। যদিও এ বিষয়ে রেল কর্তৃপক্ষ কিছুই জানে না বলে জানিয়েছে। এদিকে, দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও  টিকিট না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন যাত্রীরা।  আগামী ২৫, ২৬ ও ২৭ জুলাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে যশোরসহ আশপাশের এলাকার কয়েক হাজার শিক্ষার্থী রাজশাহী যাওয়া শুরু করেছেন। এ কারণে রাজশাহীগামী ট্রেনের টিকিটের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যশোর রেলস্টেশনে ২৫ জুলাইয়ের টিকিট ছাড়ে ২১ জুলাই সকাল আটটায়। এই টিকিট সংগ্রহ করতে বুধবার রাত থেকে শুরু হয় সিরিয়াল। অনেকেই সারারাত সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে থাকেন। অধিকাংশ মানুষই টিকিট না পেয়ে হতাশা ব্যক্ত করেন। যাত্রীদের না দিয়ে স্থানীয়দের একটি সিন্ডিকেটের কাছে টিকিট দিয়ে দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ কারো কারো। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সকাল নয়টার পর থেকে স্টেশন চত্বরেই কালোবাজারে টিকিট বিক্রি শুরু হয়। সময় যত বাড়তে থাকে টিকিটের দামও তত বাড়তে থাকে। রিমন খান নামে একজন সাংবাদিক জানান, তার মেয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার জন্য রাজশাহীতে যাবে। সাথে তার পাঁচজন বান্ধবীও থাকবে। তিনি বৃহস্পতিবার  টিকিট কিনতে গিয়েছিলেন। কাউন্টারে টিকিট পাননি। কিন্তু একটি মাধ্যমে তিনি টিকিট পান। যা ১৫শ’ টাকা করে কেনেন। নিরালাপট্টি এলাকার এক নারীও একই অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, তার কাছ থেকে একটি এসি টিকিটের দাম ২২শ’ টাকা চাওয়া হয়েছে। যার প্রকৃত দাম ৪শ’ ৯৫ টাকা। তিনি ওই টাকা দিয়ে টিকিট না কিনে বাড়ি ফিরে যান। এমন অভিযোগ করেন আরও ১৫-২০জন। তারা এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশও করেন। অভিযোগ রয়েছে, রেলস্টেশনের পাশেই কয়েকটি দোকানে কালোবাজারে টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। স্টেশনের ২নং গেটের মুখেই ভাই ভাই কম্পিউটার এন্ড কনফেকশনারির রাব্বী চড়া দামে টিকিট বিক্রি করছেন। এছাড়া, পাশেই রাজ ভ্যারাইটিস স্টোরের রায়হান ও স্টেশন মোড়ের কথা কাব্য টেলিকমে চড়া দামেই টিকিট বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সরেজমিনে বৃহস্পতিবার রাতে ওই তিন দোকানে গিয়ে টিকিট বিক্রির প্রমাণ পাওয়া যায়। যদিও তারা দাবি করেন, অনলাইনে তারা টিকিট কিনে সামান্য কিছু খরচ নিয়ে যাত্রীদের কাছে বিক্রি করেন। অভিযোগ উঠেছে, স্টেশনের প্ল্যাটফরমে অবস্থিত চায়ের দোকান,   ফ্লেক্সিলোডের দোকানে প্রতিনিয়ত অবস্থান করছেন ব্লাকাররা। যখন ক্রেতারা টিকিট না পেয়ে ফিরে যেতে যান,ঠিক তখন তারা তাদের সাথে কথা বলেন। সুযোগ বুঝে যে যার মতো দাম নিয়ে ওই টিকিট বিক্রি করেন। স্থানীয়দের কেউ কেউ অভিযোগ করেন, প্ল্যাটফরমে থাকা দোকানের কয়েক মালিক এ কারসাজির সাথে জড়িত রয়েছে। শরিফুল নামে এক টিকিট ক্রেতা জানান, যশোর থেকে রাজশাহী রুটে ভালো কোনো বাস নেই। এ কারণে ট্রেনের ওপর চাপ বেশি। কিন্তু টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি বলেন,  আমের জন্য স্পেশাল ট্রেন হয়, গরুর জন্য হয়। এ অঞ্চলের  হাজার হাজার শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেবে। তাদের জন্য পৃথক স্পেশাল ট্রেন কেন চালু করা হবে না-প্রশ্ন করেন তিনি। এ বিষয়ে যশোর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আয়নাল হাসান জানান, খুলনা-রাজশাহী রুটে প্রতিদিন সকাল ৭টা ২৮ মিনিটে কপোতাক্ষ ও বিকেলে ৫টা ২২ মিনিটে সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস চলাচল করে। এ দু’টি ট্রেনে যশোরের জন্য সিট বরাদ্দ রয়েছে মাত্র ৮২টি। অথচ চাহিদা রয়েছে পাঁচগুণ। অগ্রিম টিকিট পাঁচদিন আগে বিক্রি করলে ২৫-৩০ মিনিটের মধ্যে শেষ হয়ে যায়। নিয়ম রয়েছে একেকজন চারটি করে টিকিট কিনতে পারবেন। টিকিট কিনে  কেউ যদি বাইরে বিক্রি করে সে বিষয়ে তাদের কিছুই করার থাকে না। তিনি আরও বলেন, অনলাইনেও রাজশাহী যাওয়ার জন্য ৮২টি টিকিট বরাদ্দ রয়েছে। যাতে তাদের কোনো হাত নেই। স্টেশন চত্বরে কালোবাজারে টিকিট বিক্রি হচ্ছেনা বলে দাবি করেন মি.আয়নাল।

আরও খবর

🔝