gramerkagoj
বৃহস্পতিবার ● ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ১২ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
৫ দিনের অক্লান্ত পরিশ্রমে খোলপেটুয়ায় রিংবাঁধ তৈরি, স্বস্তিতে এলাকাবাসী
প্রকাশ : বুধবার, ২০ জুলাই , ২০২২, ০৮:৫২:০৬ পিএম
আকবর কবীর:
1658328750.jpg
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের দুর্গাবাটি এলাকায় খোলপেটুয়া নদীর ভেঙে যাওয়া উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধের পাশের রিংবাধটি আবার তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ টানা পাঁচ দিনের অক্লান্ত পরিশ্রমের পর মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় বাঁধটির কাজ শেষ করেন। এরপর ওই স্থান দিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করা সম্ভব হয়। এতে এলাকার মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।সোমবার সকাল থেকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক ছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদ, হাজার হাজার স্থানীয় মানুষের অংশগ্রহণে বাঁশ দিয়ে পাইলিং করে ও বালির বস্তা ফেলে এই বাঁধের কাজ শুরু করা হয়। এর আগে গত ১৫ জুলাই শুক্রবার রাতে দূর্গাবাটি এলাকায় খোলপেটুয়া নদীর প্রায় একশ’ ৫০ ফুট এলাকাজুড়ে উপকুল রক্ষা বেঁড়িবাধটি ভেঙে যায়।এতে বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের অন্তত ১১টি গ্রাম ও পরবর্তীতে পার্শ্ববর্তী আটুলিয়া ইউনিয়নের চারটি গ্রাম প্লাবিত হয়। ভেসে যায় হাজার হাজার বিঘা মৎস্য ঘের ও ফসলি জমি। পানিবন্দি হয়ে পড়ে প্রায় ২৫ হাজার পরিবার। স্থানীয়রা জানান, এলাকায় পানি প্রবেশ ঠেকাতে সাড়ে তিন হাজার মানুষের অক্লান্ত পরিশ্রমে রিংবাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এবার পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রকল্প দেখিয়ে টাকা তুলে নেবে। প্রতিবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাউকে দেখা যায় না। এই এলাকার মানুষ নিজেদের জানমাল বাঁচাতে বাঁধ নির্মাণ করেন আর পানি উন্নয়ন বোর্ড একাধিক প্রকল্প দেখিয়ে টাকা তুলে নেয়। এলাকায় ঝড় বা জলোচ্ছ্বাস  লাগে না। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে নদীতে পানি একটু বৃদ্ধি পেলেই বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে প্রবেশ করে। ‘টেকসই নির্মাণ ছাড়া আমাদের দুঃখের দিন শেষ হবে না’-বলেন একজন অধিবাসী।বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী নজরুল ইসলাম জানান, ‘ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক এবং ইউনিয়ন পরিষদ, এলাকাবাসী ও শ্রমিকসহ প্রায় চার হাজার উপকূলীয় মানুষের অংশগ্রহণে বেড়িবাঁধ মেরামত কার্যক্রম এখনো চলমান রয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরের দিকে বাঁধটি সম্পূর্ণ মেরামত করা সম্ভব না হলেও কোন রকমে জোয়ারের পানি লোকলয়ে যাতে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য প্রাণপন চেষ্টা করা হয়েছে। দুপুরের জোয়ারে সামান্য কিছু পানি বালির বস্তার ওপর দিয়ে ওভারফ্লো হয়ে প্রবেশ করেছে। তবে রাতের জোয়ারে বাঁধ তৈরি করে ফেলেছি। আল্লাহর রহমতে এখন আর পানি প্রবেশ করছে না’।বুড়িগোয়ালিনী  ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা ভবতোষ মন্ডল জানান, সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় রিং বাঁধটি নির্মাণ করে খোলপেটুয়া নদীর লোনা পানি আটকে দেয়া সম্ভব হয়েছে। তিনি এই এলাকায় স্থায়িত্বশীল টেকসই নদী রক্ষা বাঁধের দাবি জানান। পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রাতের জোয়ারে রিং বাঁধের কাজ শেষ হয়েছে।শ্যামনগর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউল হক দোলন জানান, ‘আল্লাহর অশেষ রহমতে রাত ১০টা ৩০ মিনিটে রিং বাঁধ নির্মাণ শেষ হয়েছে। এলাকায় আর পানি প্রবেশ করছে না’।সাতক্ষীরা-৪ আসনের সংসদ সদস্য এস এম জগলুল হায়দার জানান, জোয়ারের পানির তীব্রতা থাকায় রিং বাঁধটি নির্মাণে একটু দেরি হয়ে গেছে। বাঁধটি নির্মাণে এলাকাবাসী যেভাবে সাড়া দিয়েছে এজন্য তিনি জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীকে ধন্যবাদ জানান।

আরও খবর

🔝