প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকিদাতা শিপন কুমার বসুর সাথে যুবলীগ নেতা মোহাম্মাদ নজরুল ইসলামের সখ্যতায় ক্ষিপ্ত হয়েছেন দলীয় নেতাকর্মীরা। সম্প্রতি ভারতের নিউটাউনে শিপন কুমার বসুর নিজস্ব কার্যালয়ে চিতলমারী উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক নজরুল ইসলামের মদ খাওয়ার একটি ছবি ভাইরাল হলে বিষয়টি সবার নজরে আসে। ওই ছবিতে দেখা যায়, ইজরাইলের পতাকা টাঙানো একটি  কক্ষে শিপন কুমার বসু, চিতলমারী উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক নজরুল ইসলাম, চিতলমারী সদর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ইব্রাহিম মুন্সি ও সাবেক ছাত্রদল নেতা বিধান কিত্তনিয়াসহ বেশ কয়েকজন মদ পান করছেন। এই ছবিটি দিয়ে চিতলমারী উপজেলার শেরে বাংলা ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক ফেসবুকে স্টাটাস দিলে বিষয়টি সবার নজরে আসে। এরপর থেকে একের পর এক নিন্দা প্রস্তাব ও মোহাম্মাদ নজরুল ইসলাম এবং ইব্রাহিম মুন্সিকে দল থেকে বহিস্কারের দাবি জানান দলীয় নেতাকর্মীরা।শেরে বাংলা ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক বলেন, শিপন কুমার বসু একজন দেশদ্রোহী ও স্বাধনীতা বিরোধী। তার সাথে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নজরুল ইসলামের কী প্রয়োজন থাকতে পারে। ভারতে গিয়ে তার সাথে মিটিং করা এবং এক সাথে মদ পান করাটা খুবই হীন কাজ। এটাও ষড়যন্ত্রের অংশ বিশেষ। নজরুলকে যুবলীগ থেকে বহিস্কার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি। সেই সাথে প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দেয়া শিপন কুমার বসুকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের দাবি জানান।চিতলমারী উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক নজরুল ইসলাম অভিযোগ সম্পর্কে বলেন, ‘৪-৫ মাস আগে ভারতে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলাম। তখন আমাকে একটি বাসায় দাওয়াত দিয়েছিল। সেই দাওয়াতে অংশ গ্রহণ করি। সে সময় পূর্বপরিকল্পিতভাবে কৌশলে আমার ছবি তোলে ষড়যন্ত্রকারীরা। এটা আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার অংশ ছাড়া আর কিছুই না। আমি কোন অপচেষ্টার সাথে জড়িত না’।তিনি আরও বলেন, ‘ওই কক্ষে প্রবেশ করে যখন মদ ও শিপনকে দেখেছি তখন আমি দ্রুত বের হয়ে গেছি। কিন্তু এখন আমাকে হয়রানির উদ্দেশ্যে ওই ছবি নিয়ে অপরাজনীতি করা হচ্ছে’।চিতলমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পিযূষ কান্তি রায় বলেন, ‘শিপন যেহেতু প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল, সেহেতু দলীয় নেতাকর্মীরা তার সাথে কোন সম্পর্ক রাখতে পারে না। যুবলীগ নেতা নজরুল ইসলাম আসলেই যদি শিপনের সাথে সখ্যতা করে তাহলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। এছাড়া বিষয়টি যেহেতু যুবলীগের, আশাকরি যুবলীগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে’।ইজরাইয়েলের গুপ্তচর হিসেবে পরিচিত শিপন কুমার বসু ওরফে জ্ঞান কচুয়া উপজেলার সাহসপুর এলাকার কালিপদ বসুর ছেলে। ছোট বেলায় নানাবাড়ি চিতলমারী উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামে বড় হয়েছেন তিনি। তিনি হিন্দু স্ট্রাগল কমিটি বাংলাদেশ নামের একটি সংগঠনের সভাপতি। আনুমানিক বছর ১৫ আগে বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে বসবাস শুরু করেন তিনি। ২০১৭ সালের অক্টোবরের মাঝামাঝি ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা ও  আওয়ামী লীগ সরকারকে পতনের হুমকি দিয়ে আলোচনায় আসেন শিপন কুমার বসু ওরফে জ্ঞান। তখন হত্যার হুমকি নিয়ে দেশের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছিল।