gramerkagoj
শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ১৫ চৈত্র ১৪৩০
gramerkagoj
বটগাছ ঘেরা প্রাচীন মসজিদের সন্ধান
প্রকাশ : মঙ্গলবার, ৭ জুন , ২০২২, ০৩:১৫:৩৯ পিএম
কাগজ ডেস্ক :
1654593379.jpg
৫০ বছর আগেও যেখানে ঝোপঝাড় ছিল। সেখানে এখন দৃশ্যমান বটগাছ ঘেরা প্রাচীন একটি মসজিদ! বগুড়ার কাহালু উপজেলার বোরতা গ্রামে অবস্থিত মসজিদটি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে এসেছেন অনেকেই।রোবরার (৫ জুন) সরেজমিনে দেখা যায়, মসজিদটি রূপান্তরিত হয়েছে বটগাছে। মসজিদটির দৈর্ঘ্য ২৫ ফুটি, প্রস্থ ১৩ ফুট। ৩ গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটিতে বড়জোর ১০ থেকে ১২ জন মুসল্লি নামাজ পড়তে পারতেন। এতে ইমাম দাঁড়ানোর জায়গাটি প্রায় নষ্ট হয়ে গেছে। ৫ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের ও ২ ইঞ্চি প্রস্থের এক ধরনের ইট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে মসজিদটি। স্থানীয়দের কেউ কেউ মন্তব্য করে বলেন, এই স্থাপনাটি ৪৫০ বছর আগের, কেউবা বলেন ১ হাজার বছর আগের, আবার অনেকেই বলেন কত আগের হবে সে তথ্য দেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। বর্তমানে সেখানে নামাজ পড়ার কোনো অবস্থা নেই। তবে এটাকে ঘিরে তৈরি হয়েছে ঈদগাহ মাঠ। মসজিদটির অদূরেই রয়েছে একটি কবর। সেটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১২ থেকে ১৪ ফুট। মসজিদটির দেয়ালে চুন-সুড়কি দিয়ে ছোট ছোট ইট গাঁথা আছে। বটগাছটির শেকড়ে ছেয়ে গেছে পুরো মসজিদ। ভেতরে কিছু রঙিন আলপনা রয়েছে। পুরনো হওয়ায় এখানে নামাজ পড়ার কোনো পরিবেশ নেই। ৮০ বছর বয়সী স্থানীয় আব্দুল হামিদ জানান, ৫০ বছর আগে এখানে ঝোপঝাড় ছিল। ঝোপঝাড়ের আড়ালে বড় বটগাছটিই শুধু দেখা যেতো। তাদেরও মুরুব্বিরা বলতেন এর ভেতরে একটি মসজিদ আছে। পরে এলাকাবাসী ঝোপঝাড় পরিষ্কার করলে দেখা মেলে মসজিদটি। তিনটি মিনারের দুটি ঠিক থাকলেও একটি নষ্ট হয়ে গেছে।তিনি বলেন, এটিকে কেন্দ্র করে এর সামনেই ২৩ শতক (স্থানীয় পরিমাপ) জায়গার ওপর গড়ে উঠেছে ঈদগাহ মাঠ। ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দুটি নামাজে দূর-দূরান্ত থেকে মুসল্লিরা আসেন এখানে। এখনো মসজিদের পূর্ব ও উত্তর দিকের শতাধিক গজ পর্যন্ত যে কোনো স্থান খুঁড়লেই বেরিয়ে আসে পুরনো মাটির পাতিল, চুলা, কলস ও সে সময়কার পানি রাখার বড় পাত্রসহ নানা ধরনের প্রত্নসামগ্রী। স্থানীয়দের মতে, মসজিদের পাশেই যে বড় একটি পুকুর রয়েছে তাতে অনেক মাছ দেখা গেলেও পানি নিষ্কাশনের পর কোনো মাছ পাওয়া যায় না। সেখানকার গাছের ডাল কিংবা ইট-পাথর যাই হোক কোনো কিছুই কেউ নিয়ে যেতে পারে না। আবার সন্ধ্যার পর এখানে কেউ আসে না।শহরের ঠনঠনিয়া এলাকা থেকে প্রাচীন স্থাপনাটি দেখতে আসা শাহাদত হোসেন জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি এই মসজিদের বিষয়ে জানতে পারেন। পুরনো এই মসজিদটি নিজের চোখে দেখার জন্য তিনি এখানে এসেছেন।তিনি বলেন, ঐতিহ্য ধরে রাখতে সরকারিভাবে মসজিদটি সংস্কার করা দরকার। এছাড়া মসজিদ থেকে মূল রাস্তা পর্যন্ত কাঁচা রাস্তা রয়েছে সেটি পাকা করে পর্যটকদের যাতায়াতের সুবিধা করে দেওয়া দরকার। এতে করে দর্শনার্থীরা সহজেই এখানে আসতে পারবে। কাহালু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদুর রহমান জানান, স্থাপনাটির বিষয়ে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন। এটি সংরক্ষণের পর্যায়ে থাকলে অবশ্যই সংরক্ষণ করা হবে।বগুড়া প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক নাহিদ সুলতানা জানান, প্রাচীন ওই স্থাপনাটি সরেজমিনে পরিদর্শন করা হয়েছে। রোরতা গ্রামের ওই স্থাপনাটি গাছ এমনভাবে ঘিরে ফেলেছে যা কোনোভাবেই সংরক্ষণ করার মতো অবস্থায় নেই। 

আরও খবর

🔝