শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগের দাবিতে দেশটিতে আন্দোলন চললেও তিনি এখন পর্যন্ত ক্ষমতা ছাড়েননি। কিন্তু কেন তিনি ক্ষমতা চাড়ছেন না? এবার সেটি পরিষ্কার করেছেন তিনি। এর কারণ হলো- তিনি ব্যর্থ প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা ছাড়তে চান না।সোমবার (৬ জুন) শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন। শ্রীলঙ্কায় সংকট তৈরি হওয়ার পর এ প্রথম তিনি গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছেন। খবর: এনডিটিভিগোতাবায়া বলেন, আমি একজন ব্যর্থ প্রেসিডেন্ট হিসেবে চলে যেতে পারি না। তবে আমি আর ভবিষ্যতে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবো না।গোতাবায়া রাজাপাকসে আরও বলেন, আমি পাঁচ বছরের ম্যান্ডেট পেয়েছি।   তার মানে আরও দু’বছর ক্ষমতায় থাকছেন তিনি।২০২২ সালের মার্চ মাস থেকে অর্থনৈতিক সংকটের জেরে শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটে। প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগের দাবিতে সরব হয় গোটা দেশ। ভোগ্যপণ্যের আকাশচুম্বী দাম, জ্বালানির অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ বিভ্রাট, ওষুধের তীব্র সংকট এসবের জন্য প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া ও তার ভাই সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসেকে দায়ী করে আসছেন আন্দোলনকারীরা। স্বাধীনতার পর এত বেশি অর্থ সংকটে আর পড়েনি দেশটি।তার বিরুদ্ধে ‘গোতা গো হোম’ এ স্লোগানে আন্দোলন চলতে থাকে কয়েক মাস ধরে। আন্দোলনের মুখে অবশেষে গত মাসে বাধ্য হয়ে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান তার ভাই ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে। তবে বহাল তবিয়তে থাকেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া। পরে তিনি প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ দেন রনিল বিক্রমাসিংহেকে।গোতাবায়া রাজাপাকসে (প্রেসিডেন্ট) ও তার নতুন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে এ বছর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এবং ভারত ও চীনসহ বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তার আশা করছেন।গোতাবায়া রাজাপাকসে জানান, তিনি জাতির সেবায় তার আগের সফল কর্মকাণ্ডের প্রতিলিপি দেখতে চান। তিনি এক সময় নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধান করতেন এবং ২০০৯ সালে ৩০ বছরের গৃহযুদ্ধের পর শ্রীলঙ্কার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসের অধীনে প্রতিরক্ষা সচিবও ছিলেন।টেলিমারের একজন অর্থনীতিবিদ প্যাট্রিক কুরান বলেন, এতেও আন্দোলনকারীদের শান্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই যারা তার অবিলম্বে পদত্যাগের আহ্বান জানাচ্ছেন।প্যাট্রিক কুরান আরও বলেন, দু’বছরেরও বেশি সময় পর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সঙ্গে, রাজাপাকসের মেয়াদ শেষ করার সিদ্ধান্ত আগামী কয়েক বছরে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করবে।