gramerkagoj
শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ১৫ চৈত্র ১৪৩০
gramerkagoj
ডি কে নাথের প্রতারণার শিকার শ’শ’ মানুষ

❒ থ্যালাসেমিয়া ভালো করার কথা বলে হাতিয়েছেন ২৫ হাজার টাকা

প্রকাশ : রবিবার, ৫ জুন , ২০২২, ০১:৩৬:৩৩ এ এম
কাগজ সংবাদ : :
1654371423.jpg
দৈনিক গ্রামের কাগজে প্রকাশিত ‘কথিত ডাক্তার ডি কে নাথের প্রতারণার দোকান’ শীর্ষক সংবাদ প্রকাশের পর তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন ভুক্তভোগীরা। শনিবার বেলা ১২ টার দিকে প্রতারণার শিকার ১০-১৫ জন ভুক্তভোগী টাকা ফেরত চেয়ে ডি কে নাথের প্রতিষ্ঠান ঘেরাও করে। এদিকে, সংবাদ প্রকাশের পর গত ১৬ মে স্বাস্থ্য বিভাগ কথিত ডাক্তার ডি কে নাথের ঘোপ জেল রোডের জনসেবা সংসদ সোসাইটিতে অভিযান চালিয়ে বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়। তারপরও তিনি গোপনে তার কারবার চালিয়ে যাচ্ছেন বলে একটি সূত্র দাবি করেছে। অভিযোগ রয়েছে, কথিত ডাক্তার ডি কে নাথ রোগী দেখার আড়ালে তিয়ানশির পণ্য বিক্রি করছেন। তিয়ানশির ‘চাইনিজ স্বাস্থ্য সেবা এন্ড থেরাপি সেন্টার’ নামে কার্ড ছাপিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের সদস্য করার কথা বলে প্রত্যেকের কাছ থেকে পাঁচশ’ টাকা করে হাতিয়ে নিচ্ছেন। যশোর সদর উপজেলার শর্শুনাদাহ গ্রামের আক্তার হোসেন জানান, তার ছেলে সেজান (৭) জন্ম থেকেই থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত। প্রতিমাসে তাকে রক্ত দিতে হয়। স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে তিনি ডি কে নাথের চেম্বারে আসেন। ডি কে নাথ তার ছেলেকে দেখে জানান তিন মাসের মধ্যে রোগ ভালো হয়ে যাবে। এজন্য ২৫ হাজার টাকা খরচ হবে। রোগী তিন মাসে সুস্থ না হলে টাকা ফেরত দেয়া হবে। কিন্তু তার ছেলে সুস্থ হওয়ার পরিবর্তে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ডি কে নাথ তার সাথে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়েছে। পরবর্তীতে টাকা ফেরত চাইতে গেলে তাকে বিভিন্ন হুমকি দিয়ে বের করে দেন। এজন্য গ্রামের অন্যান্য লোকজনকে সাথে নিয়ে তিনি টাকা ফেরত নিতে আসেন। শহরের ঘোপ বউ বাজার এলাকার সুরাইয়া আক্তার ঝুমুর জানান, তিনি ও তার সাথে ইমরান হোসেন প্রথমে ডি কে নাথের ‘বেঙ্গল মেডিকেল সার্ভিসেস’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকুরি নেন। তাকে বাঘারপাড়া উপজেলার অডিটর হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি কোনো ডিলার না দিতে পারায় তার বেতন বন্ধ করে দেয়া হয়। এরপর তিনি নিজেই ৬০ হাজার টাকা দিয়ে বাঘারপাড়ায় বেঙ্গল মেডিকেল সার্ভিসেসের ডিলারশিপ  নেন। ওইসময় চুক্তি হয় তার প্রতিষ্ঠানে ডি কে নাথ রোগী দেখবেন ও তার কাছ থেকে রোগীদের ওষুধ কিনতে বাধ্য করবেন। কিন্তু কিছুদিন পর ডি কে নাথ তাকে জানান এই ব্যবসা বাদ এখন তিয়ানশি করতে হবে। তিনি তিয়ানশি করতে অস্বীকার করেন ও পাওনা টাকা ফেরত চান। তখন ডি কে নাথ তার পাওনা টাকা দিতে অস্বীকার করেন। অথচ তিনি টাকা পাবেন তার লিখিত প্রমাণ রয়েছে। খাজুরা সিলিমপুরের রুপা খাতুন, ঘোপ বেলতলা এলাকার সমর্থ বানু, মুক্ত বেগমসহ একাধিক ভুক্তভোগীর অভিযোগ, ডি কে নাথের কাছ থেকে তারা ১০-১৫ হাজার টাকার ওষুধ কিনে খেয়েছেন। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। উল্টে তারা আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এজন্য তারা সকলে টাকা ফেরতের দাবিতে কথিত ডাক্তারের চেম্বার ঘেরাও করেছেন। এ বিষয়ে ডি কে নাথ জানান, তিনি কোনো রোগীকে ওষুধ বা তিয়ানশির পণ্য দেননি। যারা ভুক্তভোগী তারা সকলেই তিয়ানশি ডিস্ট্রিবিউটর ঝুমুর ও ইমরানের কাছ থেকে পণ্য কিনে খেয়েছেন। পণ্যে যদি কেউ উপকার না পেয়ে থাকেন তার জন্য তিনি দায়ী না। ঝুমুর ও ইমরান তার প্রতিষ্ঠান দখল করতে বিভিন্ন অপপ্রচার করছে। ডেপুটি সিভিল সার্জন নাজমুস সাদিক জানান, ডি কে নাথের প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। যদি কেউ ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করে তাহলে খোঁজ খবর নিয়ে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আরও খবর

🔝