gramerkagoj
শনিবার ● ২০ এপ্রিল ২০২৪ ৭ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
এবার যশোরে ১৬ কেজি সোনা উদ্ধার

❒ সোনার বিনিময়ে ইউএস ডলার নিতে আসে

প্রকাশ : বৃহস্পতিবার, ২ জুন , ২০২২, ১২:১৭:২১ এ এম
শিমুল ভূইয়া:
1654107486.jpg
যশোরে এবার সাড়ে ১৩ কোটি টাকার সোনারবার উদ্ধার করেছে বিজিবি। মাত্র ১২ দিন আগে এই বিজিবিই ১০ কোটি টাকার সোনারবার উদ্ধার করেছিল। সোনারবার উদ্ধারের সময় ছয় পাচারকারীকে আটক করা হয়েছে। সোনা উদ্ধারে বিজিবিকে সহযোগিতা করে জেলা প্রশাসন। বুধবার বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে এসব তথ্য জানান যশোর ৪৯ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্নেল শাহেদ মিনহাজ ছিদ্দিকী। তিনি জানান, মঙ্গলবার রাতে তাদের কাছে খবর আসে ঢাকা থেকে সোনার একটি বড় চালান যশোরের উদ্দেশে আসছে। তাৎক্ষণিক বিষয়টি জেলা প্রশাসককে অবগত করেন তিনি। এরপরই টাক্সফোর্স গঠন করে যশোর-মাগুরা সড়কের বাহাদুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয় বিজিবি। রাত তিনটার সময় পাচারকারীরা তিনটি প্রাইভেটকারে আসে। ওইসময় বিজিবি প্রাইভেটকার তিনটি থামিয়ে তল্লাশি করে। এক পর্যায়ে গাড়ির চাকার পাশে বিশেষভাবে তৈরি বক্স থেকে ১শ’৩৫ পিচ সোনারবার উদ্ধার করা হয়। যার ওজন ১৫ কেজি ৮শ’ গ্রাম।  দাম ১৩ কোটি ৫৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এ সময় তিনটি গাড়িতে থাকা ছয়জনকে আটক করে বিজিবি। আটকরা হলেন, বেনাপোলের দুর্গাপুর গ্রামের আব্দুল জব্বারের ছেলে জাহিদুল ইসলাম, পুটখালী গ্রামের আতিয়ার রহমানের ছেলে নাজমুল হোসেন, চাঁদপুর জেলার ঘাগুড়িয়া গ্রামের রশিদ মিয়াজীর ছেলে আরিফ মিয়াজী, কুমিল্লা জেলার নৈয়ার গ্রামের সিরাজুল ব্যাপারির ছেলে শাহজালাল, মাদারীপুর জেলার বলশা গ্রামের কামাল হোসেনের ছেলে আবু হায়াত জনি ও নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলার মিঝমিঝি গ্রামের মতিউল্লাহ ব্যাপারির ছেলে রবিউল ইসলাম রাব্বি। জিজ্ঞাসাবাদে আটকরা জানান, তারা ওই সোনা ভারতে পাচার করতে যাচ্ছিলেন এবং সোনার বদলে ইউএস ডলার নেয়ার উদ্দেশ্যে যশোর এসেছিলেন। বিজিবির অধিনায়ক জানান, এ সোনা চোরাচালানের মূল হোতা পুটখালীর নাসির ও বেনাপোলের রমজান। তাদেরকে ধরতে বিজিবি অনুসন্ধানে নামে। সেই অনুসন্ধান থেকেই এ সোনা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান তিনি। এসময় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু নাসেরসহ বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, যশোরে ২০২০ সালে বিজিবি ৪১ কেজি ৭শ’ ২২ গ্রাম সোনা জব্দ করে।  যার মূল্য ২৭ কোটি ৯৩ লাখ ৮২ হাজার ৩শ’৪০ টাকা। ২০২১ সালে উদ্ধার হয় ১৩ কেজি ১শ’৪৩ গ্রাম। যার মূল্য ৯ কোটি ৫ লাখ ছয় হাজার টাকা এবং ২০২২ সালের মার্চে উদ্ধার হয় ১ কেজি ১শ’ ৬৫ গ্রাম সোনা। যার মূল্য প্রায় এক কোটি টাকা। গত ২০ মে চৌগাছা থেকে ১৪ কেজি ৪শ’৫০ গ্রাম সোনা উদ্ধার হয়। যার মূল্য ১০ কোটি টাকা। সর্বশেষ, বুধবার  ১৫ কেজি ৮শ’ গ্রাম সোনা উদ্ধার করা হয়। যার দাম ১৩ কোটি ৫৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা। একটি সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ৯ আগস্ট রাতে শার্শার শিকারপুর বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা রাত ১০টার দিকে মহিউদ্দিন নামে একজনকে আটক করেন। মহিউদ্দিনের কাছে থাকা ব্যাগ থেকে ৬শ’২৪ পিচ সোনার বার উদ্ধার করা হয়। যার ওজন ৭২ কেজি সাড়ে ৪শ’ গ্রাম। দাম ৩৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। মামলাটি তদন্ত করে সিআইডি চার্জশিট দেয়। চার্জশিটে মহিউদ্দিনসহ নয়জনের নাম আসে। শার্শার শিকারপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে জাহিদুল ইসলাম, নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে মুুজিবুর রহমান, গোকর্ন গ্রামের মাঝেরপাড়ার আলী হোসেন সরদারের ছেলে মাসুদ রানা, দূর্গাপুর গ্রামের মৃত আবুল মোড়লের ছেলে সফি, আব্দুল মোমিনের ছেলে ইমরান হোসেন, আব্দুল কাদেরের ছেলে রুবেল হোসেন, রামচন্দ্রপুর গ্রামের নওশাদ আলীর ছেলে কবির হোসেন ও ভারতের চব্বিশ পরগনা জেলার বাগদা থানার গাংগুলিয়া গ্রামের নুরজালাল মন্ডল ওরফে মেছের আলীর ছেলে এবং যশোরের শার্শার কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা শফিকুল মন্ডল ওরফে মোল্লা ওরফে লিদু। অভিযোগ রয়েছে, সোনা চোরাচালানের সাথে এই সিন্ডিকেটটি এখনো সক্রিয়। সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে সোনার চালান হাতবদল হয়ে স্থানীয় এজেন্টের হাতে আসে। এরপর এজেন্টরা সেই চালান নিয়ে যায় পুটখালী, গাতিপাড়া, বড়আঁচড়া, রঘুনাথপুর, সাদীপুর, শিকারপুর, দৌলতপুর ও ঘিবা সীমান্তের নির্ধারিত বাড়িতে। যা পৌঁছে দেয়ার নায়ক নাসির ও রমজান। এরপর সেখান থেকে সীমান্ত পার হয়ে ভারতের সবচেয়ে বড় ডিলার অপু, বড় গৌতম, ছোট গৌতম, পিন্টু, বরুণ, ডাকুসহ বিভিন্ন সিন্ডিকেটের হাতে সোনার চালান পৌঁছে দেয়া হয়।

আরও খবর

🔝