gramerkagoj
শনিবার ● ২০ এপ্রিল ২০২৪ ৭ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
যুগপৎ আন্দোলনে গণসংহতি ও বিএনপি একমত: মির্জা ফখরুল
প্রকাশ : মঙ্গলবার, ৩১ মে , ২০২২, ০৭:২৩:০০ পিএম
ঢাকা অফিস:
1654003399.jpg
যুগপৎ আন্দোলনের ব্যাপারে গণসংহতি আন্দোলন ও বিএনপি একমত হয়েছে বলে জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।বিএনপি মহাসচিব বলেন, আলোচনার মধ্যে দিয়ে আমরা অনেকগুলো বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছি।মঙ্গলবার রাজধানী হাতিরপুলে গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।তিনি বলেন, এই আন্দোলনের মধ্যে সবচেয়ে বড় দাবি থাকবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার।গণসংহতি আন্দোলনের সঙ্গে আজকের আলোচনা অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এই আলোচনা অব্যাহত থাকবে। আর এই আন্দোলনের প্রক্রিয়ার মধ্যে প্রধান যে দাবি থাকবে, আমরা আশা করি- অন্যান্য দলগুলোও একমত হবে।যুগপৎ আন্দোলনের ব্যাপারে গণসংহতি আন্দোলন ও বিএনপি একমত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, একটা গণ-অভ্যুত্থান এবং গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে এই ভয়াবহ সরকারকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থে একটা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আমরা একমত হয়েছি।বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা একমত হয়েছি, এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বাতিল করতে হবে, নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করতে হবে এবং তাদের অধীনে যে নির্বাচন কমিশন গঠন হবে, সেই ইসির অধীনে ভোট হবে। আর সেই নির্বাচনের মাধ্যমে ভবিষ্যতে সরকার ও সংসদ গঠন হবে। এ বিষয়ে মৌলিক কোন মতভেদ দেখেনি।তিনি বলেন, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হলে সংবিধানের পরিবর্তন এবং কতগুলো মৌলিক বিষয়ে পরিবর্তন অত্যন্ত জরুরি বলে আমরাও মনে করি। সেগুলো আলোচনার মধ্যে দিয়ে একমতে এসে পৌঁছাতে পারব বলে আমরা বিশ্বাস করি।সংলাপ প্রসঙ্গে জোনায়েদ সাকি বলেন, বিএনপির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আমরা বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছি। বিশেষ করে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের অধীনে যে ফ্যাসিবাদী শাসন চলছে, সে বিষয়সহ সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের বিষয়ে আমরা উভয় দলই উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। এই বাস্তবতায় পর্যবেক্ষণে আমরা অনেক মিল খুঁজে পেয়েছি। আমরা মনে করি, বাংলাদেশে এই বাস্তবতায় অবিলম্বে পরিবর্তন হওয়া দরকার। এই বদল গণতন্ত্র ফেরার মধ্যে দিয়েই সম্ভব হতে পারে।তিনি বলেন, আমরা মনে করি আন্দোলন ছাড়া এই অবস্থা বদলানোর অন্য কোন পথ নেই। আমাদের দলের পক্ষে এ বিষয়ে পরিষ্কার করেই আমরা অবস্থান নিয়েছি। আজকে আলোচনার মধ্যে এ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে যে, একটি সুষ্ঠু নির্বাচনই গণতন্ত্রের গতির মুখে ফেরার প্রথম পদক্ষেপ। কিন্তু বর্তমান সরকারের অধীনে এই নির্বাচন কোনো মতেই সম্ভব নয়। এ বিষয়ে ইতিমধ্যে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটা বড় ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। এটা আগামীদিনের আন্দোলন ও রাজনীতির জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।সাকি জানান, সাংবিধানিক কাঠামোর বদল দরকার। এ জন্য সংবিধান সংশোধনের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। যেমন নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ আলাদা করতে হবে, নিম্ন আদালতকে উচ্চ আদালতের অধীনস্থ করতে হবে, উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগ সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি করাসহ ৭টি প্রস্তাবনা আমরা তুলে ধরেছি।তিনি জানান, গণসংহতি আন্দোলন ৭০ অনুচ্ছেদের সংস্কার, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা, সব সাংবিধানিক পদে সাংবিধানিক কমিশন গঠনের মধ্যে দিয়ে নিয়োগ, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা, রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য, সংসদে নিম্ন কক্ষ ও উচ্চ কক্ষ করতে হবে। প্রদেশ ব্যবস্থা সামনে নিয়ে আসা, সব অগণতান্ত্রিক আইন বাতিল করা এবং প্রত্যেক নাগরিকের সুযোগের সমতার জন্য সাংবিধানিকভাবে আইনি সুরক্ষা প্রস্তাব করেছি। এই বিষয়গুলো নিয়ে বিএনপিও কাজ করছে এবং ভাবছে বলে তারা আমাদের জানিয়েছেন।বর্তমান সরকারের পতনের জন্য আন্দোলন দরকার মন্তব্য করে জোনায়েদ সাকি বলেন, বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে যদি জাতীয় রূপরেখা হাজির হয় তাহলে আমরা বৃহত্তর ঐক্যে গড়ে তুলে বর্তমান সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে পারব। সে জন্য আমরা প্রাথমিকভাবে ঐকমত্য হয়েছি যে, যুগপৎ আন্দোলন যার যার অবস্থা থেকে করব। আর ভবিষ্যতেও এ বিষয়ে আরও আলোচনা হবে। এর মধ্যে দিয়ে একটা রূপরেখা সামনে আসবে।বিএনপির পক্ষে সংলাপে মির্জা ফখরুলের সঙ্গে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সাবেক এমপি জহির উদ্দিন স্বপন উপস্থিত ছিলেন।সংলাপে জোনায়েদ সাকির সঙ্গে গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়ক আবুল হাসান রুবেল, রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য তাসলিমা আখতার, হাসান মারুফ রুমি, সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য ইমরান জুলকার নাঈম, বাচ্চু ভূঁইয়া, জুলহাস নাঈম বাবু, দীপক রায়, মিজানুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির লক্ষ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বৈঠক করছে বিএনপি।এর আগে, গত ২৪ মে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার সঙ্গে প্রথম বৈঠক করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গত ২৭ মে বাংলাদেশ লেবার পার্টির সঙ্গে সংলাপ করেছে বিএনপি।

আরও খবর

🔝