gramerkagoj
শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ১৫ চৈত্র ১৪৩০
gramerkagoj
সম্পাদকের আবেগঘন বক্তব্য

❒ প্রয়াত সহকর্মীদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ

প্রকাশ : শনিবার, ২৮ মে , ২০২২, ১০:১৪:৫৬ পিএম
দেওয়ান মোর্শেদ আলম:
1653754547.JPG
আজ তারা নেই,স্মৃতি আছে, কর্ম আছে। স্মৃতিপটে মনে পড়ে সেই চোখ, সেই মুখ। অপ্রত্যাশিত নানা ঘটনা, বিমর্ষ করা নানা স্মৃতি, রয়েছে তাদের হারানোর বেদনা। গ্রামের কাগজ এগিয়ে চলার মধ্যে আমাদের পরিবারকে কাঁদিয়ে বিভিন্ন সময়ে গত হয়েছেন প্রিয় অনেক সহকর্মী। ২৮ মে দৈনিক গ্রামের কাগজের প্রতিনিধি সম্মেলনে স্বাগতিক বক্তা হিসেবে সম্পাদক প্রকাশক মবিনুল ইসলাম মবিন বিষয়গুলোর অবতারণা করেন। বক্তব্যের এক পর্যায়ে তিনি কেঁদে ফেলেন। হারানো সহকর্মী ও গ্রামের কাগজের সাবেক প্রয়াত কয়েক সহযোদ্ধার নাম উল্লেখ করে স্মৃতিচারণও করেন তিনি। এসময় আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয় গোটা সম্মেলনে। আর সেই আবেগ ছড়িয়ে যায় উপস্থিত সব সাংবাদিক সহকর্মীর মধ্যে। ১৯৯৯ সালের ২৬ মার্চ থেকে ২০২২ সাল। মাঝে কেটে গেছে ২৩ বছর। এই ২৩ বছরের বেশি সময় পার করেছে দৈনিক গ্রামের কাগজ। স্বাধীনতা দিবসে প্রকাশিত গ্রামের কাগজ আজ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাঠক সেরা প্রধান দৈনিক। এ পত্রিকাটি সূচনালগ্ন থেকেই তার নিজস্ব বৈশিষ্ট্যে ছিল সমুজ্জ্বল। শিক্ষা, সাহিত্য, রাজনীতি, সমাজনীতি, শিল্প, বাণিজ্য, চিকিৎসার পাশাপাশি সমাজ বিনির্মাণে ‘গ্রামের কাগজ’র ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। এ অঞ্চলের প্রথম আট পাতার রঙিন দৈনিক থেকে এখন ডিজিটাল প্ল্যাটফরমও শক্তিশালী। এর সাথে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এক ঝাঁক মেধাবী সাংবাদিক নিয়ে পথ চলা শুরু করে। দীর্ঘ পথ চলার মধ্যে আমাদের সুখ দুঃখের শরিক গ্রামের কাগজ পরিবারের অনেক সদস্যের হয়েছে অকাল মৃত্যু। যারা বিগত কয়েকটি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং প্রতিনিধিক সম্মেলন মাতিয়ে রাখতেন। সংগত কারণেই ২৮ মের প্রতিনিধি সম্মেলনে তাদের উপস্থিতি ছিল না। যার ছাপ ছিল সব প্রতিনিধির চোখে মুখে। গ্রামের কাগজ সম্পাদকের বক্তব্যে তা আরও ছাপিয়ে যায়। প্রতিনিধি সম্মেলনে স্মরণ করা হয় গ্রামের কাগজের প্রয়াত যুগ্ম বার্তা সম্পাদক কামরুজ্জামান শাওনকে। ২০১০সালের ৭ আগসট শনিবার। দিনটি দৈনিক গ্রামের কাগজের জন্য ছিল সীমাহীন কষ্টের দিন। খুব সকালে কাগজ দপ্তরের প্রতিটি কর্মীর কাছে খবর পৌঁছে যায় যুগ্ম বার্তা সম্পাদক কামরুজ্জমান শাওন আর নেই। যে মানুষটি গ্রামের কাগজের অন্যতম এক সহযোদ্ধা ও সহযাত্রী, সুখ দুঃখের সাথী, যিনি গ্রামের কাগজের সূচনালগ্ন থেকে আমৃত্যু অন্তপ্রাণ ছিলেন। স্মরণ করা ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের স্টাফ রিপোর্টার মিঠু শিকদারকে। গ্রামের কাগজে প্রথম  থেকেই তিনি কাজ করেছেন। নানা বাধা বিপত্তি হুমকি উপেক্ষা করে অবিচল ছিলেন গ্রামে কাগজের পথচলায়। প্রতিটি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রাঞ্জল থাকতেন তিনি। ২০১৮ সালের ৫ মার্চ তিনিও চলে যান না ফেরার দেশে। আর কোনোদিন প্রিয় মিঠু শিকদার আর আসবেন না গ্রামের কাগজের কোনো অনুষ্ঠানে। সেই অনভূতি ব্যক্ত করেন গতকাল উপস্থিত তার প্রিয় সহকর্মীরা। স্মরণ করা হয় গ্রামের কাগজের শার্শার কাশিপুর প্রতিনিধি জামাল উদ্দিনকে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে ছিলেন আপোষহীন।  মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক কলম ধরে হত্যার হুমকি পেয়েছিলেন। এরপরও তার কলম থামেনি। তবে পিশাচরা তার কলম থামাতে তাকেই থামিয়ে দেয় ২০১২ সালের ১৫ জুন। সড়ক দুর্ঘটনায় অকাল প্রয়াত সেই ছোট্ট জুয়েলকেও স্মরণ করা হয়। অফিস সহকারীর কাজ করতো সে। গুটিগুটি পায়ে চা আনতো। ছোট ছোট কাজ করতো। সবার বকা খেলেও মুখে হাসি মাখিয়ে রাখতো। সেই জুয়েলকে সন্তান স্নেহে দেখতেন সম্পাদক মবিনুল ইসলাম মবিন ও সহযোগী সম্পাদক আঞ্জুমানারা। সেসব শোকের ছাপ গতকাল দারুণভাবে ছিল সম্পাদকের বক্তব্যে। অকাল প্রয়াণে যাওয়া সহকর্মীদের নাম একের পর এক বলেন সম্পাদক। পত্রিকার বর্তমান অবস্থানে সেসব সহকর্মীদের অবদান স্বীকার করে গ্রামের কাগজ সম্পাদক তাদের আত্মার শান্তি কামনা করেন। তাদের স্মরণে নীরবতা পালন করা হয়।

আরও খবর

🔝