gramerkagoj
শুক্রবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ৫ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
৩ নদীর ৬শ পয়েন্টে অবাধে রেণু শিকার, হুমকিতে মৎস্য সম্পদ
প্রকাশ : বুধবার, ৪ মে , ২০২২, ১২:৪৯:৫৫ পিএম
বরগুনা সংবাদদাতা ::
1651647013.jpg
বরগুনার পায়রা, বলেশ্বর ও বিষখালী নদীর প্রায় ৬শ পয়েন্টে অবাধে গলদা ও বাগদা চিংড়ির রেণু পোনা শিকার করছেন স্থানীয় জেলেরা। জেলার অন্তত এক হাজার কিলোমিটার এলাকায় অবৈধভাবে এই রেণু শিকার করছেন তারা। রেণু শিকারে মশারি জাল ব্যবহারের কারণে প্রতিদিনই ধ্বংস হচ্ছে হাজারো প্রজাতির দেশীয় পোনা ও মাছের ডিমসহ নানা জলজ প্রাণী। যদিও এসব জাল ব্যবহার ও পোনা শিকারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মৎস্য অধিদপ্তর। বিশেষ করে চৈত্র থেকে আষাঢ়, এ চার মাস গলদা ও বাগদা চিংড়ির রেণু শিকার করে উপকূলীয় জেলে ও তাদের স্ত্রী-সন্তানরা।বরগুনা সদরের গোলবুনিয়া, পুরাকাটা, বড়ইতলা, পাথরঘাটার কালমেঘা, নিলিমা পয়েন্ট, লালদিয়া, তালতলীর শুভসন্ধ্যা, জয়ালভাঙা, সোনাকাটা ও বগী এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিষখালী, বলেশ্বর ও পায়রা নদীতে প্রায় ১০-১২ হাজার জেলে মশারি জাল টানছেন।সেসব জালে আটকে থাকে বাগদা ও গলদা চিংড়ির রেণুসহ হাজারো প্রজাতির মাছ ও মাছের ডিম এবং জলজ প্রাণী। জেলেরা একটি পাত্রে সেসব রেণু, মাছ, ডিম রেখে আবারও নেমে যাচ্ছেন মশারি জাল নিয়ে। আর নারী-শিশুরা পাত্রে রাখা ডিম, মাছ থেকে রেণুগুলো আলাদা করে বিভিন্ন প্রজাতির পোনা, মাছের ডিম ও জলজ প্রাণী তীরেই ফেলে রাখছেন। আবার কেউ কেউ আলাদা পাত্রে রেখে দিচ্ছেন।রেণু শিকারি সদর উপজেলার পুরাকাটা এলাকার জেলে লিটন মিয়া বলেন, প্রতিদিন যে রেণুগুলো ধরি, তা সপ্তাহ শেষে বিক্রি করি। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১৫ থেকে ১৬শ টাকা করে আয় হয়। চৈত্র, বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ ও আষাঢ় এই চার মাস রেণু ধরি। বছরের বাকি ৮ মাস ফসলের ক্ষেতে মজুরের কাজ করি। রেণু ধরার সময় অন্য প্রজাতির অনেক পোনা মারা যায়। ক্ষতি হচ্ছে জানি কিন্তু কী করব, আমরা নিরূপায়। রেণু শিকার করেই আমাদের সংসার চলে।তালতলীর শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকত এলাকার জেলে ফারুক মাঝি বলেন, গরিবের সংসারে অভাব লেগেই থাকে। রেণু শিকার না করলে ভাত জোটে না। তাই স্ত্রী-সন্তান নিয়ে রেণু শিকার করে সংরক্ষণ করে রাখি। সপ্তাহে এক দিন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের আড়তদাররা এসে এসব রেণু কিনে নিয়ে যায়। বাগদা রেণু প্রতিশ বিক্রি হয় ৩০০ টাকা দরে। আর গলদা রেণুর দাম কম হওয়ায় ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি করি।তালতলীর জয়ালভাঙা এলাকার জেলে মোস্তফা খলিফা বলেন, সাগরে মাছ ধরে যে আয় হয়, তার থেকে বেশি আয় হয় এই চার মাস রেণু শিকার করে বিক্রি করলে। তাই আমরা এই সময়ে সাগরে না গিয়ে রেণু শিকার করি। মাঝে-মধ্যে প্রশাসন এলে জাল তুলে ফেলি। প্রশাসন চলে গেলে আবার রেণু শিকারে নেমে পড়ি।এ বিষয়ে বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, রেণু শিকারের সময় কোটি কোটি মাছের ডিম ও পোনা মারা যায়। এভাবে রেণু শিকার করতে থাকলে বিভিন্ন মাছের প্রজাতি ধ্বংস হয়ে যাবে। সাগর-নদী মাছশূন্য হয়ে পড়বে।এ বিষয়ে আমরা জেলেদের সচেতন করেছি। এ ছাড়া বেশ কয়েকবার অভিযান চালিয়েছি। অসাধু জেলেদের রুখতে আমাদের কঠোর অভিযান অব্যাহত থাকবে।

আরও খবর

🔝