gramerkagoj
বুধবার ● ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ১১ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
সপ্তাহে দু’লাখ টাকা চাঁদাবাজি

❒ দকে সামনে রেখে যশোর বড়বাজারে সিন্ডিকেটের অপতৎপরতা

প্রকাশ : শনিবার, ৩০ এপ্রিল , ২০২২, ০২:৩১:৩৪ এ এম
জাহিদ আহমেদ লিটন:
1651264355.jpg
ঈদকে সামনে রেখে যশোরের বড়বাজারে নিবর চাঁদাবাজি শুরু হয়েছে। ঈদ এবং স্বেচ্ছাসেবকদের কথা বলে দোকান প্রতি ৫০ থেকে ২শ’ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে। চলতি সপ্তাহে বাজার থেকে এ স্টাইলে দু’লক্ষাধিক টাকা চাঁদা আদায় করা হয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা অভিযোগে জানিয়েছে।ব্যবসায়ী সূত্রে জানা যায়, যশোরের বড়বাজারে ছোটবড় মিলিয়ে কমপক্ষে এক হাজার দোকান রয়েছে। এ বাজারটি দুটি ভাগে বিভক্ত করে দুটি পক্ষ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। তাদের পক্ষের লোকজন ব্যবসায়ীদের সুবিধা অসুবিধাসহ টাকা আদায় করে থাকে। এক্ষেত্রে বাজারের ব্যবসায়ীরা তাদের কথা মেনেই ব্যবসা পরিচালনা করে থাকেন। আর এ সুযোগটি গ্রহণ করেছে বাজার এলাকায় ঘোরাফেরা করা কতিপয় ব্যক্তি। ঈদকে সামনে রেখে তারা বিভিন্ন দোকানে গিয়ে নানা অজুহাতে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছে। চলতি সপ্তাহে বড়বাজার থেকে ওইসব ব্যক্তি দু’লক্ষাধিক টাকা আদায় করেছে বলে ব্যবসায়ীরা অভিযোগে জানিয়েছেন। গত ২৬ এপ্রিল বিকেল থেকে চাঁদা আদায়ে ব্যবসায়ী নামধারী কতিপয় ব্যক্তি ও আদায়কারী মাঠে নামে। তারা বিভিন্ন দোকানে গিয়ে জানায়, বাজারের স্বেচ্ছাসেবকদের এবং একটি রাজনৈতিক সংগঠনে বোনাস দিতে হবে, এজন্য তাদেরকে টাকা দিতে হবে। এ টাকার পরিমাণ ৫০ থেকে ২শ’ টাকা। এতে কয়েকজন দোকানি অনিহা প্রকাশ করলে তাদের জানিয়ে দেয়া হয়, ৫০ টাকা হারে সবাইকে দিতে হবে। ফলে বাড়তি ঝামেলা এড়াতে ও বেশি কথার ভয়ে ব্যবসায়ীরা অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাদেরকে টাকা তুলে দেন। এদিনে টাকা আদায়ের পরিমাণ ছিল কমপক্ষে একলাখ টাকা। এর দু’দিন আগে অপর একটি পক্ষ একই স্টাইলে ঈদ বোনাস হিসেবে বিভিন্ন দোকানির কাছ থেকে আরো লক্ষাধিক টাকা আদায় করেছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। তাদের অভিযোগ, বড় বাজারের বেশিরভাগ ব্যবসায়ী নিরীহ প্রকৃতির ও দুটি পক্ষের হাতে জিম্মি। এ কারণে তারা এ জাতীয় কোন বিষয়ে প্রতিবাদ করতে সাহস পান না। বাজার এলাকায় ঘোরাফেরাকারী পক্ষের লোকজন এলেই তারা দাবিকৃত টাকা প্রদান করতে বাধ্য হন। বিষয়টি নিয়ে শহরের বড়বাজার এইচএমএম রোড কালীবাড়ি এলাকার একজন মুদিখানা দোকানি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ১৫ রোজার পর থেকে বাজার এলাকায় নিবর চাঁদাবাজি শুরু হয়েছে। বর্তমানে এর পরিমাণ বেড়ে গেছে। বিভিন্ন অজুহাতে এলাকার প্রভাবশালী দু’জনের নাম ভাঙিয়ে চিহিৃত কয়েক ব্যক্তি চাঁদাবজিতে লিপ্ত হয়েছে। এ কাজের প্রতিবাদ করলেই তারা নানা ঝামেলার সম্মুখীন হন। এ জন্য কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। তারা চোখ বন্ধ করে ৫০ থেকে একশ’ টাকা হাতে ধরিয়ে দিয়ে পার পেয়ে যায়। তিনি আরও বলেন, বাজার এলাকার কমপক্ষে এক হাজার দোকান থেকে একশ’ টাকা হারে চাঁদা আদায় করলেই তার পরিমাণ দাঁড়ায় এক লাখ টাকা। ফলে ঈদের বাড়তি খরচে ওইসব ব্যক্তির কোন সমস্যা হচ্ছে না। চাইলেই টাকা হাতে পেয়ে যাচ্ছে।এইচএমএম রোডের অপর একজন কাপড় ব্যবসায়ী বলেন, বড়বাজার এলাকা যারা নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন, তাদেরকে ঈদের সময় বিভিন্ন স্থানে উপঢৌকন পাঠাতে হয়। এরমধ্যে কোনো কোনো গণমাধ্যম নেতাও রয়েছেন। এ টাকাতো তারা নিজের পকেট থেকে দেবেন না। ওইসব ব্যক্তি তাদের নিজস্ব লোক দিয়ে আমাদের কাছ থেকেই আদায় করে উপঢৌকন পাঠিয়ে থাকেন। এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে যশোর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আসাদুজ্জামান মিঠু বলেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নাম ব্যবহার করে কেউ চাঁদাবজি করলে তাকে সাথে সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হাতে তুলে দেয়ার অনুরোধ করছি। একইসাথে তিনি বিষয়টি সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদককে অবহিত করলে তারা অভিযুক্তের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলেও জানান। এ কাজে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।এ বিষয়ে যশোর কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ তাজুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। বিষয়টি নিয়ে যশোর ডিবি পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রূপন কুমার সরকার বলেন, এ জাতীয় ঘটনা তাদের জানা নেই। যদি হয়ে থাকে তাহলে তাদেরকে গোপনে ইনফরমেশন দেয়া হলে তারা এ বিষয়ে তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান।         

আরও খবর

🔝