gramerkagoj
শনিবার ● ২০ এপ্রিল ২০২৪ ৭ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
গ্যাটিসে তেল বিক্রি না করার ওয়াদা

❒ জেলা প্রশাসনের সাথে বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধি ও ডিলারদের বৈঠক

প্রকাশ : শুক্রবার, ২৯ এপ্রিল , ২০২২, ০১:৪৭:৩৩ এ এম
জাহিদ আহমেদ লিটন:
1651175389.jpg
যশোরে সয়াবিন তেল সঙ্কট সমাধানে মাঠে নেমেছেন জেলা প্রশাসন। তাদের কাছে বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধিরা কথা দিয়েছেন গ্যাটিস (প্যাকেজ) যুক্ত করে তেল বিক্রি করবেন না। এছাড়া ঈদকে সামনে রেখে বাজারে তেলের চাহিদা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে ডিলার ও কোম্পানির প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন। এ কারণে তারা চাহিদা অনুযায়ী বাজারে তেলের যোগান দিতে পারছেন না।   যশোরের বাজারে গত এক সপ্তাহ যাবৎ সয়াবিন তেল সঙ্কট প্রকট আকার ধারণ করেছে। বাজার কি মুদিখানা দোকান কোথাও মিলছে না সয়াবিন তেল। তেল শূন্য হয়ে গেছে গোটা যশোর। কি ব্যারেলজাত, কি কন্টেইনার কোন ভোজ্যতেলই নেই। দেশের চারটি বড় কোম্পানির যশোরের ডিলারের কাছে বার বার ফোন করেও ব্যবসায়ীরা ভোজ্যতেল পাচ্ছেন না। অথচ এসব কোম্পানির গোডাউনে বিপুল পরিমাণ তেল মজুত রয়েছে। কিন্তু রহস্যজনক কারণে তারা বাজারে তেল সরবরাহ করছেন না। ঈদকে সামনে রেখে দেশে তেলের কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করতেই কোম্পানিগুলো সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা মন্তব্য করেছেন। আর কোম্পানিগুলো গত সাতদিন যশোরের বাজারে তেল সরবরাহ না করলেও ক্রেতাদের চাহিদা থেমে নেই। প্রতিদিনই মানুষ বাজারে ভোজ্যতেল কিনতে গিয়ে না পেয়ে রীতিমত হৈ-চৈ করছেন। কারণ অসাধু মুনাফাখোর ব্যবসায়ীরা তাদের কাছ থেকে সঙ্কটের সুযোগে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। কৌশলে বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী পাঁচ লিটারের কন্টেইনার ৭৬০ টাকার স্থলে ৯৯০ টাকায় বিক্রি করছেন। এক্ষেত্রে তারা পাঁচ লিটার তেলে নির্ধারিত মূল্যের অতিরিক্ত ২৩০ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। দুই লিটারের তেলের দামও ৩১৫ টাকার স্থলে ৩৬০ টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। এছাড়া, কোম্পানিগুলো তেল বিক্রিতে প্যাকেজ প্রথা চালু করেছে। তাদের একটি প্যাকেজে থাকছে দুই লিটার তেল, তাদের কোম্পানির ৫শ’ গ্রাম চাপাতা ও আড়াইশ’ গ্রাম সরিষার তেল বা হালিম রেডি মিক্সসহ কোম্পানির অপ্রচলিত নানা প্রোডাক্ট। বাজারে তেল কিনতে যাওয়া মানুষের হাতে অতিরিক্ত হিসেবে এসব মালামাল গচিয়ে দেয়া হচ্ছে। এ জাতীয় মুনাফাখোর কর্মকান্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ। তারা বলেছেন এভাবে বাজার চলতে পারে না। বাজার ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে সরকারের সব অর্জনই ব্যর্থ হয়ে যাবে। তারা অবিলম্বে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটসহ কোম্পানিগুলোর লাগাম টেনে ধরার দাবি জানিয়েছেন।গ্রামের কাগজে এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশের পর বৃহস্পতিবার মাঠে নামে জেলা প্রশাসন। যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী সায়েমুজ্জামানের উদ্যোগে তার সভাকক্ষে এদিন দুপুরে বিভিন্ন তেল কোম্পানির প্রতিনিধি ও ডিলারদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠকে রূপচাঁদা কোম্পানির প্রতিনিধি জানান, যশোরে ডিলারের গোডাউনে তাদের কোন তেল মজুত নেই। যা ছিল সবই তারা বিক্রি করে দিয়েছেন। ফ্রেস কোম্পানির প্রতিনিধি জানান, যশোরের গোডাউনে তাদের কিছু পরিমান তেল মজুত রয়েছে। এ তেল তারা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় বিক্রি করে যাচ্ছেন। একইসাথে সকল কোম্পানির প্রতিনিধিরা জানান, তারা আর সয়াবিন তেলে গ্যাটিস (প্যাকেজ) বিক্রি করবেন না। স্বাভাবিক নিয়মে তারা তেল বিক্রি করবেন। সঙ্কটের সুযোগে তারা প্যাকেজ বানিয়ে কোম্পানির অন্যান্য মালামাল বিক্রি চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু আর তারা এ কাজ করবেন না বলে ওয়াদা করেন। বৈঠকে উপস্থিত যশোরের দু’জন ডিলার জানান, ঈদকে সামনে রেখে যশোরের বাজারে সয়াবিন তেলের ব্যাপক চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ চাহিদা অনুযায়ী তেলের যোগান কোম্পানিগুলো দিতে পারছে না। এ কারণে সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। ঈদের পর থেকে সঙ্কট স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে তারা জানান। এ বিষয়ে যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী সায়েমুজ্জামান বলেন, তেলের বিষয়ে জেলা প্রশাসন বৃহস্পতিবার যশোরের বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধি ও ডিলারদের সাথে বৈঠক করেছেন। এখানে কোম্পানির প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, তারা প্যাকেজে আর সয়াবিন তেল বিক্রি করবেন না। এছাড়া গোডাউনে তেল মজুত রেখে সঙ্কট সৃষ্টি করবেন না বলেও কথা দিয়েছেন। এরপর যদি কেউ তেল নিয়ে মজুতদারি করে তবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে তিনি হুশিয়ারি জানান।   

আরও খবর

🔝