প্রকাশ : সোমবার, ২৫ এপ্রিল , ২০২২, ১২:০৬:৫৪ এ এম
চৌগাছার টেঙ্গুরপুরে আয়ুব আলী খান ও ইউনুছ আলী খান জোড়া খুনের ঘটনায় লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবারের প্রাণে বেঁচে যাওয়া রনি খান। হত্যায় শুধু আটককৃত ৪ জনই নয়, আরো ৩ জন ছিল। তার চোখের সামনেই তার বাবা ও কাকাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। তাকেও এলোপাতাড়ি কোপানো হয় হত্যার উদ্দেশ্যে। এরপর দ্’ুসপ্তাহ পরে তিনি নিজেকে আবিস্কার করেন যশোর কুইন্স হাসপাতালে। এদিকে হত্যাকান্ডের ঘটনায় পলাতক বিল্লাল হোসেন ও তার স্ত্রী রুপালি বেগমকে আটকের পর রিমান্ডে নিয়েছে চৌগাছা থানা পুলিশ।গত ৭ এপ্রিল রাত সাড়ে দশটায় চৌগাছা-মহেশপুর সড়কের টেঙ্গুরপুর মোড়ে একই গ্রামের আফজাল খানের ছেলে বিপুল, মুকুল, বিল্লাল ও তার স্ত্রী রুপালি বেগমের নেতৃত্বে চাপাতি, হাসুয়া দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় ইউনুস আলী খান ও তার ভাই আইয়ুব আলী খানকে। এসময় আয়ুব আলী খানের ছেলে আসাদুজ্জামান খান রনিকেও এলোপাতাড়ি কোপায়। রনিকে যশোরের কুইন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুই সপ্তাহ মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে ২০ এপ্রিল জ্ঞান ফিরে পান রনি খান।রনি খান জ্ঞান ফিরে পেয়েই ঘটনার লোমহর্ষক বর্ণনা দেন। তিনি জানান, হত্যাকারী বিপুল মুকুল ও বিল্লাল মূলত দিনমজুর। ছোট বেলা থেকেই তাদের পরিবারে তারা ফাই ফরমায়েস খাটত। নিজেরা জন দেয়াসহ খান পরিবারে শ্রমিক সরবরাহ করত। কিন্তু সম্প্রতি চুক্তি ভেঙে বিপুল শ্রম দেয়া বন্ধ করে দেয়। সে ব্যাপারে প্রশ্ন তুললে ওই খান পরিবারের দুই ভাইয়ের উপর পৈশাচিকতা চালায়। ওই হামলা হয় তার উপরেও। তিনি এমন নৃশংস ঘটনা আগে দেখেননি। তার চোখের সামনে কুপিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় তার বাবা আইউব আলী খান ও কাকা ইউনুস আলীর খানকে। তাকেও এলোপাতাড়ি কোপানো হয়। মৃত ভেবে ফেলে যায় তাকে। আল্লাহর কৃপায় তিনি প্রাণে বেঁচে যান। তিনি জানান, হত্যায় শুধু বিল্লাল মুকুল বিপুল ও তাদের বউ রুপালি জড়িত নন। তাদের সাথে চৌগাছা বাজারে সামারি করে বেড়ানো জীবনম পাহাড় খার ছেলে হাফিজুরসহ আরো ৩ জন ছিল। তিনি ওই তিন জনকেও আটকের আওতায় এনে ফাঁসি দাবি করেছেন। এদিকে এই হত্যাকান্ডর ঘটনায় নিহত আয়ুব আলী খানের মেয়ে সোনিয়া খান বিপুল মুকুলসহ তাদের অপর ভাই বিল্লাল ও তার স্ত্রী রূপালী বেগমকে আসামি করে চৌগাছা থানায় যে মামলা করেন তার সব আসামিই আটক আছে। নৃশংসভাবে খুনের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত বিপুল ও মুকুলকে প্রথমে আটক করে পুলিশ। এরপর র্যাব যশোরের সদস্যরা গত ১১ এপ্রিল কালীগঞ্জ থেকে আটক করেছেন পলাতক বিল্লাল ও তার স্ত্রী রুপালি বেগমকে। হত্যায় ব্যবহৃত চাপাতি-হাসুয়া উদ্ধারও করা হয়। ওই বিল্লাল ও রুপালিকে রিমান্ডে নিয়েছে চৌগাছা থানা পুলিশ। এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চৌগাছা থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত ইয়াসিন আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে ঘটনার সাথে জড়িত ৪ জনই আটক হয়েছে। এছাড়া ঘটনায় আর কারা জড়িত তদন্ত চলছে। র্যাবের আটক করে দেয়া বিল্লাল ও রুপালি বেগমকে রিমন্ডে আনা হয়েছে। নৃশংস এই ঘটনায় কারো ছাড় নেই। সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।