gramerkagoj
শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ১৪ চৈত্র ১৪৩০
gramerkagoj
তিন বছরের প্রকল্প ঠেকছে ১০ বছরে, ব্যয় বাড়ছে হাজার কোটি
প্রকাশ : মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল , ২০২২, ০৩:০৬:৫২ পিএম
ঢাকা অফিস:
1650359267.jpg
২০১৪ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পায় ‘বহদ্দারহাট বাড়ইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খাল খনন’ প্রকল্প। মাত্র তিন বছরে এটি বাস্তবায়নের কথা ছিল। কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন তা নির্ধারিত সময়ে বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে।তিন বছরের প্রকল্পটির বর্তমানে বাস্তবায়ন মেয়াদ গিয়ে ঠেকছে ১০ বছরে। সেই সঙ্গে ব্যয় বাড়ছে ১ হাজার ৩৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানিয়েছে, মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) একনেক সভায় প্রকল্পটি দ্বিতীয় সংশোধনের জন্য তোলা হবে। দ্বিতীয় সংশোধনীতে প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় দুটোই বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের ‘বহদ্দারহাট বাড়ইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খাল খনন’ প্রকল্পটি নির্ধারিত সময়ে বাস্তবায়ন না হওয়ার জন্য ভূমি অধিগ্রহণে বিলম্ব হওয়ার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছে।সংশ্লিষ্টরা জানায়, প্রকল্পটির মূল অনুমোদিত ব্যয় ছিল ৩২৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। প্রথম সংশোধনীর মাধ্যমে এক লাফে প্রকল্পের ব্যয় করা হয় ১ হাজার ২৫৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা। যা বর্তমানে দ্বিতীয় সংশোধনীর প্রস্তাবে এসে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৬২ কোটি ৬২ লাখ টাকা। এই অর্থের মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ১ হাজার ২৯৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ৬৮ কোটি ১৩ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।সংশ্লিষ্টরা আরও জানায়, প্রকল্পটি মূল অনুমোদিত সময় ছিল জুলাই ২০১৪ সাল থেকে জুন ২০১৭ সাল। এরপর প্রথম সংশোধনের মাধ্যমে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয় জুন ২০২০ সাল পর্যন্ত। কোভিড পরিস্থিতির জন্য প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে মেয়াদ আরও এক বছর বাড়িয়ে জুন ২০২১ সাল পর্যন্ত করা হয়। বর্তমানে দ্বিতীয় সংশোধনী প্রস্তাবনায় প্রকল্পের মেয়াদ জুন ২০২৪ সাল করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে- খাল খননের মাধ্যমে জলাবদ্ধতা নিরসনপূর্বক নগরবাসীর নাগরিক সুবিধা বাড়ানো। খালের দুই পাশের সড়ক ও পার্শ্বস্থ ফুটপাত নির্মাণের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়ন করা। যানজট নিরসন ও বিনোদন সুবিধা সৃষ্টি এবং আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন করা হবে।প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে- ২ হাজার ৫১৭ শতাংশ ভূমি অধিগ্রহণ, ৭ হাজার ১৫৩ বর্গমিটার ভবন ক্ষতিপূরণ, ২.৮৫ লাখ ঘনমিটার মাটির কাজ, ২৬ হাজার ১০০ ঘনমিটার বালি ভরাট ও ৫ হাজার ৮০০ মিটার রাস্তা উন্নয়ন, ১৮৯ মিটার আরসিসি ব্রিজ/কালভার্ট, ৫ হাজার ৫০০ মিটার রিটেইনিং ওয়াল, ৫ হাজার ৫০০ মিটার ড্রেন ও ৫ হাজার ৫০০ মিটার ফুটপাত নির্মাণ এবং ১টি ডাবল কেবিন পিকআপ, ১টি লং বুম এস্কাভেটর ও ৫টি ডাম্প ট্রাক ক্রয় করা হবে।প্রকল্প সংশোধনের কারণ হিসেবে বলা হয়েছে- ভূমি অধিগ্রহণে বিলম্ব; নির্মাণ কাজের রেট শিডিউল ও ডিজাইন পরিবর্তনের কারণে রাস্তার উন্নয়ন, ব্রিজ/কালভার্ট, রিটেইনিং ওয়াল, ড্রেন নির্মাণ ইত্যাদি অঙ্গের ব্যয় বৃদ্ধি; স্লুইস গেইট নির্মাণ অঙ্গ বাদ দেওয়া; প্রকল্পে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নের পরিমাণ কমানো এবং প্রকল্পের বাস্তবায়ন মেয়াদ ৩ বছর বৃদ্ধি করা।পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) মামুন-আল-রশিদ বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে খাল খনন ও টেকসই অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন, জীববৈচিত্র পুনরুদ্ধার ও পরিবেশ উন্নয়ন সম্ভব হবে। এছাড়া প্রকল্পটি অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় মানবসম্পদ উন্নয়ন নিয়মিতকরণ, বিনিয়োগ সহায়ক টেকসই নগর উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা যেমন সড়ক সংযোগ, অবকাঠামো নির্মাণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সিটি করপোরেশনগুলোর সাংগঠনিক দক্ষতা ও ব্যবস্থাপনা উন্নীতকরণ করা সম্ভব হবে। এসব বিবেচনায় প্রকল্পটি একনেকে দ্বিতীয় সংশোধন প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।

আরও খবর

🔝