gramerkagoj
শনিবার ● ২০ এপ্রিল ২০২৪ ৭ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
কলাপাড়ায় ৪২টি খেয়াঘাট ঝুঁকিপূর্ন : খেঁয়া পারাপারে চরম দূর্ভোগ
প্রকাশ : রবিবার, ৩১ অক্টোবর , ২০২১, ০৬:৩৩:৩৯ পিএম
এইচ,এম,হুমায়ুন কবির, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) ::
1635683651.jpg
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নদীর ১৮টি স্থানে খেয়া পারাপারে জেটি দিয়ে খেয়ায় উঠতে হয় যাত্রীদের। প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী মরনফাঁদ দিয়ে খেয়ায় উঠেন। উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসন সুত্রে জানা গেছে, উপজেলা ১৮টি খেয়াঘাট রয়েছে। এর মধ্যে ৭টি খেয়াঘাট খাস আদায়ের মাধ্যমে চালানো হচ্ছে। আর ১১টি খেয়াঘাট ইজারা দেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাংলা ১৪২৮ সালের জন্য উপজেলা ১১টি খেয়া ঘাট ৩৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা ইজারা দিয়েছে উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসন কার্যালয়। কলাপাড়ায় মোট ২১টি খেঁয়া ইজারা দিয়েছে উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসন। এছাড়া তিনটি খেঁয়া নিয়ন্ত্রণ করছে কলাপাড়া পৌরসভা আর ৭টি খেয়াঘাট খাস আদায়ের মাধ্যমে চলছে । কলাপাড়া উপজেলা পরিষদ সুত্রে জানা গেছে, ইঞ্জিন চালিত নৌকায় যাত্রী পিছু দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী জনপ্রতি চার টাকা, বৈঠায় চলাচল নৌকায় যাত্রীপিছু দুই টাকা, মোটর সাইকেল ১০ টাকা, বাই সাইকেল চার টাকা, ছাগল-ভেড়া চার টাকা, গরু-মহিষ ১০টাকা, ৪০ কেজি পর্যন্ত ওজনের বিভিন্ন মালামালে তিন টাকা এবং রিক্সা-ভ্যান পারাপারে ছয় টাকা রেট নির্ধারণ করা আছে। সেখানে ইজারাদারের লোকজন যাত্রীদের জিম্মি করে দ্বিগুন-তিনগুন থেকে দশগুন পর্যন্ত বেশি টাকা আদায় করছে। নিয়ম রয়েছে প্রত্যেক খেঁয়ার ঘাটে ইজারাদার নিজের খরচে খেয়ার টোলের রেটচার্ট টানিয়ে রাখবে। এসবের তোয়াক্কা কেউ করছে না। উপজেলার এসব খেয়া গুলো হলো-আনিপাড়া-খেপুপাড়া, চিংগুড়িয়া-টিয়াখালী, মধুপাড়া-উওরলালুয়া, আলীগঞ্জ-ফরিদগঞ্জ, নেওয়াপাড়া-নাচনাপাড়া, উমেদপুর-ফুলবুনিয়া, সুলতানগঞ্জ-আলীগঞ্জ,-আলীপুর-মহিপুর,মিঠাগঞ্জ-বাদুরতলী,খাজুরা-গোড়ারখাল,গোড়াআমখোলা-সিরাজপুর, তেগাছিয়া-নীলগঞ্জ, হলদিয়াবাড়ীয়া-নুরপুর, মাটিভাংগা-মনসাতলী, লোন্দা-টিয়াখালী, নবীপুর-চাকামইয়া, ছোটবালীয়াতলী খেয়া, গোলবুনিয়া-কুমিরমারা, লেমুপাড়া-চান্দুপাড়া। মানুষের খেঁয়া নৌকায় ওঠা-নামার দূর্ভোগ ছাড়াও খেয়াঘাটে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন ইজারাদাররা বলে অভিযোগ যাত্রীদের। একবিংশ শতাব্দীর এই অত্যাধুনিক যুগেও মাত্র ২১টি খেয়াঘাট কাঁচা সড়ক চলাচলের সম্পূর্ন অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এ খেয়াঘাট সড়ক দীর্ঘদিন ধরে বেহাল দশায় থাকায় মানুষের দৈনন্দিন চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। খেয়াঘাট কাঁচা রাস্তা গুলো এখন খেয়া পারাপার যাত্রীদের জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। চলাচলে পোহাতে হচ্ছে চরম দূর্ভোগ পথ চারীদের থমকে পড়েছে হাজারো মানুষের জীবন যাত্রা। বর্ষা মৌসুমে রাস্তা গুলো পানি-কাঁদায় একাকার হয়ে যায়। এমন দুরবস্থার জন্য অতিরিক্ত কাঁদা  আর পানির কারনে কোন যানবাহন তো দুরের কথা জুতা পায়ে হাটতে অসম্ভব ব্যাপার। মনে হয় যেন রাস্তা নয় চাষের জন্য প্রস্তুত কোন জমি। বিকল্প কোন ব্যবস্থা না থাকায় হাঁটু সমান কাদাঁ মাড়িয়ে চলাচল করতে হয় খেয়া পারাপার যাত্রীদের। হাতে জুতা পানি-কাঁদা মাখা শরীরে চলে শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার যাত্রীদের জীবন যাত্রা। মিঠাগঞ্জ-বাদুরতলী খেয়াঘাটে নৌকায় ওঠার নদীপাড়ের কাঁচা সড়কটি মাঝখান দিয়ে বিশাল ভাঙ্গল সৃষ্টি হয়ে একাকার হয়ে রয়েছে। এখান মানুষের খেঁয়া পারাপারে চরম দূর্ভোগ হচ্ছে। প্রতিদিন মানুষকে কাঁদা পেড়িয়ে উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ করতে হয়। স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছেলে মেয়েদের জামা কাপড় কাঁদা লেগে প্রতিদিন নষ্ট হয়ে যায় । আর জোয়ারের সময় কমর সমান পানি হয়। আন্দারমানিক নদীর মিঠাগঞ্জ-বাদুরতলী পয়েন্টে এ খেয়াটির অবস্থান। খেঁয়াটি পার হয়ে মিঠগঞ্জের-বাদুরতলী খেয়া পাড় হয়ে শত শত মানুষ প্রতিদিন উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। কিন্তু জনদূর্ভোগ লাঘবে কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়না। আবার কোনো কোনো খেয়া কাঁদায় সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করতে হয়। যানবাহন নিয়ে পড়তে হয় চরম বিপাকে পড়তে হয় জনসাধারনকে। আবার এ দিকে  খেয়াঘাটের প্রবেশের দু’পাড়ের সড়ক বেহাল দশা পরিনত হয়েছে। ফলে জীবনের ঝঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত খেয়াপাড় হচ্ছে ধানখানখালী ও লালুয়া ইউনিয়নের শিক্ষার্থীসহ ছয় গ্রামের প্রায় আটহাজার মানুষ। চরনিশানবাড়ীয়া ও লালুয়ার মধ্যবর্তী খেয়াঘাট ভাটার সময় তীরে ভীড়তে পারে না নৌকা। জোয়ারের সময় মটর সাইকেল উঠতে হয় কাঁদা মাটি পেড়িয়ে। বৃষ্টি হলে হাটু সমান কাঁদা হয়ে যায় সড়ক। ঘাটের বর্তমান এমন বেহালদশায়। ফলে খেয়াপার হতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ছোট বড় দুর্ঘটনা শিকার হচ্ছে শিক্ষার্থীসহ সাধারন মানুষ তার পর ও কোন উপায়ন্ত না পেয়ে বর্ষা মওসুমে মুমূর্ষ রোগী কিংবা গর্ভবর্তী মায়েদের উপজেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসতে হয় ট্রলার কিংবা নৌকায়। ফলে খেয়াঘাট নিয়ে ভোগান্তিতে রয়েছেন ওই এলাকার মানুষ। বর্ষা সময় জুতা হাতে নিয়ে খেয়া উঠতে হয়। সড়কে কাঁদা পানি মিশে পিচলা হওয়ায় খেয়ায় উঠতে গিয়ে অনেকে পড়ে যায়। পায়রা বন্দর রাবনাবাঁধ নদীর  চরনিশানবাড়ীয়া ও লালুয়ার মধ্যবর্তী পয়েন্টে এ খেয়াটির অবস্থান।বছরের পর বছর সরকারি রাজস্ব আদায়ের জন্য খেঁয়া ইজারা দেয়া হলেও জনস্বার্থে ঘাটগুলো সংস্কার করা হয়না। এভাবে উপজেলার ২১টি খেয়াঘাটের করুন অবস্থা। এ জনপথের জনসাধারনকে কিছু কিছু জায়গায় নদীপথে প্রতিদিন যাতায়াতের করতে হয়। মিঠাগঞ্জ-বাদুরতলী পয়েন্টে এ খেয়ার ইজারাদার মো.মনির হোসেন বলেন, ভাই দেখেন এখন জোয়ার খেয়া নৌকাটি একেবারে মেইন সড়কের কাছে এসে পৌছছে। খেয়াঘাটের রাস্তাটি মাঝখানে প্রায় ২০ফুট ভাঙ্গল। প্রতিদিন খেয়াপারাপারের যাত্রীদের কাঁদা পায়ে লাগিয়ে আসা যাওয়া করতে হয়। এ বছর এ খেয়াঘাটটি এক লক্ষ দশ হাজার টাকা ইজারা নিয়েছি আমি কিন্তু বছরের পর বছর সরকারি রাজস্ব আদায়ের জন্য খেঁয়া ইজারা দেয়া হলেও জনস্বার্থে ঘাটগুলো সংস্কার করা হয়না।কলাপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান বীরমোক্তিযোদ্ধা এস,এম,রাকিবুল আহসান বলেন, যে খেয়াঘাট গুলো ইজারাদার রয়েছে সে ঘাটে মানুষের চলাচলে সমস্যা হয় তাহলে ওই ঘাটের জেটি ও রাস্তা আমরা নির্মান করে দিবো।  

আরও খবর

🔝