gramerkagoj
শনিবার ● ২০ এপ্রিল ২০২৪ ৭ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
বাঁশির সুরে হাজারো মৌমাছি বসে মাহাতাবের শরীরে
প্রকাশ : বুধবার, ৯ জুন , ২০২১, ০৯:০৮:৫৮ পিএম
কামরুজ্জামান রাজু, কেশবপুর (যশোর):
1623251458.jpg
মাহাতাব মোড়লকে সবাই চেনেন ‘মৌমাছি মাহাতাব’ নামে। বাঁশির সুর শুনে ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি এসে জড়ো হয় তার শরীরে। মৌমাছির প্রতি ভালোবাসা থেকেই এ অভ্যস্ততা গড়ে তুলেছেন তিনি। বাঁশির সুরে মৌমাছি শরীরে জড়ো হওয়ার ঘটনা দেখতে উৎসুক মানুষ ভীড় করছেন তার বাড়িতে। মাহাতাব মোড়লের বাড়ি যশোরের কেশবপুর উপজেলার হাসানপুর ইউনিয়নের মোমিনপুর গ্রামে। বাঁশির সুরে মাত্র পাঁচ মিনিটেই মৌমাছি বসতে শুরু করে তার শরীরে।মাহাতাব মোড়ল ১২ বছর বয়স থেকে মৌচাক থেকে মধু আহরণ শুরু করেন। ওই সময় বালতিতে শব্দ করে চাক থেকে মৌমাছি দূরে সরিয়ে দেয়ার কৌশল রপ্ত করেন তিনি। পরবর্তীতে টিনের থালায় শব্দ শুনে মৌমাছি চাক ছেড়ে তার কাছে আসতে শুরু করে। মৌমাছির কাছে আসার এমন দৃশ্য থেকে ভালোবাসা তৈরি হয় মাহাতাবের। এ ভালোবাসা থেকেই মধুর উচ্ছিষ্ট (মধুর ওপরের স্বর বা গ্যাজা) কাপড়ে লাগিয়ে বাড়ির চারপাশে ঝুলিয়ে রাখেন। ওই কাপড়ে মৌমাছি বসে খাদ্য গ্রহণ করে তার বাড়ির এলাকায় উড়ে বেড়ায়। এক পর্যায়ে তিনি টিনের থালা বাদ দিয়ে বাঁশিতে সুর তুলে মৌমাছি কাছে আনতে থাকেন। কৌশলগত ওই সুর শুনে এখন হাজারো মৌমাছি তার শরীরে জড় হয়।মাহাতাব মোড়ল জানান, ২০ বছর যাবত তিনি মধু সংগ্রহ করছেন। তার বাবার নাম মৃত কালাচাঁদ মোড়ল। বাবার বাড়ি ছিল সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রা উপজেলায়। কেশবপুরের মোমিনপুর গ্রামে তার নানা বাড়ি। এটিই এখন মাহাতাব মোড়লের স্থায়ী বাসিন্দা। সুন্দরবনসহ সাতক্ষীরা, খুলনা ও যশোর অঞ্চলে তিনি মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করেন। মধুর চাক ভাঙতে ভাঙতে মৌমাছির প্রতি তার ভালোবাসা তৈরি হয়। বালতি, টিনের থালার মাধ্যমে একটি দু’টি মৌমাছি শরীরে নিতে নিতে এখন বাঁশির সুরে হাজারো মৌমাছি আনতে পারেন। এক পর্যায়ে তার শরীর চাকের আকার নিয়ে জড়ো হয় মৌমাছি। মৌমাছি শরীরে কামড় দেয় কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এর জন্য শরীরকে আগে থেকেই প্রস্তুুত করতে হয়। আঘাত না করলে একটি মৌমাছিও শরীরে হুল বসায় না। সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নের কাস্তা গ্রামের আক্তার হোসেন বলেন, বাঁশির সুর শুনে ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি মাহাতাবের শরীরে বসে চাকের আকার ধারণ করে। বাঁশি বাজানো বন্ধ করার পর সেগুলো আবার উড়ে যায়। মাহাতাব মোড়ল বলেন, এতে কোনো তন্ত্র-মন্ত্র নেই, একটা কৌশলমাত্র। কাজটি ঝুঁকিপূর্ণ হলেও অভ্যাস হয়ে যাওয়ায় কোনো ভয় লাগে না।হাসানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রভাষক জুলমত আলী বলেন, দীর্ঘদিন মাহাতাব মোড়ল মধু ভেঙে বেড়ান। বাঁশির সুরে মৌমাছি শরীরে আনার কৌশল আয়ত্ব করায় এলাকায় তিনি পরিচিতি পেয়েছেন মৌমাছি মাহাতাব নামে।

আরও খবর

🔝