gramerkagoj
বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪ ১৪ চৈত্র ১৪৩০
gramerkagoj

❒ ফসলি জমি লবণাক্ততার আশংকায়

মোরেলগঞ্জে বেড়িবাঁধ ভেঙে হুমকির মুখে ২০ গ্রাম
প্রকাশ : রবিবার, ৩০ মে , ২০২১, ১১:২২:০৩ এ এম
গনেশ পাল, মোরেলগঞ্জ(বাগেরহাট) : :
1622352288.jpg
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্নিমার অতিরিক্ত জোয়ারের প্রভাবে বেড়িবাঁধ ভেঙে তিনটি ইউনিয়নের ২০ টি গ্রাম হুমকির মুখে । লবণ পানি প্রবেশের আশংকায় রয়েছে সাধারণ কৃষক। এদিকে জমির জটিলতায় সরকারিভাবে সংস্কারের বরাদ্ধকৃত টাকা ফেরত চলে গেছে। দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা সমাধানেও মাথা ব্যথা নেই কর্তৃপক্ষের। সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনে জমি অধি গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সরোজমিনে গিয়ে জানাগেছে, পঞ্চকরণ ইউনিয়নের দেবরাজ এলাকায় অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে ৬শ’ মিটার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে পড়েছে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাব কেটে গেলেও রয়ে গেছে ছাপ। দরগা বাড়ি, আমুরডাঙ্গা, রাস্তা আলী বাড়িসহ ৭/৮ টি স্থানে ভেঙে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যে কোন সময়  জোয়ারের অতিরিক্ত লবণ পানি প্রবেশ করে ফসলের ক্ষতি হতে পারে বলে আশংকায় কৃষক। দেবরাজ কুমারিয়া জোলা, পঞ্চকরণ একই ভাবে সিমান্তবর্তী তেলিগাতি ইউনিয়নের মিস্ত্রীডাঙ্গা, হেড়মা বাজার স্লুইজগেট এলাকা ও হরগাতি স্লুইজগেট এলাকায় ৬টি স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে ইট সোলিং রাস্তা ভেঙে পড়েছে। খানা খন্দে পরিণত হয়ে চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে রাস্তঘাট। হুমকির মুখেও রয়েছে দৈবজ্ঞহাটী ইউনিয়ন। পঞ্চকরণ দেবরাজ কুমারিয়াজোলা মহিষচরনী, খারইখালী, তেলিগাতি, ঢুলিগাতি, হেড়মা বাজার, মিস্ত্রীডাঙ্গা, চাপড়ী মালমগাছাসহ ২০টি গ্রামের সাধারণ কৃষক রয়েছে আতংকে। লবণ পানি প্রবেশ করে হাজার হাজার বিঘা ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতির আশংকা রয়েছে। ভাঙন কবলিত দেবরাজে ওয়াপদা বেড়িবাঁধে গিয়ে দেখা গেছে মাটি কেটে মেরামত করছে স্থানীয়রা। কাজের দেখভালের দায়িত্বে থাকা স্থানীয় বাসিন্দা ফরিদুল ইসলাম বলেন, ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধের এ জমির মালিক পাশ্ববর্তী রামপাল উপজেলার মল্লিকেরবেড় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান তালুকদার নামজুল কবির জিলাম। তার অর্থায়নে শ্রমীক দিয়ে এ কাজ করানো হচ্ছে। সরকারিভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে নয়। জেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি সাধারণ সম্পাদক চেয়ারম্যান তালুকদার নামজুল কবির জিলাম বলেন, ইতোপূর্বে ২ বারে ১৫ বিঘা জমি  স্বেচ্ছায় দেওয়া হয়েছে তা নদীগর্ভে ভেঙ্গে গেছে। গত বছরে জেলা প্রশাসক পানি উন্নয়ন বোর্ডের জেলা প্রকৌশলী জমি পরিমাপ করে পানিসম্পদ মন্ত্রনালয়ে ফাইল প্রেরণের নির্দেশনা থাকলেও সেটির কোন হদিস নেই। তিনিসহ স্থানীয় জমি মালিকরা অধিগ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জেলা মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক পঞ্চকরণ ইউপি চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক মজুমদার বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে প্রতি বছরই বেড়িবাঁধ বিভিন্ন স্থান থেকে ভেঙে যায়। ইতোপূর্বে ভেঙে যাওয়া ৬শ’ মিটার বেড়িবাঁধ এলাকা পরিদর্শন করেছেন মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আমিরুল আলম মিলন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেলোয়ার হোসেনসহ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ। স্থায়ীভাবে দেবরাজ বাজার হয়ে সোনাখালী বাজার পর্যন্ত সাড়ে ৯ কিলোমিটার স্থায়ী বেড়িবাঁধের জোর দাবি জানান তিনি। জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সম্পাদিকা তেলিগাতি ইউপি চেয়ারম্যান মোর্শেদা আক্তার বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ এলাকা ইতোমাধ্যে পরিদর্শন করে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপন করেছেন। প্রাথমিকভাবে একশ’ বস্তা জিও ব্যাগ দিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড। এ সর্ম্পকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আরিফ হোসেন বলেন, ইয়াসের প্রভাবে ভাঙন কবলিত স্থানগুলো সরেজমিনে খোজ খবর নিয়ে ক্ষতির নিরুপন তালিকা করে উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। ঝড়ের পূর্ব থেকেই সংস্কারের কাজ করা হচ্ছে বলইবুনিয়া ইউনিয়নের শ্রেনীখালী এলাকায়। দেবরাজে ৬শ’ মিটার বেড়িবাঁধাদের একটি অংশ ব্যক্তি মালিকানা জমি। গত বছরে সংস্কারের জন্য ২০ লাখ টাকা বরাদ্ধ হলেও জমির জটিলার জন্য কাজটি বন্ধ হয়ে যায়। বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্য, নিবাহী কর্মকর্তা অবহিত রয়েছে।  ছোলমবাড়িয়া হয়ে দেবরাজ পর্যন্ত কোথাও কোথাও ভেঙে পড়া ও দুর্বল হয়ে যাওয়া বাঁধ সংস্কারের ১০ কিলোমিটারের কাজ নির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছে।

আরও খবর

🔝