gramerkagoj
বৃহস্পতিবার ● ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ১২ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
সুপার সাইক্লোন আঘাত হানছে ধামড়ায়

❒ আজ দুপুর ১টার মধ্যে আছড়ে পড়বে, পশ্চিমবঙ্গের ৯ লাখ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে

প্রকাশ : মঙ্গলবার, ২৫ মে , ২০২১, ১১:৫৬:৪৮ পিএম
জাহিদ আহমেদ লিটন:
1621965478.jpg
সুপার সাইক্লোন ইয়াস আঘাত হানছে ভারতের উড়িষ্যা ও দীঘার মধ্যবর্তী ধামড়া পোর্ট এলাকায়। আজ বুধবার দুপুর ১২টা থেকে ১টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি আছড়ে পড়বে। এ কারণে বাংলাদেশ ভয়াবহ এ দুর্যোগ থেকে খানিকটা নিরাপদে রয়েছে। এ নিয়ে পরপর দু’বছর একই মাসে দুটি ভয়াল ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশ ও ভারতে আছড়ে পড়লো। ভারতের  কোলকাতার আলীপুর আবহাওয়া অফিস থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, মধ্য বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি সোমবার পূর্ণাঙ্গ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়। এরপর মঙ্গলবার এটি সুপার সাইক্লোনে পরিণত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের উড়িষ্যা উপকূলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এটি বর্তমানে উড়িষ্যা উপকূল থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত প্রায় ৩শ’ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। যা ঘন্টায় ১৭ কিলোমিটার বেড়ে এগিয়ে যাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র থেকে এর গতিবেগ ১৭০ থেকে ১৯০ কিলোমিটারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণে এসব এলাকার প্রায় ৯ লাখ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে। এ অবস্থায় আজ বুধবার দুপুর ১২টা থেকে ১টার মধ্যে ভারতের উড়িষ্যা ও মেদিনীপুর জেলার দীঘার মধ্যবর্তী ধামড়া পোর্ট এলাকায় ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানবে বলে  কোলকাতার আলীপুর আবহাওয়া অফিস সূত্র জানিয়েছে। এদিকে, এ নিয়ে পরপর দু’বছর একইমাসে দুটি ভয়াল ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশ ও ভারতে আছড়ে পড়লো। গত ২০২০ সালের মে মাসে সুপার সাইক্লোন আম্পান বাংলাদেশের সাতক্ষীরা উপকূলে আঘাত হানে। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রে এর গতিবেগ ছিল ১৮০ থেকে ২২০ কিলোমিটার পর্যন্ত। এতে সাতক্ষীরা, যশোর, খুলনাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এরপর আজ বুধবার ভারতের উড়িষ্যায় আছড়ে পড়ছে সুপার সাইক্লোন ইয়াস। যার গতিবেগ ছিল প্রতিঘন্টায় ১৭০ থেকে ১৯০ কিলোমিটার। ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় ব্যাপক পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত সরকার।  অবশ্য ঘূর্ণিঝড় ইয়াস থেকে বর্তমানে বাংলাদেশ খানিকটা নিরাপদে রয়েছে। তবে বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা, পটুয়াখালীসহ বিভিন্ন উপকুলীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব শুরু হয়েছে। এসব অঞ্চলে হালকা ও মাঝারি ধরণের ঝড় হাওয়া বইতে শুরু করেছে ও সাগরে তিন থেকে পাঁচ ফুট উচুঁ জলোচ্ছাস শুরু হয়েছে। পটুয়াখালী, বরগুনা, খুলনা ও সাতক্ষীরা অঞ্চলের কয়েকটি গ্রাম ইতিমধ্যে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশের সকল নৌরুটে সব ধরণের নৌ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। একইসাথে দুর্যোগ মোকাবেলায় বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে আইএসপিআর সূত্র জানিয়েছে। এছাড়া, দুর্যোগ মোকাবেলায় যশোর জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ কন্ট্রোল রুম খুলেছে। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীদের ছুটি বাতিল ও জরুরি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে জেলার ১ হাজার ৮১১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত করা হয়েছে। ৮টি উপজেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে আশ্রয় কেন্দ্রের আওতায় আনা হয়েছে। সাথে রয়েছে আরো শতাধিক দাখিল মাদ্রাসা ভবন। একইসাথে ইউনিয়ন পর্যায়ের বিভিন্ন সংস্থার উচু ভবনগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে। যদিও এসব আশ্রয় কেন্দ্রে এখনও পর্যন্ত কাউকে নিয়ে যাওয়া হয়নি। ঝড়ে জরুরি অবস্থার সৃষ্টি হলে তাদেরকে সরিয়ে নেয়া হবে বলে প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে। ঘুর্ণিঝড় মোকাবেলা যশোরে গোটা পরিস্থিতি তদারকি করছেন জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান।এ ব্যাপারে যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, ঘুর্ণিঝড় ইয়াস ভারতের উড়িষ্যা উপকূলের দিকে ধেয়ে যাচ্ছে। এ কারণে বাংলাদেশ খানিকটা নিরাপদে রয়েছে। তারপরও উপকূলীয় জেলার পাশ্ববর্তী হিসেবে যশোর খানিকটা ঝুঁকির মধ্যে আছে। এ কারণে আমরা সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছি। যাতে দুর্যোগে মানুষ কোন বিপদে না পড়ে। তিনি বলেন, মানুষকে রক্ষা করতে জেলাব্যাপী প্রশাসন কাজ করছে। এ জন্য জেলার ৮জন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দফতরকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জেলার ইউনিয়ন পর্যায়ের ১ হাজার ৮১১টি বিদ্যালয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে শুকনো খাবার হিসেবে রুটি, বিস্কুট, খাবার স্যালাইনসহ জরুরি ওষুধ মজুদ রাখা হয়েছে।

আরও খবর

🔝