gramerkagoj
বৃহস্পতিবার ● ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ৫ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
দেশে করোনার চেয়েও তামাকে মৃত্যু ১২ গুণ বেশি!
প্রকাশ : মঙ্গলবার, ২৭ এপ্রিল , ২০২১, ০৭:৪২:২৬ পিএম
ঢাকা অফিস:
1619530974.jpg
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে যত মানুষ মারা গেছে, তার চেয়ে ১২ গুণ বেশি মারা গেছে তামাকের প্রভাবে। এ ছাড়া করোনায় আক্রান্তের চেয়ে তামাকে কয়েকগুণ বেশি আক্রান্ত হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করেছেন। অন্যদিকে বাড়ছে তামাক ব্যবহারকারীর সংখ্যা।মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) তামাকবিরোধী সংগঠন প্রগতির জন্য জ্ঞান (প্রজ্ঞা) এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্সের (আত্মা) যৌথ উদ্যোগে ‘তামাক-কর ও দাম সংক্রান্ত বাজেট প্রস্তাব’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।দেখা যায়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত দেশে মৃত্যুবরণকারী মানুষের সংখ্যা ১১ হাজার ১৫০ জন। আর আক্রান্তের সংখ্যা ৭ লাখ ৪৮ হাজার ৬২৮ জন। অথচ ২০১৮ সালের পরিসংখ্যান বিবেচনায় তামাকের প্রভাবে দেশে ১ লাখ ২৮ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেছেন। এছাড়া পঙ্গুত্ববরণ করেছেন কয়েক লাখ মানুষ। সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া তথ্য বলছে, বর্তমানে দেশে প্রায় ৪ কোটি মানুষ তামাক ব্যবহার করেন। যারা সবচেয়ে বেশি করোনা ঝুঁকিতে রয়েছেন। তামাক ও করোনাভাইরাসের তুলনামূলক বিচারে করোনাভাইরাসের চেয়ে তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব সবচেয়ে বেশি।প্রজ্ঞা বলছে, বিশ্বের যে দশটি দেশে সবচেয়ে বেশি ধূমপায়ী বাস করেন তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। এখনও বাংলাদেশে তিন কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ (৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ) তামাক ব্যবহার করছেন। যার মধ্যে এক কোটি ৫০ লাখ মানুষ (১৪ শতাংশ) সিগারেট ব্যবহার করেন। প্রজ্ঞার হেড অব টোব্যাকো কন্ট্রোল প্রোগ্রাম হাসান শাহরিয়ার বলেন, ২০০৯ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত পরিসংখ্যান হিসাব করলে তামাক ব্যবহারের হার প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে। ২০০৯ সালে ছিল ১৪ দশমিক ২ শতাংশ এবং ২০১৭ সালে তা ১৪ শতাংশ।আর ২০১৮ সালে প্রকাশ করা চিকিৎসা বিষয়ক জার্নাল ‘দ্য ল্যানসেট'এর প্রতিবেদনেও বলা হয়, গত ২৫ বছরে বাংলাদেশে পুরুষ ধূমপায়ীর শতকরা হারে তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি৷হাসান শাহরিয়ার বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুসারে যদি ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকের ব্যবহার কমিয়ে ৫ শতাংশ করতে হয়, তাহলে আমাদের প্রতিবছর ১ দশমিক ৫ শতাংশ কমাতে হবে। ২০০৯ সালে তামাকের ব্যবহার ছিল ৪৩ শতাংশ, যা ২০১৭ সালের হয়েছে ৩৫ শতাংশ। যে হারে কমছে তাহলে লক্ষ্য অর্জিত হবে না। ২০২১ সালের মধ্যে তামাকের ব্যবহার অন্তত ২৮ শতাংশ কমাতে হবে।অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও তামাক ব্যবহার করে স্বাস্থ্যখাতে ব্যায় বেশি হয়েছে বলে জানান তিনি। এক পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, ২০১৭-২০১৮ সালে তামাক খাতে রাজস্ব এসেছিল ২২ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। একই বছরে তামাক ব্যবহারজনিত অসুস্থতায় স্বাস্থ্যখাতে ব্যয় হয়েছিল ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা।অনুষ্ঠানে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন প্রজ্ঞার হেড অব টোব্যাকো কন্ট্রোল প্রোগ্রাম হাসান শাহরিয়ার। সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন জাতীয় তামাকবিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ।বিশেষ অতিথি হিসেবে বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ এবং ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে), বাংলাদেশ’র লিড পলিসি অ্যাডভাইজর মো. মোস্তাফিজুর রহমান যুক্ত ছিলেন।এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) চেয়ারম্যান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।

আরও খবর

🔝