gramerkagoj
বৃহস্পতিবার ● ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ৫ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
গ্রেপ্তার আতঙ্কে সালথাবাসী, আটক ৭৯
প্রকাশ : মঙ্গলবার, ১৩ এপ্রিল , ২০২১, ০৪:৫০:৩৪ পিএম
ফরিদপুর প্রতিনিধি ::
1618311069.jpg
ফরিদপুরের সালথায় লকডাউন না মানাকে কেন্দ্র করে তা-বের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৭৯ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এদিকে পুলিশের অভিযানের কারণে গ্রেপ্তার আতঙ্কে রয়েছে সেখানকার সাধারণ মানুষ। উপজেলার আশেপাশের কয়েকটি ইউনিয়নের গ্রাম পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে।মঙ্গলবার সরেজমিনে ওই সব এলাকার বাড়ি-ঘরগুলোতে নারী আর শিশু ছাড়া কোনো সদস্য দেখা যায়নি। এসময় বাড়ির নারী ও শিশুদের চোখে মুখে ছিলো আতঙ্কের ছাপ। বাইরের মানুষ দেখলেই তারা দৌড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন।গত ৫ তারিখের ঘটনায় এ পর্যন্ত মামলা হয়েছে পাঁচটি। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে ২৬১ জনকে। এছাড়াও এ মামলায় আরো অজ্ঞাতনামা ৩-৪ হাজার জন রয়েছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গতকাল সোমবার রাত পর্যন্ত ৭৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।উপজেলার বারখারদিয়া গ্রামের রবিউল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি জানান, আমরা নিরীহ মানুষ। তবুও সব সময় ভয়ে থাকি। পুলিশ দেখতে দেখতেই সারাদিন কেটে যাচ্ছে। সবাই পালিয়ে রয়েছি।রিপন নামের আরেক ব্যক্তি জানান, শুনেছি পুলিশ যাকে পাচ্ছে তাকেই আটক করছে। এ জন্য ভয়ে রয়েছি।তিনি বলেন, অপরাধ যারা করেছে তাদের খুঁজে বের করে আটক করা হোক। কিন্তু নিরীহ মানুষকে যেন হয়রানি না করা হয়।উপজেলার সিংহপ্রতাপ এলাকার সাজ্জাদ মৃধা জানান, আমি স্কুলের দশম শ্রেণিতে পড়ালেখা করি। আমি সালথার তা-বের খবর জানিই না। কিন্তু পুলিশের ভয়ে সবাই পালাচ্ছে দেখে আমিও পালিয়ে বেড়াচ্ছি।ইলিয়াস মাতব্বর নামের এক ব্যক্তি জানান, গ্রেপ্তার আতঙ্কের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। জমিতে পাট বুনেছিলাম তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাসিব সরকার বলেন, পুলিশকে বলা হয়েছে তা-বের সাথে জড়িত কাউকে আটক করতে গিয়ে নিরীহ কাউকে যেন হয়রানি না করা হয়।তিনি বলেন, নিরীহ কাউকে আটক করা হয়েছে এমন খবর জানা মাত্রই পুলিশকে ছেড়ে দিতে বলেছি।সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসিকুর রহমান বলেন, আমরা তা-বের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৭৯ জনকে আটক করেছি। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে কোনো নিরীহ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে না।ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা বলেন, সালথার সহিংসতার ঘটনার পর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মামলার আসামিদের ধরতে পুলিশ দিনরাত অভিযান চালাচ্ছে। তবে, নিরীহ কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।তিনি বলেন, আমরা চাই না কোনো নিরীহ মানুষ হয়রানির শিকার হোক। আমরা ঘটনার দিনের সংগৃহীত বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ ও বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করে গ্রেপ্তার করছি। এখানে আতঙ্কের কিছু নেই।প্রসঙ্গত, লকডাউন না মানাকে কেন্দ্র করে গত সোমবার বিকেলে সালথার ফুকরা বাজারে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এসিল্যান্ডের গাড়িতে থাকা সদস্যদের সঙ্গে স্থানীয়দের। এরপরই বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষ সালথা উপজেলা পরিষদ, এসিল্যান্ড অফিস ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায়। ঘটনার পর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েকজন নেতা ও ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. খলিলুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় তারা অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দেন।

আরও খবর

🔝