gramerkagoj
শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ১৪ চৈত্র ১৪৩০
gramerkagoj
লকডাউনের আগের দিন যশোরে মানুষের ঢল

❒ ব্যাংকে লেনদেন করা যাবে সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত

প্রকাশ : রবিবার, ৪ এপ্রিল , ২০২১, ১০:০৩:১৩ পিএম
এম. আইউব:
1617552220.JPG
আজ যশোরসহ সারাদেশে লকডাউন কার্যকর হচ্ছে। লকডাউনের আগের দিন রোববার যশোর শহরে মানুষের ঢল নামে। সবগুলো মার্কেট ঠাসাঠাসি ছিল মানুষে। একই অবস্থা ছিল অধিকাংশ ব্যাংকেও। শহরের প্রত্যেকটি সড়কে ছিল যানজট। শহর ও শহরতলির মানুষ কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করে। অধিকাংশ লোক খাদ্যসামগ্রী কেনেন। এর বাইরে অন্যান্য পণ্যও ছিল কেনার তালিকায়। অবস্থা দেখে মনে হয় বড় ধরনের কোনো উৎসবে যোগ দিয়েছে হাজারো মানুষ। অথচ করোনা থেকে রক্ষা পেতে জনসমাগম এড়ানোর কথা বলা হচ্ছে বারবার। সকাল নয়টা। শহরের এইচএমএম রোড। প্রায়সব দোকানপাট খুলে যায়। কোনো কোনো দোকান সাড়ে আটটার মধ্যে খোলা হয়। আগে থেকেই অনেক ক্রেতা দোকান খোলার অপেক্ষায় ছিলেন। খোলার সাথে সাথে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন। দোকানিরা স্বাস্থ্যবিধি না মেনে শেষ সময়ের বেচাকেনায় ব্যস্ত ছিলেন। একই অবস্থা কাপুড়িয়াপট্টি, কালেক্টরেট মার্কেট, জেসটাওয়ার, আরএন রোড, মুজিব সড়কসহ অন্যান্য মার্কেটগুলোতেও। চারদিকে ছিল মানুষ আর মানুষ। কোথাও তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। ব্যাংকগুলোর অবস্থা ছিল আরও ভয়াবহ। সকাল ১০ টার পর ব্যাংকিং লেনদেন শুরু হলেও নয়টার মধ্যে বেশ কয়েকটি ব্যাংকের সামনে ভিড় জমে যায়। ব্যাংক কর্মকর্তারা বলেন, অন্যান্য রোববার যে পরিমাণ গ্রাহক আসেন গতকাল ছিল তার দ্বিগুণ। এ কারণে কোনো কোনো ব্যাংকে সন্ধ্যা পর্যন্ত লেনদেন হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে গ্রাহকরা তাদের প্রয়োজনীয় কাজ সারেন। ডাচবাংলা ব্যাংক যশোর শাখার একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন,‘লকডাউনের খবরে ব্যাপক সংখ্যক গ্রাহক ব্যাংকে টাকা তুলতে আসে। তারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে টাকা নিয়ে যায়। সন্ধ্যা পর্যন্ত লেনদেন অব্যাহত ছিল।’সাজেদুল ইসলাম নামে ডাচবাংলা ব্যাংকে আসা একজন গ্রাহক বলেন,‘অনেকদিন ব্যাংকে আসিনি। লকডাউন কতদিন চলবে তার ঠিক নেই। লকডাউনের মধ্যে ব্যাংক খোলা নাও থাকতে পারে। এ কারণে কিছু টাকা উত্তোলন করে রাখছি। বলা যায় না কখন কী হয়।’একই দৃশ্য ছিল ইসলামী ব্যাংকেও। সেখানেও শ’শ’ মানুষের দীর্ঘ লাইন ছিল। হোসনে আরা নামে এক নারী গ্রাহক বলেন,‘লকডাউনের মধ্যে কী হবে জানিনা। এখনই জিনিসপত্র কিনে না রাখলে সময়মতো পাওয়া যাবে না বলে মনে করছি। এ কারণে ব্যাংকে টাকা নিতে এসেছি।’বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক যশোর শাখার ব্যবস্থাপক নাজমুল করিম বলেন,‘অন্যান্য রোববারের তুলনায় ভিড় একটু বেশি ছিল।’ তবে, সপ্তাহের প্রথম দিন ভিড় বেশি থাকে বলে জানান তিনি। শহরে মানুষের ভিড় বৃদ্ধির কারণে যানজট বেড়ে যায় বহুগুণে। অধিকাংশ সড়কে দীর্ঘ সময় যানজট লেগেই ছিল। একইসাথে রিকশাচালকরা মওকা নেন। ১০ টাকার ভাড়া হলেও আদায় করেন ২০-২৫ টাকা। কোথাও কোথাও ইজিবাইকেও বেশি ভাড়া আদায়ের খবর মিলেছে।   যশোরের বাসটার্মিনাল, রেলস্টেশনে সকাল থেকেই ঘরমুখো মানুষের ভিড় ছিল। মার্কেট এবং গণপরিবহনগুলোতে মানুষের গাদাগাদি অবস্থা করোনার আশঙ্কা বহুগুণে বাড়িয়ে তুলেছে। একইসাথে বাড়ানো হয়েছে ভাড়াও। প্রায়সব গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়নি। পাশাপাশি সিটে যাত্রী বসিয়ে আদায় করা হচ্ছে দ্বিগুণ ভাড়া।  আফরোজা খাতুন নামে একজন আয়কর উপদেষ্টা বলেন, ‘সাতদিনের লকডাউন। কতদিনে শেষ হবে তাও বলা যাচ্ছে না। ওষুধ কিনে এবং বাজার করে রাখতে হবে। হাতে টাকা নেই। সেই কারণে ব্যাংকে এসেছি। কিন্তু, প্রচুর ভিড়। সবারই হয়তো এক প্রয়োজন।’এদিকে, লকডাউনের মধ্যে ব্যাংক চালু রাখার সিদ্ধান্ত দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত সব ব্যাংকে লেনদেন চলবে। অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজে ব্যাংক দুপুর দুটো পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আরও খবর

🔝