gramerkagoj
বৃহস্পতিবার ● ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ৫ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
‘হার্টের রোগীরা করোনায় আক্রান্ত হলে পরিস্থিতি মারাত্মক হতে পারে’
প্রকাশ : রবিবার, ৪ এপ্রিল , ২০২১, ০৭:১২:০৪ পিএম
কাগজ ডেস্ক ::
1617542170.jpg
হার্টের সমস্যায় আক্রান্তরা কোভিড-১৯ সংক্রমিত হলে রোগীর দেহে এর নেতিবাচক প্রভাব মারাত্মক হতে পারে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের এক গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে এ বিষয়ে খবর প্রকাশ করেছে ভয়েস অব আমেরিকা। গবেষণাটি প্রকাশ করেছেন গণমাধ্যমটির সংবাদদাতা ক্যারল পিয়ারসন।গবেষণায় প্রকাশিত সমীক্ষা থেকে জানা গেছে, কোভিড আক্রান্তদের অর্ধেকের বেশি মানুষ জানেন না যে তাদের হৃদযন্ত্রের ওপর এর প্রভাব মারাত্মক হতে পারে। উত্তরদাতাদের প্রায় ৭০ শতাংশ জানেন না যে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্তরা কোভিড-১৯-এর শিকার হলে ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, কার্ডিওলজিস্ট অর্থাৎ হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের কাছে একটি জিনিস এখন একদম পরিষ্কার যে, হার্টের সমস্যায় ভুগছেন এমন ব্যক্তিরা কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হলে তাদের শারীরিক জটিলতার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায় এবং অনেকে এ সম্পর্কে একেবারেই অবগত নন।ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের ডা. সমীর কাপাডিয়া বলেন, ‘অনেকে জানেন যে কোভিড-১৯ ফুসফুসকে প্রভাবিত করে। তবে এটি হৃদযন্ত্রকেও প্রভাবিত করতে পারে, বিশেষ করে হার্টের রক্ত সারা শরীরে সঞ্চালন করার প্রক্রিয়া, রক্তের জমাট বাঁধার প্রক্রিয়া। অর্থাৎ কোভিডে কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা খুব উচ্চ ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘অনেক সময় কোনো লক্ষণ দেখা  না গেলেও কোভিড-১৯ একজন সুস্থ সবল মানুষের হৃদযন্ত্রের ক্ষতি হতে পারে।’সান আন্তোনিওতে অবস্থিত টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্যবিজ্ঞান কেন্দ্র থেকে ড. অ্যালেন অ্যান্ডারসন বলেন, ‘আমরা এমন অনেক রোগীর সংস্পর্শে আসি, যারা সম্ভবত এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল কিন্তু তারা এটি শনাক্তও করতে পারেনি এবং এমনও হয় যে, কয়েক মাস বা বছর পরে হৃদরোগের লক্ষণগুলো তাদের শরীরে দেখা দেয়। সুতরাং কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত রোগীদের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়তে পারে।’ ডা. অ্যান্ডারসন আরো বলেন, ‘যাদের করোনভাইরাস হওয়ার আগে হৃদযন্ত্র পুরোপুরি ভালোভাবে কাজ করত অর্থাৎ কোনো রকম সমস্যা ছিল না, এ রকম রোগীদের ক্ষেত্রেও কিন্তু এটি সত্য।’ ডা. অ্যালেন অ্যান্ডারসন আরো বলেন, ‘তাদের রক্তের এনজাইম চিহ্নিতকরণ মাত্রা এমন মাত্রায় ছিল, যা হার্ট অ্যাটাকের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল। যদিও তাদের করোনারি ধমনি বন্ধ অর্থাৎ ধমনিগুলোতে কোনো প্রকার প্রতিবন্ধকতা না দেখা গেলেও তাদের হৃদযন্ত্রের গতিতে বেশ উচ্চ মাত্রায় পরিবর্তন লক্ষ করা গেছে।’ডা. কাপাডিয়া বলেন, মানসিক চাপও একটি ভূমিকা পালন করে। তিনি বলেন, ‘যেসব মানুষ খুব সহজেই ভয় পান, যারা খুব সহজেই রেগে যান- দেখা গেছে, এ দুটিই রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়ায় সহায়ক হতে পারে এবং হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে।’ কোভিড-১৯-এর কারণে চিকিৎসকরা হৃদযন্ত্রের যে ধরনের ক্ষয়ক্ষতি দেখেছেন, তার মধ্যে কতগুলো এমন আছে, যেগুলো চিকিৎসার সাহায্যে নিরাময় সম্ভব কিন্তু এমন কিছু কিছু সমস্যা দেখা যাচ্ছে, যাতে কোনো ওষুধই কাজ করছে না, এবং এর পরিণতি হচ্ছে মৃত্যু।সান আন্তোনিওর টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্যবিজ্ঞান কেন্দ্রে গবেষকরা অ্যান্টিবায়োটিক এবং ডায়াবেটিসের একটি ওষুধ নিয়ে পরীক্ষা-নিরিক্ষা করছেন। তারা গবেষণা করে দেখতে চাইছেন যে, এই ওষুধগুলো কোভিড-১৯ রোগীদের হার্টের ক্ষতি রোধ করতে পারে কি না। অ্যান্টিবায়োটিকগুলো সর্বদাই ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে। তারা কোভিড-১৯-এর মতো ভাইরাস মোকাবিলায় একেবারেই কার্যকরী নয়। তবে আমাদের শরীরের কোষের ভেতরে মাইটোকন্ড্রিয়া নামক ছোট ছোট শিমের আকারের অংশ রয়েছে। মাইটোকন্ড্রিয়া রাসায়নিক শক্তি উৎপাদন করে এবং হৃৎস্পন্দনসহ আমাদের দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ যে ক্রিয়াগুলো সম্পন্ন করে থাকে, সেগুলোতে সাহায্য করে।বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন, যেহেতু মাইটোকন্ড্রিয়া একধরনের ব্যাকটেরিয়া থেকে বিকশিত হয়েছিল, তাই অ্যান্টিবায়োটিক তাদের করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা করতে পারে এবং এর ফলে মাইটোকন্ড্রিয়া হৃদযন্ত্রকে সুরক্ষা দিতে সক্ষম। বিজ্ঞানীরা লক্ষ করেছেন, ডায়াবেটিসের যে ওষুধটি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে, সেটি মাইটোকন্ড্রিয়ার শক্তি উৎপাদন চালিয়ে যেতেও সহায়তা করছে।   

আরও খবর

🔝