gramerkagoj
শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ১৪ চৈত্র ১৪৩০
gramerkagoj
ফের লকডাউনের খবরে হতাশ যশোরের সাধারণ মানুষ

❒ ব্যবসায়ীদের জরুরি সভায় নানা সিদ্ধান্ত গ্রহণ

প্রকাশ : শনিবার, ৩ এপ্রিল , ২০২১, ০৯:৪৮:১৩ পিএম
শিমুল ভূইয়া : :
1617464960.jpg
আগামীকাল থেকে ফের লকডাউন হওয়ার খবরে চিন্তিত হয়ে পড়েছে যশোরের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। কিছুদিন আগে টানা লকডাউনের ধকল কাটিয়ে ওঠার আগেই আবারো লকডাউনের খবরে হতাশা বিরাজ করছে তাদের মধ্যে। আসন্ন রমজানকে ঘিরে ইতিমধ্যে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। লকডাউনের খবরে গতকাল নতুন করে কোনো পণ্যের দাম বাড়েনি বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।  শনিবার লকডাউনের খবর প্রচারের পরই যশোরে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়। কেউ কেউ ব্যাগ নিয়ে বাজারে ছুটতে শুরু করে। বড়বাজারে বেচাকেনার ধুম পড়ে। কথা হয় বাজার করতে আসা সালামুন হাসানের সাথে। তিনি বলেন, বাড়িতে খাবার যা আছে তাতে একদিন চলবে। দাম বেড়ে যেতে পারে এই আশঙ্কায় যাবে এই আশঙ্কায় তিনি আগেভাগে বাজারে আসেন বলে জানান।এ সময় তিনি বলেন, তার কাছে যে অর্থ আছে তা দিয়ে তিনি পাঁচদিন চলতে পারবেন। লকডাউনের মধ্যে এরপর তিনি কী করবেন তা নিয়ে চিন্তিত। বাজারে আসা অন্তত আরও চার-পাঁচ জন একই ধরনের কথা বলেন।করোনার ঢেউ সামলাতে না পারার কারণে অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের কেউ কেউ এখনো অর্ধেক বেতনেই চাকরি করছেন। এসব মানুষের কাছে জমানো অর্থ নেই বললেই চলে। এমন অবস্থায় নতুন করে লকডাউন হলে তাদের না খেয়ে মরতে হবে বলে জানান অনেকেই।  শুধু তাই না, গতবারের লকডাউনে সরকারের সাথে সাথে বিভিন্ন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান নানাভাবে সাহায্য সহযোগিতা করেছিল। এবার কি তারা সেইভাবে সহযোগিতার হাত বাড়াতে পারবেন? এই প্রশ্নও উঠেছে কারো কারো মধ্যে। তারা আরও বলছেন, গতবারের লকডাউনের সময় সয়াবিন তেল ছিল ৯০ টাকা লিটার। এখন তার দাম ১শ’৩৫ টাকা। এদিকে, লকডাউন নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যেও দেখা দিয়েছে ব্যাপক হতাশা। তাদের মাথায় এক প্রকার হাত উঠেছে। সামনে রমজান ও ঈদ। অনেকে আগে ভাগে বিভিন্ন ধরনের পণ্য মজুত করে রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। এমন সময় লকডাউনের খবরে মুষড়ে পড়েছেন তারা। এসব নিয়ে গতকাল শনিবার যশোরের ব্যবসায়ীরা জরুরি সভা করেন। যশোর বড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মীর মোশারফ হোসেন বাবু বলেন,‘ব্যবসায়ীরা দোকান খোলা রাখতে চান। স্বল্প সংখ্যক ক্রেতাকে প্রবেশের সুযোগ রেখে ব্যবসায়ীরা দোকান ও শপিংমল খোলা রাখতে চান বলে তিনি জানান। এদিকে, লকডাউনের সংবাদ প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলে নানা আলোচনা ও সমালোচনা। অধিকাংশই লকডাউনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে জেলা প্রশাসকের তদারকিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত জোরদারের দাবি জানিয়েছেন। করোনা মহামারি পরিস্থিতি মোকাবিলায় যশোর বড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতিসহ বিভিন্ন সমিতির নেতৃবৃন্দকে নিয়ে গতকাল যে সভা হয় সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে যশোর বড় বাজার, এইচ এম এম রোড. এম এম আলী রোড, মুজিব সড়ক, আরএন রোডসহ বিভিন্ন হাট বাজারের মুখে ব্যারিকেড দেয়া হবে। সেখান থেকে মাস্ক পরিধান ছাড়া কোনো ক্রেতা-বিক্রেতাকে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। একইসাথে করোনা মোকাবিলায় প্রতিটি দোকানের সামনে পর্যাপ্ত হ্যান্ডস্যানিটাইজার, মাস্কসহ করোনা মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় সামগ্রী রাখা হবে। বাজারে প্রবেশদ্বারগুলোতে রাখা হবে মাইকিংয়ের ব্যবস্থা। দোকানিরা নিজস্ব খরচে দড়াটানা, চৌরাস্তা মোড়ে বিশেষ নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগ করে বাজারে আগত লোকজনকে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যাপারে সতর্ক করতে হবে। সভায় প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, বড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ ছাড়াও শাড়ি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি তন্ময় সাহা, ছিট কাপড় ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বিশ^নাথ সাহা, পাদুকা ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি রাশিদুল হক রাজু, স্বর্ণ ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি সঞ্জয় চৌধুরী, আর এন রোড ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সবুজ, কাটপিচ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির মুন্না, সিটিপ্লাজা দোকান মালিক সমিতির সভাপতি শফিকুর আজাদ, মুজিব সড়ক ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি তনুজা রহমান মায়াসহ ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

আরও খবর

🔝