gramerkagoj
মঙ্গলবার ● ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ১০ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj

স্বাধীনতার ৫০ বছরেও শহীদ পরিবার আজও স্বীকৃতি পায়নি

❒ মোরেলগঞ্জে পূর্ব চন্ডিপুর ১৫০ জন পাকসেনাদের গুলিতে গনহত্যা

প্রকাশ : মঙ্গলবার, ২৩ মার্চ , ২০২১, ০৫:১৮:২১ পিএম
গনেশ পাল, মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট) থেকে :
1616498341.jpg
১৯৭১ সাল ৮ই মে, বাংলা ২২ সে বৈশাখ। স্মৃতিময় আজও সেই দিনটিতে কেঁদে বেড়াচ্ছেন শহীদ পরিবারের সন্তানেরা। স্বাধীনতার ৫০ বছর অতিবাহিত হলেও শহীদ পরিবারের সন্তান হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি তারা। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় এখনও সেখানে হয়নি কোন শহীদদের স্মৃতিময় স্বৃতিস্বম্ভ। স্থানীয়দের সহযোগিতায় নামে মাত্র একটি স্মৃতি ফলক রাখা হয়েছে। বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার চিংড়াখালী ইউনিয়নের পূর্ব চন্ডিপুর গ্রাম। ১৯৭১ সালে ৮ মে এ গ্রামে পাক সেনারা চালিয়েছিলেন নির্মম হত্যাযজ্ঞ। তৎকালিন ১৫০ তাদের গুলিতে শহীদ হয়েছিলেন। গনহত্যা এ দিনটিতে শহীদদের স্মরণে প্রার্থনা ও মতুয়া ভক্তদের মিলন মেলায় ২২ শে বৈশাখ প্রতিবছর অনুষ্ঠান হয় এ গ্রামে।    কথা হয় সেদিনের শহীদ দেবেন্দ্র নাথ হালদারের কন্যা মিন্টু রানী হালদারের সাথে। স্মৃতিচরণ দিনটির কথা বলতে গিয়ে অশ্রু চোঁখে বলেন, শহীদ পরিবাওে সন্তান হিসেবে আজও স্বীকৃতি পেলাম না। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীরা হত্যা করেছিলেন পিতা শহীদ দেবেন্দ্র নাথ হালদার, বড় ভাই ইঞ্জনিয়ার বিমল কৃষ্ণ হালদার, কাকা উপেন্দ্র নাথ হালদার, কাকাতো ভাই অনিল কৃষ্ণ হালদার, ঠাকুরদাদা দারিকানাত হালদারসহ তার পরিবারে ৫ জনকে। একইভাবে পূর্ব চন্ডিপুর গ্রামের ১৫০ জন মানুষকে গুলি করে হত্যা করেছিলেন পাক সেনারা। মিন্টু রানী তখন বয়স ১৪/১৫ বছর। তার স্পষ্ট মনে পড়ে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পিরোজপুর থেকে চন্ডিপুর গ্রামের তাদের বাড়ির পিছনে খালের মধ্যে থেকে স্পীড বোর্ড থামিয়ে হঠাৎ উঠে আসে পাকিস্তানি সেনা সদস্য ও স্থানীয় রাজাকাররা। প্রথমে এসে গ্রামে দু’পাশে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের তান্ডব চালায়। তাদের বাড়িতে তখন তাদের গুরুদের বিপীনচাঁদ ঘোষাই এর মৃত্যুবার্ষিকী অনুষ্ঠান চলছিলো। প্রথমে গুলি কওে তার পিতা দেবেন্দ্র নাথ হালদারকে। পরবর্তীতে তার ভাই পালিয়ে থাকা বাথরুমের মধ্যে থেকে ধরে এনে গুলি করা হয়। এরকম একের পর এক তার পরিবারের ৫ জনকে গুলি করে নির্মম হত্যা করে। দূর থেকে পালিয়ে মিন্টু রানী অবলোকন করেন। পারছে না কান্না করতে। নিস্তৃব্ধ। দাড়িয়ে দেখছেন সেই নির্মমতার দৃশ্য।সংবাদকর্মীদের কাছে কথাগুলো বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি। কিছুক্ষন পড়ে নিজেকে সামলে নিয়ে বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর অতিবাহিত হলেও শহীদ পরিবারের সন্তান হিসেবে আজও স্বীকৃতি পাননি এ গ্রামের শহীদ পরিবারের সন্তানেরা। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় হয়নি স্মৃতিস্বম্ভ। প্রয়াত সংসদ সদস্য ডা. মোজাম্মেল হোসেন ও স্থানীয়দেও সহযোগিতায় নামে মাত্র ফলক লিপিবদ্ধ করেছেন। শহীদ পরিবারগুলো তাদের অর্থায়নে নিজ বাড়িতে স্মৃতি স্তম্ভ রেখেছেন অনেকে। গণহত্যায় সেদিনের শহীদদের স্মৃতি স্মরণে সরকারিভাবে স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণ করা এবং শহীদ পরিবারে সন্তান হিসেবে তালিকায় অন্তভূক্ত হওয়ার জন্য স্বীকৃতি দাবি জানান প্রধানমন্ত্রীর কাছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার যুদ্ধে ১৫০ জন গনহত্যায় শহীদ হয়েছিলেন বিষয়টি তিনি অবহিত নন। তবে খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।  

আরও খবর

🔝