gramerkagoj
শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ১৪ চৈত্র ১৪৩০
gramerkagoj
উচ্ছেদ আতঙ্কে এখনও শতাধিক পরিবার, দখল রক্ষায় দৌড়ঝাঁপ

❒ রেলগেট এলাকা থেকে খড়কি কলাবাগান

প্রকাশ : শনিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি , ২০২১, ১০:০৪:১২ পিএম
দেওয়ান মোর্শেদ আলম:
1614441939.jpg
যশোর রেলস্টেশন ও স্টেশন এলাকা আধুনিকায়ন প্রশ্নে চলমান উচ্ছেদ কার্যক্রমে এখনও আতঙ্কে রয়েছে শতাধিক পরিবার। রেল গেট এলাকা থেকে কলাবাগান পর্যন্ত রেল লাইনের পাশে স্থাপনা তৈরি করা লোকজন দখল রক্ষা করতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। যদিও রেলওয়ে থেকে বলা হচ্ছে, উন্নয়ন কার্যক্রমে আরো জমি লাগলে উচ্ছেদ করে তা খালি করা হবে। এক্ষেত্রে কোনো লম্বা নোটিশ দেয়া হবে না। যশোর রেলওয়ের লাইন সম্প্রসারণ ও ইয়ার্ড  নির্মাণ এবং নতুন রাস্তা তৈরি উপলক্ষে স্টেশনের দক্ষিণ পাশে ওই উচ্ছেদ অভিযান চলে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি। একদিকে চলে অবৈধ দখলদারদের হা হুতাশ, অপরদিকে চলে উচ্ছেদ। অল্প সময়ের নোটিশে অভিযান চলায় ক্ষতিগ্রস্ত হন বস্তিবাসী ও ব্যবসায়ীরা। তারা বাণিজ্যিক ও কৃষি লাইসেন্সের বুনিয়াদে ভোগ দখলে ছিলেন বলে দাবি করলেও ৪৮ ঘন্টার নোটিশে জায়গা ছাড়তে হবে এমন চুক্তি থাকায় ওই দিন চোখের জলে বিদায় হয়েছে অর্ধশত পরিবারের লোকজনকে। ১শ’৫০টি স্থাপনা উচ্ছেদের টার্গেটে রেলওয়ের বিভাগীয় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুরুজ্জামানের নেতৃত্বে ওই দিন উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত ৫০ টি স্থাপনা উচ্ছেদ হয়। তবে সূত্রের দাবি, রেল স্টেশন প্ল্যাটফরম ও রেলগেটের দক্ষিণে রেল লাইনের পাশে খড়কি কলাবাগান পর্যন্ত আরো শতাধিক অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। ওই এলাকায় গড়ে ওঠা বস্তির লোকজন ও ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ স্বেচ্ছায় তাদের মালামাল সরিয়ে নেয়া শুরু করেছে। উচ্ছেদ আতঙ্কে সময় কাটাচ্ছে শতাধিক পরিবার। আসলে নতুন নির্মাণে কতটুকু জমি লাগবে বা নতুন লাইন কতদুর টানা হবে এ নিয়ে রেলওয়ে থেকে পরিস্কার তথ্য না পাওয়ায় আতঙ্ক বাড়ছে। আবার নতুন করে মাইকিংয়ের মাধ্যমে নোটিশ করা হবে, নাকি হঠাৎ আবার অভিযান শুরু হবে এ নিয়েও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন ওই এলাকায় বসবাসকারীরা। আগের মাইকিংয়ে রেল স্টেশন এলাকা, প্ল্যাটফর্ম আশেপাশের এলাকা, রেলের জমিতে যেসব স্থাপনা রয়েছে তা সরিয়ে নিতে বলার নির্দেশনা দেয়ায় ওই তালিকায় এখনও শতাধিক স্থাপনা রয়েছে। আবার আগের ঘোষণায় বিদ্যুৎ বিভাগকে জরুরি নোটিশ প্রদান করা হয় সংশ্লিষ্ট স্থাপনাগুলো থেকে মিটার খুলে নিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে। সে নোটিশ অনুযায়ী মিটার খুলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্ন করে রেখেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। কিন্তু বেশিরভাগ স্থাপনা এখন উচ্ছেদের বাইরে রয়েছে। রেলওয়ের পাকশী বিভাগ থেকে বাণিজ্যিক লাইসেন্স নিয়ে, কেউ কৃষি লাইসেন্স নিয়ে রেলওয়ে স্টেট অফিসারের মাধ্যমে ওই জমি বরাদ্দ নিয়ে থাকা লোকজন তাদের মাথার ছাদ টুকু রক্ষায় দৌড়ঝাঁপ করছেন। ওইসব দরিদ্র মানুষের দাবি, সরকারের যে কোনো ভাল উদ্যোগের প্রতি তারা শ্রদ্ধাশীল। তবে তাদের আরো সময় দেয়া বা বিকল্প কোনো জায়গা দেয়ার প্রয়োজন ছিল। যাহোক তাদের মধ্যে এখনও উচ্ছেদ আতঙ্ক থাকায় নিজ উদ্যোগে মালামাল সরিয়ে নিচ্ছেন। কেউবা নতুন আবাসন খুঁজছেন। এ ব্যাপারে রেলওয়ে যশোরের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী ওয়ালিউললাহ গ্রামের কাগজকে জানিয়েছেন, ১৫০টি স্থাপনা রয়েছে উচ্ছেদ তালিকায়। যার সবই অবৈধ স্থাপনা। এস্টেট বিভাগের মাধ্যমে বাণিজ্যিক বা কৃষি লাইসেন্স হিসেবে যে ড্রিলই থাকুক না কেন, ওই বিভাগের সাথে সমন্বয় করেও উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে এবং হবে। ৪ নাম্বার লাইনটি বড় করা, ইয়ার্ড করা বা রাস্তা নির্মাণে আরো জমি প্রয়োজন হলে এই উচ্ছেদ অভিযান তরান্বিত করা হবে। জমি লাগলেই উচ্ছেদ চলবে।  কোনো ওজর আপত্তি কাজে আসবে না। 

আরও খবর

🔝