gramerkagoj
বৃহস্পতিবার ● ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ১২ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
সরিষার বাম্পার ফলন ও দাম ভালো হওয়ায় খুশি কৃষক
প্রকাশ : শুক্রবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি , ২০২১, ০৩:৫৪:০২ পিএম
হিলি প্রতিনিধি::
1614334049.jpg
একটা সময় ছিল যখন হিলিতে বোরো ও আমন ধানের আবাদ ছাড়া অন্য কোনও ফসল চাষা করতেন না চাষিরা। বর্তমানে দুই ফসলি জমিকে তিন বা চার ফসলি করে গড়ে তুলতে রবি শষ্য আবাদের দিকে ঝুঁকেছেন তারা। বোরো ও আমন মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে জমি ফেলে না রেখে তাতে সরিষা চাষ শুরু করেছেন। তুলনামূলক খরচ কম হওয়ায় বাড়তি কোনও তদারকির প্রয়োজন নেই সরিষা চাষে। এতে করে খরচ কম ও লাভজক হওয়ায় এবং সরিষার গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করতে পারায় ও বাড়তি অর্থ দিয়ে বোরো আবাদ ভালোভাবে করতে পারায় হিলিতে দিন দিন বাড়ছে সরিষার আবাদ।চলতি রবি মৌসুমে হিলিতে সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। দাম ভালো পাওয়ায় দারুন খুশি কৃষকরা। আগামীতে তারা সরিষা চাষাবাদের পরিমাণ বাড়ানোর চিন্তা করছেন তারা।হিলির ইসমাইলপুরের কৃষক আলম হোসেন বলেন, ‘সাধারণত আমন ধান কাটার পর বোরো ধান লাগানোর আগ পর্যন্ত এই মাঝামাঝি সময়ে প্রায় ৩ মাস জমি পতিত থাকে। তাই সেসময় জমিগুলো ফেলে না রেখে বাড়তি আয়ের জন্য আমরা তাতে সরিষা চাষাবাদ শুরু করেছি। সরিষা লাগানোর পর কাটা মাড়াই শেষে সব খরচ বাদ দিয়ে সরিষা চাষে লাভ কমপক্ষে ৩-৪ হাজার টাকা লাভ হয়। গতবছরের মতো এবারও তিন বিঘা জমিতে সরিষা লাগিয়েছি গতবারও লাভ হয়েছে। এবারও ভালো দাম থাকায় লাভবান আমরা। বাড়তি এই টাকা দিয়ে আবার আমরা সেই জমিতে বোরো ধান রোপণ করি। একে তো সরিষা চাষাবাদের কারণে জমির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধি পায় যার কারণে বোরো আবাদে জমিতে সারও তেমন দিতে হয় না। এতে করে বোরো ধানেও আমাদের লাভ হয়। এছাড়া সরিষার গাছ পরিবারের রান্নার জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হয় এটিও একধরনের লাভ।’হিলির ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের সামসুল আলম বলেন, অন্য কৃষকদের মুখে লাভের কথা শুনে আমি এবারই প্রথম সরিষা লাগিয়েছিলাম। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় সরিষার ভালো ফলন হয়েছে। দামও ভালো রয়েছে, তাতে বেশ লাভ হবেই বলে মনে হচ্ছে।হিলির চন্ডিপুর গ্রামের সিদ্দিক বলেন, বিগত কয়েক বছর ধরেই সরিষা চাষাবাদ করে আসছি। এবারে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও সরিষাতে পোকামাকড়ের তেমন আক্রমণ না থাকায় ভালো ফলন হয়েছে। বিঘা প্রতি ৫-৬ মণ করে সরিষা হচ্ছে, বর্তমানে বাজারে হলুদ বর্ণের সরিষা ২২০০-২৫০০ টাকা, কালো বর্ণের সরিষা বিক্রি হচ্ছে ১৮০০-২০০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। তাতে করে সরিষা চাষাবাদে সবকিছু বাদ দিয়ে বিঘাতে ন্যূনতম ৩-৪ হাজার টাকা করে আমাদের লাভ হবে। হাকিমপুর উপজেলা কৃষি অফিসার ড. মমতাজ সুলতানা বলেন, চলতি মৌসুমে হাকিমপুর উপজেলায় ৮২০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও ৮২৫ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। ইতোমধ্যে সরিষা কাটা শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত ৪৫০ হেক্টর জমির সরিষা কাটা হয়েছে। এবারে গড় ফলন হয়েছে ১.৪৫ টন প্রতি হেক্টর জমিতে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া ভালো থাকায় এবারে সরিষার ভালো ফলন হয়েছে। দামও ভালো রয়েছে যার কারণে কৃষকরা সরিষা চাষ লাভজনক হওয়ায় খুশি তারা। এছাড়াও সরিষা চাষে উদ্ভুদ্ধ করতে কৃষকদের সরকারিভাবে বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরণসহ ভালো ফলনের জন্য কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সবধরনের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। তাতে করে আগামীতে সরিষার চাষাবাদ আরও বাড়বে বলে আমরা আশা করছি।

আরও খবর

🔝