প্রকাশ : সোমবার, ২২ ফেব্রুয়ারি , ২০২১, ০৯:১৪:৩৮ পিএম
শেষ পর্যন্ত যশোর পৌরসভা নির্বাচনের জট খুলেছে। আগামী মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। পূর্ব নির্ধারিত ২৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন হচ্ছে না। গতকাল একটি রিটের আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির স্থগিতাদেশ বাতিল আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চ বহাল রাখার পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা নির্বাচনের বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন। সোমবার যশোর সার্কিট হাউজে খুলনা বিভাগের তিনটি পৌরসভার নির্বাচন নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংয়ে তিনি যশোর পৌরসভার নির্বাচন নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি খুলনা বিভাগের চারটি পৌরসভায় নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। সেই মোতাবেক গত ২০ জানুয়ারি তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ২১ জানুয়ারি থেকে যথারীতি নির্বাচনী কাজ শুরু করে চারটি পৌরসভার রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়। তিনটি পৌরসভায় সকল কাজ সম্পন্ন হলেও যশোর পৌরসভার রিটার্নিং অফিসার শেষ তুলতে পারেননি। তিনি মনোনয়নপত্র বিক্রি, জমা এবং যাচাই-বাছাই সম্পন্ন করেন। এ অবস্থায় গত ৯ ফেব্রুয়ারি যশোর পৌরসভার নির্বাচন স্থগিত করতে হাইকোর্টে রিট হয়। রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ নির্বাচন না করতে তিন মাসের জন্য স্থগিতাদেশ দেন। সীমানা নির্ধারণ ও ভোটার তালিকা সংশোধনের দাবিতে ওই রিট হয় হাইকোর্টে। এ ঘটনায় আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। নির্বাচন স্থগিতের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার বিচারপতির আদালতে শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও ওই চেম্বারের বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান তা মুলতবি করেন। সর্বশেষ, ১৮ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ স্থগিত করার আদেশ দেন। একইসাথে আপিল আবেদনটির শুনানির জন্য ২২ ফেব্রুয়ারি নিয়মিত বেঞ্চে পাঠানোর আদেশ দেন তিনি। সর্বশেষ, আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চ গতকাল শুনানি শেষে চেম্বার বিচারপতির নির্বাচন স্থগিতাদেশ বাতিলের আদেশ বহাল রাখেন। ফলে, যশোর পৌরসভার নির্বাচন করা নিয়ে সব ধরনের বাধা দূর হয়েছে। তবে, নির্ধারিত ২৮ ফেব্রুয়ারি এই নির্বাচন হচ্ছে না। কারণ হিসেবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা বলেন, আদালতে রিট হওয়ার কারণে যেহেতু কিছুদিন নির্বাচনী কার্যক্রম বন্ধ ছিল এ কারণে সেই পরিমাণ সময় বৃদ্ধি করে ওই কাজগুলো করতে হবে। আর এটি করতে ১৫ থেকে ২০ দিন লেগে যেতে পারে। এসব কারণে আগামী মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের যেকোনো দিন যশোর পৌরসভায় নির্বাচন হতে পারে বলে ধারণা দেন সিইসি। তারপরও সবকিছু নির্ভর করবে নির্বাচন কমিশনের সভার উপর। কমিশনের সভার পর নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করা হবে বলে জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার। গতকাল যশোর সার্কিট হাউজে যশোর, কেশবপুর, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ ও মহেশপুর পৌরসভার রিটার্নিং অফিসার, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সাথে রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন নুরুল হুদা।এ সময় তিনি বলেন, কেশবপুর, কালীগঞ্জ ও মহেশপুর পৌরসভার নির্বাচনে কোনো রকম হুমকি নেই। সবকিছু ঠিকঠাক রয়েছে। এসব পৌরসভায় ইভিএমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ইভিএমে ভোটগ্রহণকারীদের প্রশিক্ষণ চলছে বলে জানান তিনি। সিইসি বলেন, আগের তফসিল ও ভোটার তালিকা অনুযায়ী যশোর পৌরসভায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। যশোর সার্কিট হাউজের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনের আইডিইএ প্রকল্পের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল কাশেম মো. ফজলুল কাদের, খুলনা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ইউনুছ আলী, যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান,পুলিশসুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার, ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ, পুলিশসুপার মুনতাসিরুল ইসলাম, যশোর পৌরসভার রিটার্নিং অফিসার হুমায়ুন কবির প্রমুখ।