প্রকাশ : শনিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি , ২০২১, ০৪:১৩:৪৮ পিএম
চলতি শুষ্ক মৌসুমে ফরিদপুরে পদ্মা নদীতে আবারও নাব্যসংকট দেখা দিয়েছে। এতে পণ্যবাহী জাহাজ, কার্গো ও বড় ট্রলার চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। দূর-দূরান্ত থেকে আসা এসব পণ্যবাহী জাহাজ নৌবন্দরে ভিড়তে পারছে না। ফলে নৌবন্দরের শুল্ক আদায়ও কমে গেছে। এসব নৌযান থেকে পণ্য খালাস করতে অতিরিক্ত মাশুল গুনতে হচ্ছে।সংশ্লিষ্টরা জানান, গত ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ পদ্মার পানি কমতে শুরু করে। তখন থেকেই এসব নৌযান নাব্যসংকটের কবলে পড়ে সিঅ্যান্ডবি ঘাটের বন্দরে আসতে বাধাপ্রাপ্ত হয়। বর্তমানে এই দুরবস্থা চরমে পৌঁছেছে। বর্তমানে নাব্যসংকট উত্তরণে বিআইডব্লিউটিএ একটি ড্রেজিং মেশিন বসিয়ে খননকাজ করছে। তবে খননের কয়েক দিনের মধ্যেই আবার বালু এসে ভরাট হয়ে যাচ্ছে।সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, দেশের দক্ষিণাঞ্চলসহ বৃহত্তর ফরিদপুরের ব্যবসায়ীদের পণ্য আনা-নেওয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ নৌবন্দরটি শত বছরের প্রাচীন। কিন্তু বর্তমানে নাব্য না থাকায় এবং অসংখ্য ডুবোচর সৃষ্টি হওয়ায় এসব পণ্যবাহী নৌযান বন্দরে আসতে পারছে না। সরেজমিনে দেখা গেছে, নৌবন্দরে ভিড়তে না পেরে অনেক দূরে দিঘিরচর, ভূঁইয়াবাড়ি ঘাট, খুশির বাজার, বাইল্যাহাটা, হাজিগঞ্জের চর, চরভদ্রাসনের এমপিডাঙ্গি, গোপালপুরসহ বিভিন্ন স্থানে নদীর তীরে পণ্যবাহী জাহাজ, কার্গো ও বড় ট্রলার ভেড়ানো। নারায়ণগঞ্জের মেঘনা ঘাট থেকে আসা সিমেন্টবাহী জাহাজের মাস্টার দুলাল হাওলাদার বলেন, চরভদ্রাসনে এসে ঠেকে গেছি। আমার জাহাজে ১২ হাজার বস্তা সিমেন্ট আটে। কিন্তু পর্যাপ্ত গভীরতা নেই বলে ৮ হাজার আনতে হয়েছে। তিনি বলেন, নৌবন্দরে ভিড়তে পারলে প্রতি বস্তায় ১৪ টাকা পেতাম। কিন্তু এখন এই ভাড়ার অর্ধেক দিয়ে আরেকটি ট্রলার ভাড়া করে মাল খালাস করতে হচ্ছে। এসব কারণে স্টাফ খরচ এবং অন্যান্য ব্যয়ও বেড়ে গেছে। এ ছাড়া জানমালের নিরাপত্তাহীনতাও দেখা দিয়েছে।ড্রেজিংয়ের পরও কেন নাব্যতা আসছে না এর কারণ জানতে চাইলে সেখানে ড্রেজিংয়ের কাজে নিযুক্ত ব্যক্তিরা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, ড্রেজিংয়ের পরপরই আবার নতুন বালু এসে ভরে যাচ্ছে। পানিতে প্রচুর পলি রয়েছে।ফরিদপুর নৌবন্দরের পণ্য খালাসে নিযুক্ত প্রতিষ্ঠান লাকি ট্রান্সপোর্টের ম্যানেজার আবদুস সালাম বলেন, প্রায় ৮ হাজার শ্রমিক এই নৌবন্দরে কাজ করেন। অনেক ট্রান্সপোর্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীও রয়েছেন। জাহাজ ও কার্গো না আসায় তারা কাজ পাচ্ছেন না। এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএর সংশ্লিষ্ট পোর্ট অফিসার মাসুদ পারভেজ বলেন, নৌবন্দরটিকে সচল করতে নৌ চ্যানেলে ড্রেজিং করা হচ্ছে। তবে এখনো পথটি বড় নৌযান চলাচলের উপযুক্ত হয়নি। আশা করছি চলতি মৌসুমেই এই সংকট কেটে যাবে।