gramerkagoj
বৃহস্পতিবার ● ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ১২ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj

❒ যশোরে প্রতি বছর তিন লাখ মেট্রিকটন সবজি উৎপাদন হয়

চাষিকে বাঁচাতে সবজির দাম নির্ধারণের চিন্তা
প্রকাশ : মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারি , ২০২১, ০৭:২৫:১০ পিএম
এম.আইউব ::
1610459292.jpg
চাষিকে বাঁচাতে সবজির দাম নির্ধারণ করতে যাচ্ছে সরকার। মূল্য নির্ধারণের বিষয়টি বর্তমানে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।এর অংশ হিসেবে যশোরের সবজি চাষিদের অবস্থা জানতে সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব দেলোয়ার হোসেন। তিনি সদর উপজেলার বারীনগর বাজারে যান। সেখানে তিনি দেখেছেন প্রতি কেজি ফুলকপি দু’-তিন টাকায় ও বেগুন চার থেকে সাত টাকায় পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। এ অবস্থা দেখে তিনি খানিকটা বিস্মিত হন। গত এক সপ্তাহের বেশি ধরে সবজির দাম এতটাই নি¤œমুখী যে, কৃষক এক প্রকার সর্বস্বান্ত হচ্ছেন। সবজি সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না থাকার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে বলে চাষিরা যুগ্ম সচিবকে অবহিত করেছেন। এ সময় চাষিরা প্রতি কেজি সবজির দাম ২০ টাকা নির্ধারণ করার দাবি জানান। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর যশোর জেলা কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, এই জেলায় বছরে তিন লাখ মেট্রিকটন সবজি উৎপাদন হয়। সপ্তাহের দু’দিন বারীনগর বাজারে সবজির হাট বসে। রবি ও বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হাট থেকে কমপক্ষে ৩৫ ট্রাক করে নানা ধরনের সবজি যায় দেশের বিভিন্ন জেলায়। এর বাইরে প্রতিদিন ১০ ট্রাক করে সবজি যশোর থেকে সরবরাহ করা হয় বলে জানান জেলা বাজার কর্মকর্তা সুজাত হোসেন খান। তিনি জানান, যশোর থেকে প্রতিদিন ১০ মেট্রিকটন বাধাকপি বিদেশে রপ্তানি হবে। এ অবস্থায় এখানকার চাষিকে রক্ষা করতে কাজ করছে কৃষি মন্ত্রণালয়। চাষিদের এ ধরনের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে যুগ্মসচিব দ্রুত মাল্টিপারপাস হিমাগার এবং অ্যাসেম্বল সেন্টার নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি এ সময় যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করে বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন। সবজি চাষিদের দুর্দশা লাঘবে যশোরে দু’টি মাল্টিপারপাস হিমাগার করার সিদ্ধান্ত রয়েছে। এটি করার মাধ্যমে চাষির উৎপাদিত সবজি রক্ষার চেষ্টা করছে কৃষি মন্ত্রণালয়। মাল্টিপারপাস হিমাগার নির্মাণ সম্পন্ন হলে কৃষকের ঘাম ঝরানো সবজি সংরক্ষণ করা যাবে এখানে। চাষি রক্ষা পাবেন মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের জিম্মিদশা থেকে। কৃষক ইচ্ছেমতো তাদের উৎপাদিত সবজি সংরক্ষণ করে ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করতে পারবেন। দীর্ঘদিন ধরে যশোরের সবজি চাষিরা নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অনেক কষ্ট করে বিভিন্ন ধরনের সবজি উৎপাদন করলেও তা যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে পারেন না। ফলে, বড় একটি অংশ নষ্ট হয়ে যায়। পাশাপাশি জিম্মি হয়ে পড়েন ফড়িয়াদের কাছে। কারণ, সবজি সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকার সুযোগ কাজে লাগায় ফড়িয়ারা। তারা কম মূল্যে কৃষককে সবজি বিক্রি করতে বাধ্য করে।যশোরে ব্যাপক পরিমাণে সবজি উৎপাদন হয়ে থাকে। সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় ন্যায্যমূল্য বঞ্চিত হচ্ছেন চাষি। এ কারণে ব্যাপকভাবে সবজি নষ্ট হচ্ছে। কৃষকের দুরবস্থার কথা বিবেচনা করে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর যশোরে দু’টি মাল্টিপারপাস হিমাগার নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। এই দু’টি হিমাগার নির্মাণ করা হবে সদর উপজেলার বারীনগরে এবং কেশবপুরের ভান্ডারখোলায়। জেলা বাজার কর্মকর্তা সুজাত হোসেন খান জানিয়েছেন,মাল্টিপারপাস হিমাগারে পিঁয়াজ, বিভিন্ন ধরনের সবজি, মাছসহ পচনশীল পণ্য সংরক্ষণ করা যাবে। এসব পণ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা গেলে ব্যাপকভাবে লাভবান হবেন চাষি। পাশাপাশি সবজির দাম যদি নির্ধারণ করা হয় তাহলে কৃষক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবেন।  এ বিষয়ে আসাদুল ইসলাম, শাহারুল ইসলাম, আলমগী বিশ্বাস ও সঞ্জিব বিশ্বাস নামে কয়েকজন চাষি বলেন, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের কথা শুনি। কিন্তু বাস্তবায়ন হতে দেখি খুব কম। হিমাগার নির্মিত হলে অনেক চাষি ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হবেন। একইভাবে অর্থনীতির গতিও বাড়বে।

আরও খবর

🔝