gramerkagoj
বৃহস্পতিবার ● ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ১২ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
অভয়নগরে স্কুলমাঠ দখলমুক্ত করল শিক্ষার্থীরা
প্রকাশ : শনিবার, ২ জানুয়ারি , ২০২১, ০৮:০১:১০ পিএম
কামরুল হাসান, অভয়নগর (যশোর) :
1609596212.jpg
অভয়নগরে ঘোপেরঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ দখলমুক্ত করেছে শিক্ষার্থীরা। শনিবার দুপুরে প্রাক্তন ও নতুন শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে অবৈধ স্থাপনা। এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার বেলা ১১টার সময় স্কুলের সামনের সড়কে খেলার মাঠ দখলমুক্ত করার দাবিতে প্রাক্তন শিক্ষার্থী, নতুন পাঠ্যবই নিতে আসা শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী মানববন্ধন করে। পরবর্তীতে যশোর-খুলনা মহাসড়কের চেঙ্গুটিয়া বাজারে সর্বস্তরের জনগণের অংশ গ্রহণে পূণরায় মানববন্ধন ও মহাসড়ক অবরোধ করা হয়। বন্ধ হয়ে যায় যানবাহন চলাচল। মানববন্ধনে বক্তৃতা করেন ঘোপেরঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোকছেদুর রহমান, প্রধান শিক্ষিকা রিতা পোদ্দার, চেঙ্গুটিয়া বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক জামির মোল্লা, প্রাক্তন ছাত্র শফি কামাল, অভিভাবক ফাতেমা বেগম এবং পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র রহমত। বেলা আনুমানিক ১২টার সময় যশোর-৪ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য রণজিত কুমার রায়ের ছেলে বাঘারপাড়া উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক রাজিব রায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং অবৈধ দখলের নিন্দা জানিয়ে চলে যান। এর কিছুক্ষণ পর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী স্কুল মাঠের অবৈধ দখল (টিনের প্রাচীর) ভেঙে ফেলে। পরে দখলমুক্ত মাঠে খেলাধুলা শুরু করে শিক্ষার্থীরা। এ ব্যাপারে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রিতা পোদ্দার বলেন, ১৯২৮ সালে স্থানীয় দানশীল মানুষদের দেয়া ৫৮ শতাংশ জমিতে বিদ্যালয় ও খেলার মাঠ গড়ে ওঠে। যে মাঠে প্রায় ৯২ বছর ধরে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা ও জাতীয় অনুষ্ঠান করে থাকে। করোনার কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় গত ১৫/২০ দিন পূর্বে স্থানীয় একটি কুচক্রী মহল খেলার মাঠের মধ্যখানে প্রায় পাঁচ শতশ জমি অবৈধভাবে দখল করে এবং রাতের আধারে টিনের প্রাচীর নির্মাণ করে। তিনি আরও জানান, এ ব্যাপারে গত ১ জানুয়ারি ‘স্কুলের মাঠে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ প্রসঙ্গে’ যশোর জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বরাবর লিখিত অভিযোগপত্র ও ৫৮ শতাংশ জমির প্রত্যয়নপত্র দেয়া হয়েছে।বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোকছেদুর রহমান জানান, তৎকালীন সময় চেঙ্গুটিয়া বাজারের আনন্দ চন্দ্র সাহার ছেলে শশীভূষণ সাহা স্কুল নির্মাণের জন্য ৫৮ শতাংশ জমি দান করেছিলেন। যা মহাকাল মৌজার ২০৩ দাগে ৫৬৬ খতিয়ানে ০৯ শতক, ২০৪ দাগে ২১৩ খতিয়ানে ২১ শতক ও ২১৫ দাগে ২১৩ খতিয়ানে ২৮ শতক মোট ৫৮ শতাংশ। সেই জমির পাঁচ শতাংশ জমি স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি, ভূমি অফিস ও প্রশাসনের কয়েক কর্মকর্তার সহযোগিতায় জাল দলিলের মাধ্যমে উপজেলার চেঙ্গুটিয়া গ্রামের বাহিরঘাট এলাকার আলতাফ গাজীর ছেলে ইকরামুল কবীর দখল করেন। দখলের পরই স্কুলের দু’টি মেহগনী গাছ কেটে নিয়ে যায়। গাছ দু’টির বাজার মূল্য প্রায় এক লাখ ৫০ হাজার টাকা। শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও ম্যানেজিং কমিটির পক্ষ থেকে তদন্তপূর্বক দখলকারীসহ সহযোগীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেন তিনি।         এ ব্যাপারে ইকরামুল কবীরের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, ২০২০ সালে জাহান আলী বিশ্বাস, আব্দুল মতিন বিশ্বাস, শাহীদুজ্জামান শাহিন, শাসছুন্নাহার, মনোয়ারা ও আনোয়ারা খাতুনের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকায় পাঁচ শতশ জমি কেনেন। যার সকল কাগজপত্র আছে। স্কুলের খেলার মাঠ অবৈধভাবে দখলের বিষয়টি সত্য নয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজমুল হুসেইন খাঁন বলেন, ‘বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি। দ্রুত উভয়পক্ষকে কাগজপত্র সহকারে তলব করা হবে। আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করা হবে’।

আরও খবর

🔝