gramerkagoj
শুক্রবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ৬ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj

❒ আর থাকবে না লো ভোল্টেজ বিড়ম্বনা

যশোরে হচ্ছে হাইভোল্টেজ ক্যাপাসিটির ২৩০/১৩২ কেভি গ্রীড চলছে শত কোটি টাকার কর্মযঞ্চ

❒ ৪শ’ মেগাওয়াট নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ

প্রকাশ : রবিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি , ২০২৪, ১২:০১:০০ এ এম , আপডেট : মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল , ২০২৪, ১০:৪৩:০৫ পিএম
দেওয়ান মোর্শেদ আলম:
GK_2024-02-03_65be5ea6c8d63.jpg

যশোর জেলার কোথাও আর থাকবে না লো ভোল্টেজ বিড়ম্বনা। জেলার চাহিদামত ৪শ’ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ নিরবিছিন্নভাবে সরবরাহ করা যাবে। যশোরের চাঁচড়া ১৩২ /৩৩ কেভি গ্রীড উপ কেন্দ্রে উন্নীত হতে যাচ্ছে ২৩০/১৩২ ভেভিতে। বাংলাদেশ ও চায়না সরকারের চুক্তির জি টু জি প্রকল্পের আওতায় যশোরে চলছে শত কোটি টাকার কর্মযজ্ঞ। কেন্দ্রটি হবে গ্যাস আইসুলেটেড। ভারত থেকে আমদানি করা বিদ্যুৎ সফলভাবে সঞ্চালন করা হবে।
এক কথায় আরো অত্যাধুনিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে এবং বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগকে আরো সক্রিয় করতে পাওয়ার গ্রীড কোম্পানী অব বাংলাদেশ লিমিটেড জোরেসোরে মাঠে নেমেছে।
পাওয়ার গ্রীড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড পিজিসিবির এ অঞ্চলের গ্রীড মেইনটেন্স অফিস ঝিনাইদহ ও যশোরে চাঁচড়া গ্রীড উপ কেন্দ্র থেকে তথ্য মিলেছে, উচ্চ ভোল্টেজের সঞ্চালন নেটওয়ার্ক স্থাপনের মাধ্যমে পর্যাপ্ত ও নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি লোভোল্টেজ সমস্যার সমাধান করতে প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। বাংলাদেশ সরকার চায়না সরকারের মধ্যে আথির্ক চুক্তি জি টু জি প্রকল্পের আওতায় সারা দেশের বিভিন্ন উপকেন্দ্র ও ন্যাশনাল গ্রীডকে ক্রমোন্নয়নের মাধ্যমে আরো কার্যকর করে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। একনেকে পাশ হওয়ার পর শুরু হয় কার্যক্রম। এর মধ্যে যশোর জেলার গণমানুষের ৪শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চাহিদা উচ্চ ভোল্টেজের সঞ্চালনে নেটওয়ার্ক স্থাপন করতে চাঁচড়া উপকেন্দ্রটি ১৩২/৩৩ কেভি গ্রীড থেকে ২৩০/১৩২ ভেভিতে উন্নীত করতে নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে।
এর আগে ২০২২ সালে জমি নির্ধারণ করা হয়। প্রায় ৩ একর জমি জুড়ে হচ্ছে এবারের গ্রীড উপ কেন্দ্রটি। ২০২৪ এর শুরুতেই কাজ জোরেসোরে এগিয়ে চলেছে চাঁচড়ায়। নির্মাণ হলে পর্যাপ্ত ও নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি লো-ভোল্টেজ সমস্যার সমাধান করা যাবে নিমিশেই।
যশোরে বিদ্যূৎ বিভাগ সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দেশের পটুয়াখালী পায়রা, খুলনা রামপাল থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ও ভারত (আদানী, ঝাড়খন্ড) থেকে আমদানি করা বিদ্যুৎ নির্ভরযোগ্যভাবে সঞ্চালন হবে চাড়াগ্যপি উপকেন্দ্রে। ইতিমধ্যে ২৩০/১৩২ ভেভিতে উন্নীত ঝিনাইদহ ও ঈশ্বরদীর গ্রীড উপকেন্দ্রের সাথে যুক্ত হয়ে সঞ্চালন করবে চাঁচড়া গ্রীড উপকেন্দ্রটি। বিদ্যুৎ বিভাগ সংশ্লিষ্টরা আরো জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন নির্মাণ এবং সম্প্রসারণ কার্যক্রম বিভিন্ন লটে বিভাজন করা হয়েছে। মূলত ভারত থেকে আমদানি করা বিদ্যুৎ নির্ভরযোগ্যভাবে সঞ্চালনের জন্য এ প্রকল্পটি একনেকের সভায় অনুমোদন দেয়া হয়।
তথ্য মিলেছে, সারা দেশে এখন পাওয়ার গ্রীড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড পিজিসিবি’র বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য ৪০০ কেভি ক্ষমতাসম্পন্ন, ২৩০ কেভি ক্ষমতাসম্পন্ন এবং ১৩২ কেভি ক্ষমতাসম্পন্ন সঞ্চালন লাইন রয়েছে। এছাড়া ৪০০ কেভি ক্ষমতাসম্পন্ন একটি এইচভিডিসি ব্যাক টু ব্যাক স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও ৪০০/২৩০ কেভি গ্রীড সাবস্টেশন, ৪০০/১৩২ কেভি গ্রীড সাবস্টেশন, ২৩০/১৩২ কেভি গ্রীড সাবস্টেশন, ২৩০/৩৩ কেভি গ্রীড সাবস্টেশন এবং ১৩২/৩৩ কেভি গ্রীড সাবস্টেশন রয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে যশোরের চাঁচড়ায় ১৩২ /৩৩ কেভি গ্রীড উপ কেন্দ্র তার সার্ভিস দিয়ে আসছে। আর আসছে চমক, কাঙ্খিত ২৩০/ ১৩২ কেভির সাব স্টেশন।
এ ব্যাপারে এ অঞ্চলের গ্রীড মেইনটেন্স অফিস ঝিনাইদহের এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার শাহিদুজ্জামান গ্রামের কাগজকে জানিয়েছেন, যশোরের চাঁচড়ার গ্রীড উপকেন্দ্রটিতে ২৩০/১৩২ কেভির কাজ আগামী ২ থেকে আড়াই বছরের মধ্য শেষ হবে বলে টার্গেট রয়েছে। পিজিসিবি সারাদেশে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের দায়িত্বে নিয়োজিত একমাত্র প্রতিষ্ঠান। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সবার নিকট মানসম্পন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য নির্ভরযোগ্য সঞ্চালন ব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজ করে আসছে। প্রতিষ্ঠানটি চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে প্রতিনিয়ত বিদ্যুৎ সঞ্চালন সিস্টেমের পরিবর্ধন করে যাচ্ছে। গবেষণা প্রকৌশল ডিজাইন প্রস্ততের মাধ্যমে সঞ্চালন লাইন এবং গ্রীড উপকেন্দ্রের সক্ষমতা বৃদ্ধি করে যাচ্ছে। যশোরে কমপক্ষে শত কোটি টাকার কাজ হচ্ছে। বিদ্যুৎ সেক্টরে সরকারের মহাপরিকল্পনার সাথে সামঞ্জস্যতা রক্ষাকল্পে সরকারের ‘‘ভিশন ২০৪১” বাস্তবায়নে পিজিসিবি শক্তিশালী গ্রীড নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার কাজ ক্রমশ জোরদার করছে।
এদিকে, যশোর চাঁচড়া গ্রীড উপ কেন্দ্রের ইনচার্জ সহকারী প্রকৌশলী সাজিত ইমাম, উপ সহকারী প্রকৌশলী শেখ একরামুল হুসাইন ও গাজী মাজহারুল আনোয়ার জানিয়েছেন, এগিয়ে চলেছে ২৩০/১৩২ ভেভিতে উন্নীত করতে নির্মাণ কাজ। যশোরের সব মানুষের ঘরে ঘরে উচ্চ ভোল্টেজে বিদ্যুৎ পৌঁছাবে। লোভোল্টেজ বিড়ম্বনা আর থাকবে না। হাইভোল্টেজ ক্যাপাসিটির বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিৎ করা যাবে। দেশের উৎপাদিত বিদ্যুৎ ও ভারত থেকে আমদানি করা বিদ্যুৎ সঞ্চালন হবে এই ২৩০/১৩২ ভেভিতে। সব মিলিয়ে যশোরে বিদ্যুৎ সেক্টরে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে এই ২৩০/১৩২ ভেভির নয়া গ্রীড।

 

 

 

 

আরও খবর

🔝