gramerkagoj
শুক্রবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ৬ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj

❒ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভবন ধস

আবারও আলোচনায় ‘মজিদ সন্স কনস্ট্রাকশন লিমিটেড’
প্রকাশ : বুধবার, ৩১ জানুয়ারি , ২০২৪, ০৫:০৭:০০ পিএম
হাফিজুর রহমান পান্না, রাজশাহী ব্যুরো:
GK_2024-01-31_65ba17e3236df.jpg

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের বালিশকাণ্ডের বেশ আলোচিত ছিল তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তাদেরই একটি ‘মজিদ সন্স কনস্ট্রাকশন লিমিটেড’। বালিশকাণ্ডের পর রাজশাহীতে ঘাঁটি গেড়ে বসেছে ঔই প্রতিষ্ঠানটি।
এরইমধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি), রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট), সিটি করপোরেশনসহ বেশ কয়েকটি বড় বড় প্রকল্পের নির্মাণ কাজ পেয়েছে। এবার রাবির একটি ভবনের ছাদ ভেঙে পড়ায় আবার আলোচনায় এসেছে ‘মজিদ সন্স কনস্ট্রাকশন লিমিটেড’। ভবনটি নির্মাণ করছেন তারা।
মঙ্গলবার দুপুরে নির্মাণাধীন ভবনটির ছাদ ভেঙে পড়ে। রাবি প্রশাসন বলছে, দোষ থাকলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রকল্পের চারটি ভবনে আসবাবপত্র ও ইলেকট্রনিক পণ্য সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয় তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো সাজিন এন্টারপ্রাইজ, মজিদ সন্স কনস্ট্রাকশন লিমিটেড ও জিকেপিবিএল-পায়েল-এইচএল কনসোর্টিয়াম। মজিদ সন্স কনস্ট্রাকশনের সরবরাহ করা মালামাল ‘স্পেসিফিকেশন’ অনুযায়ী সরবরাহ করা হয়নি বলে তথ্য উঠে আসে।
এই মজিদ সন্স কনস্ট্রাকশন রাজশাহীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নির্মাণকাজ পেয়েছে। এরমধ্যে অন্যতম রুয়েটের যন্ত্রপ্রকৌশল বিভাগের ১০ তলা ভবন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ তলা বিজ্ঞান ভবন ও ১০ তলা শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান হল।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল বিভাগের তথ্যমতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫১০ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। এরমধ্যে শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান হল নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ৭০ কোটি ২০ লাখ টাকা। ২০১৭ সালে ১০ তলা এ ভবণের নির্মাণকাজ শুরু হয়ে শেষ হওয়ার মেয়াদ ছিল ২০২২ সালের জুন মাসে। তবে নির্ধারিত সময়ে শেষ না হওয়ায় পরে সময় বাড়ানো হয়। মঙ্গলবার ভবনটির একটি অংশে তৃতীয় তলায় ছাদের ঢালাই চলছিল। দুপুর ১২টার দিকে হঠাৎ ভবনটির ছাদটি ধসে পড়ে।
রাজশাহী ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক ওহিদুল ইসলাম বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ এএইচএম কামরুজ্জামান হলের নির্মাণাধীন একটি অংশ ধসে পড়ে। এ ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট কাজ করছে।
তিনি বলেন, ‘নির্মাণ ত্রুটির কারণেই ভবনটির ছাদ ধসের ঘটনা ঘটেছে। ত্রুটি যদি নাই থাকে তাহলে সেটিতো আর এমনি এমনি ভেঙে পড়বে না।’
এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘এ ঘটনায় আজ সন্ধ্যায় রাবি প্রশাসন সভা আহ্বান করেছে। সেখানেই এনিয়ে আলোচনা হবে।’
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তারা কীভাবে কাজ পায় সেটি আমরা কীভাবে বলবো? তারা রুয়েটেও কাজ পেয়েছে। তারা সিটি করপোরেশনেও কাজ পেয়েছে। তবে, এ কাজটি নিম্নমানের বলে মনে হয়নি। যে কাজটি চলছিল সেটির সাটারিংয়ে দুর্বলতা ছিল।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, ‘আমি ঢাকায় মিটিংয়ে আছি। আমি ইমার্জেন্সি মিটিং কল করতে বলেছি। তখন এটির কারণ বোঝা যাবে।’
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কী আর বলবো বলো। অবশ্যই আমরা পদক্ষেপ নেবো। আমরা মিটিংটা করি। আমি ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা ৭টা বা ৮টা বাজবে। আমি এখন গোটা কাজটি নিয়ে সন্দিহান। আমি এক্সপার্টদের ডেকে আনবো। যেটা করার করা হবে। এটির সঙ্গে আমাদের অর্থ ও শিক্ষার্থীদের জীবন জড়িত। শিক্ষার্থীদের জীবনটার বড় গুরুত্ব। এটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে জানতে মজিদ সন্স কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের টেলিফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তাদের অফিসের একজন ফোন ধরে বলেন, ‘স্যারেরা সবাই বাইরে আছেন।’ এসময় তাদের সঙ্গে যোগাযোগের নম্বর চাইলে তিনি দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘এভাবে মোবাইল নম্বর দেওয়া যায় না’। এরপরই তিনি সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন।

আরও খবর

🔝